রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০১৩

হরতাল আতঙ্কে রাজধানীবাসী

Home Page » জাতীয় » হরতাল আতঙ্কে রাজধানীবাসী
রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০১৩



images4.jpgবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ আশিকুর রহমান নামে বেসরকারি এক কর্মকর্তা অন্যান্য দিনের চেয়ে শনিবার একঘণ্টা আগে বের হয়েছেন নিরাপদে বাসায় ফেরার উদ্দেশ্যে। রাজধানী মহাখালীর আমতলী মোড়ে প্রায় ৪৫ মিনিট চেষ্টার পরও বাসে উঠতে পারলেন না। রাস্তায় যান চলাচল কম থাকায় যখনই কোনো গাড়ি আসছে তাতেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন সবাই। বারবার ঘড়ি দেখছেন আর মোবাইল ফোন রিসিভ করছেন। চোখেমুখে ফুঠে উঠেছে হরতালের আতঙ্ক। গন্তব্য সায়েদাবাদ।

পাশে গিয়ে জিজ্ঞেস করতেই বললেন, যেভাবে হরতালের দিন বাড়ছে আর চারদিকে সহিংসতা শুরু হয়েছে সন্ধ্যার পর না জানি কী হয়? এদিকে বাসা থেকে বারবার ফোন করছে। সবাই চিন্তুা করছে। শুধু আশিকুর রহমান নন শনিবার বিকেল থেকেই নিরাপদে বাড়ি ফেরা নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘরমুখী মানুষদের মধ্য আতঙ্ক দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর রাজধানীর সৈনিক ক্লাবের মোড়ে শিশু সন্তান নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন আফরোজা ইসলাম। তিনি বলেন, প্রায় ৪০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছি। অন্যান্য দিন এরকম সমস্যা হয়না। এজন্য হরতালের খবর পেলে বাসা থেকেই বের হই না। কিন্তু আজ জরুরি কাজে বের হয়েছি। খুব ভয় করছে। বিশেষ করে ছোট মেয়েটার জন্য।
অনেকেই সংশয় প্রকাশ করে বলেছেন, কতদিন যে এ হরতালের আতঙ্কে থাকতে হবে তা কেউ জানেন না। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় যানবাহন কমে আসছে। ফলে কর্মজীবি মানুষদের ঘরে ফিরতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনকে অসহনীয় করে তুলছে হরতাল। এমনটাই মন্তব্য করলেন মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা আতোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, হরতালের সময় শুধু বেড়েই চলছে। জানি না শেষপর্যন্ত কতদিন একনাগারে হরতালের ঘোষণা আসবে। বছরের শেষ সময়ে পরীক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ছে। এদিকে সিএনজি চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সিএনজি যাত্রী রাজন জানান, ফার্মগেট থেকে বনানী পর্যন্ত সিএনজির ভাড়া দিতে হলো ৩০০ টাকা। অথচ অন্যান্য দিনে এর অর্ধেক হলেই হয়। আতঙ্কের মধ্যে ঘরেফেরা মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতাল ৭২ ঘণ্টার পরিবর্তে ৮৪ ঘণ্টা ঘোষণা ও বিএনপির শীর্ষনেতাদের আটকের পাশাপাশি তাদের জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় সবাই ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা করছেন। রাজধানীর চারপাশে স্বজনদের কাছ থেকে সহিংসতার খবর পেয়ে আরও ভয় পাচ্ছেন তারা। তবে সহিংসতা রোধে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল দেখা গেছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ গণমাধ্যম শাখার সহকারী কমিশনার সাত্যকী কবিরাজ ঝুলন বঙ্গনিউজকে বলেন, রাজধানীজুড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সবজায়গায় নিরাপত্তার জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। এছাড়া সচেতনতার জন্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সম্ভাব্য সমস্যার কথা উল্লেখ করে কীভাবে সতর্ক থেকে সহিংসতা থেকে রেহাই পাওয়া যায় এসব বিষয়ে লিফলেট সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি সহিংতার তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর অনুরোধ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০:৩৭:৪৪   ৩৭৬ বার পঠিত