সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৪

ভারতে রাজনীতি বাংলাদেশি হিন্দু নিয়ে

Home Page » জাতীয় » ভারতে রাজনীতি বাংলাদেশি হিন্দু নিয়ে
সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৪



131208144528_bjp_india_election_victory_304x171_ap_nocredit.jpgবঙ্গ-নিউজডেস্কঃহিন্দু শরণার্থীদেরবাংলাদেশ থেকে আসাভারতের সব রাজ্যে পুনর্বাসন করা হবে বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদীর আশ্বাসের পর এবার কংগ্রেসও হিন্দুদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন।
কংগ্রেস নেতা ভুবনেশ্বর কলিতা বলেছেন, “হিন্দু শরণার্থীরা যাতে ন্যায়বিচার পান তার জন্য বিজেপির অনেক আগে থেকেই কংগ্রেস সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।”
তবে রাজনীতির বাইরের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশের বিষয়টি মূলত অর্থনৈতিক, তাই রাজনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে এটিকে দেখলে ভুল হবে।”
বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসা মুসলিমরা অনুপ্রবেশকারী, কিন্তু হিন্দুরা শরণার্থী এটা ভারতের হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির বহু পুরনো অবস্থান।
তবে গতকাল আসামের শিলচরে এক জনসভায় বিজেপির নরেন্দ্র মোদী হিন্দু শরণার্থীদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে বলেছেন, “দুনিয়ার যেকোন প্রান্তে হিন্দুরা যদি নির্যাতিত হয়, তাহলে তাদের তো আসার একটাই জায়গা আছে, আর সেটা হল ভারত।”
তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশ থেকে অত্যাচারিত হয়ে যে হিন্দুরা ভারতে আসছেন, তাদের শুধু আসামে নয়, গোটা ভারত জুড়ে আশ্রয় দিতে হবে। বাংলাদেশে তাদের ওপর যে ধরনের অত্যাচার চলছে, আমরা তো তাদের ওপর সেই একই জিনিস করতে পারি না!”
মোদী আরো বলেছেন, “তার দল ক্ষমতায় এলে বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের জন্য শরণার্থী শিবিরগুলো গুটিয়ে ফেলে সমাজের মূল স্রোতে তাদের ঠাঁই করে দেয়া হবে।”
তার এই ভাষণের পর আসামে ও কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেসও নির্বাচনের আগে হিন্দু আবেগকে উপেক্ষা করতে পারছে না।
আসামে দলটির অন্যতম প্রধান নেতা ও এমপি ভুবনেশ্বর কলিতা যেমন বলছিলেন, “নরেন্দ্র মোদীর অনেক আগে থেকেই রাজ্যের কংগ্রেস সরকার হিন্দু শরণার্থীদের স্বার্থে লড়ছে। বাংলাদেশি শরণার্থীরা যাতে ন্যায় পান, আমরা তার পক্ষে বহুদিন ধরেই। আমাদের রাজ্য সরকার ও বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ তাদের জন্য ২০০৯ সাল থেকেই অনেক সুবিধা ঘোষণা করে আসছেন। নরেন্দ্র মোদীর ঘুম ভেঙেছে অনেক দেরিতে, কিন্তু তার কথাকে আমরা আমল দিচ্ছি না।”
কিন্তু আসাম সরকারও কি বাংলাদেশ থেকে আসা মুসলিম ও হিন্দুদের মধ্যে বৈষম্য করছে না? - কলিতা অবশ্য তা মানতে রাজি নন। তিনি বলেন, “অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়টা আলাদা। যারা বাংলাদেশ থেকে বাধ্য হয়ে চলে আসছেন, আমরা তাদের প্রতি সুবিচার করতে চাই। এখানে প্রশ্নটা হিন্দু-মুসলিমের নয়, আর এখানে কোনো বৈষম্যেরও প্রশ্ন উঠছে না।”
কিন্তু অনুপ্রবেশের মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে রাজনীতি যে আসছেই, তা স্পষ্ট বিজেপি ও কংগ্রেস, দুদলের বক্তব্যেই।
দেশে সাধারণ নির্বাচনের আগে তা এড়ানোও হয়তো কঠিন, কিন্তু ভারতের সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জি কে পিল্লাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বাংলাদেশ থেকে তথাকথিত অনুপ্রবেশের পেছনে মূল কারণটা কিন্তু অর্থনৈতিক!
পিল্লাই বলেন, “আসামে যেখানে নমুনা জরিপে বাংলাদেশিদের পাওয়া গেছে, সব ক্ষেত্রেই তারা এসেছে চাষাবাদ বা অন্য কাজের সন্ধানে। করিমগঞ্জ এলাকায় যেমন প্রতিদিন শত শত বাংলাদেশি সীমান্ত পেরিয়ে আসেন, সারাদিন রিক্সা চালিয়ে আবার রাতে ফিরে যান। এরা সবাই বাংলাদেশি নাগরিকই থাকছেন, কাজ করছেন ভারতে!”
পিল্লাই আরো বলেন, “যেভাবে লাখ লাখ ভারতীয় উপসাগরীয় দেশগুলোতে গিয়ে কাজ করেন, অর্থনীতির সেই সহজ নিয়মেই বাংলাদেশিরাও পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে কাজ খুঁজতে যান।”
কিন্তু তাদের বৈধ ওয়ার্ক পারমিট বা সীমান্ত পেরোনোর ছাড়পত্র থাকে না প্রায় কোন ক্ষেত্রেই। পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, অনুপ্রবেশ নিয়ে ধর্মের রাজনীতি না করে এই বাংলাদেশিদের ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করা গেলে অর্থনীতি অনেক লাভবান হবে।
সূত্র : বিবিসি।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:২৬:০৫   ৩৯৯ বার পঠিত