সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০১৩
হাতি শিকার বন্ধ করার আহ্বান থাই বৌদ্ধ ধর্ম মহলের
Home Page » এক্সক্লুসিভ » হাতি শিকার বন্ধ করার আহ্বান থাই বৌদ্ধ ধর্ম মহলেরবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ রাজধানী ব্যাংককে শিকার হওয়া হাতিগুলোর জন্য সম্প্রতি থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ ধর্মীয় মহল এক সংগল প্রার্থনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল হাতি শিকার বন্ধ করার জন্য মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো এবং যত দ্রুত সম্ভব দেশটিতে গজদন্তজাত পণ্যের বেচাকেনা নিষিদ্ধ করতে সরকারের প্রতি প্রত্যাশা প্রকাশ করা।থাইল্যাণ্ডে গজদন্তজাত পণ্যের বেচাকেনা বৈধ এবং এসব পণ্যের অধিকাংশ ক্রেতাই হচ্ছেন বিদেশি পর্যটক। একথা উপেক্ষা করা যাবে না যে, গজদন্তের ওপর খোদাই করা অনেক বুদ্ধমূর্তি ও মাদুলি থাই বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারীদের মধ্যে জনপ্রিয়। দেশটির জনসংখ্যার ৮০ শতাংশেরও বেশি বৌদ্ধ ধর্ম অনুসারী। গজদন্তজাত পণ্য কেনা বন্ধ করতে তাদের প্রতি আহ্বান জানানো এবং পাশাপাশি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দেশীয় গজদন্ত বেচাকেনা নিষিদ্ধ করার সরকারি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ ধর্ম মহলের বিখ্যাত জ্যোষ্ঠ সন্ন্যাসী একসাথে ব্যাংককে শিকার হওয়া হাতিগুলোর জন্য এই সংগল প্রার্থনার আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা - প্রকৃতির জন্য বৈশ্বিক তহবিল (ডাব্লিউডাব্লিউএফ)-এর ‘পবিত্র পৃথিবী’ প্রকল্পের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দেকিলা চুংগিয়ালপা বলেন, থাইল্যান্ডের বৌদ্ধ ধর্মীয় মহলের সঙ্গে এবারের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরে ডাব্লিউডাব্লিউএফ খুবই সম্মানিত বোধ করছে। তিনি বলেন:
“আমি আন্তরিকভাবে আশা করি, এসব উপাসনা কিছুটা ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মীয় মহলের ৪জন জ্যোষ্ঠ সন্ন্যাসী এবারের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তারা গজদন্ত বেচাকেনা নিষিদ্ধ করার পক্ষে মত প্রকাশ করতে চান। এটা থাইল্যান্ডের জনসাধারণের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।”
ব্রিটেনের ভিক্ষু আজান জায়াসারো ছিলেন সেদিনের অনুষ্ঠানের একজন উপস্থাপক। থাইল্যান্ডে ৩৫ বছরের তপস্যা করার অভিজ্ঞতার কারণে তিনি সেখানে বৌদ্ধ ধর্মীয় বিষয়ে প্রায় বয়ান দেন। তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্মের অনুষ্ঠান অন্য ধর্মের মতো পবিত্র নয়। অনুষ্ঠানটি মানুষের আবেগ প্রকাশ করার ওপর আরো বেশি গুরুত্ব দেয়। সুতরাং বৌদ্ধ ধর্মের অনুষ্ঠান মা-বাবা অথবা শিক্ষকদের প্রতি সম্মান প্রকাশ করার পাশাপাশি মানবজাতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ জীব-জন্তুর প্রতিও সম্মান প্রদর্শন এবং তাদের জন্য শুভ কামনা করা যায়। আজান জায়াসারো বলেন:
“জীব-জন্তু থেকে মানবজাতির পার্থক্য হচ্ছে আমাদের বুদ্ধি ও সহানুভূতি আছে। ইতিহাসে হাতি দীর্ঘকাল ধরে কাজকর্ম ও শ্রম ক্ষেত্রে মানবজাতিকে সাহায্য করেছে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হিসেবে আমাদের উচিত হাতির প্রতি এ ধরনের কৃতজ্ঞতা প্রকাশের ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করা। অর্থাত্ এ ধরনের আদুরে জীব-জন্তু শিকার সমর্থন না করা।”
থাইল্যান্ড হচ্ছে গজদন্তজাত পণ্য কেনাবেচায় বিশ্বের বৃহত্তম অনিয়ন্ত্রিত বাজার। পাশাপাশি দেশটি আফ্রিকার হাতি শিকারি ও গজদন্তজাত পণ্য চোরাকারবারীদের প্রধান কাঙ্ক্ষিত স্থান। তিন মার্চ অনুষ্ঠিত বিলুপ্তপ্রায় অতিবিরল জীব-জন্তু ও বৃক্ষ বিষয়ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কনভেনশনে সাক্ষরকারী দেশগুলোর সম্মেলনে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ইংলাক শিনাওয়াত্রা প্রথমবারের মতো দেশের গজদন্তজাত পণ্য কেনাবেচা নিষিদ্ধ করার কথা বলেন। তাঁর এ ঘোষণার লক্ষ্য সর্বাধিক মাত্রায় আফ্রিকান হাতি শিকার কমানো।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১৫:৫৩ ৫৮৮ বার পঠিত