রবিবার, ৩ নভেম্বর ২০১৩
রাজধানী জুড়ে দিনভর যানজট, দুর্ভোগে জনজীবন
Home Page » সংবাদ শিরোনাম » রাজধানী জুড়ে দিনভর যানজট, দুর্ভোগে জনজীবনবঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ ২৭ অক্টোবর রোববার থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ দলীয় জোটের টানা ৬০ ঘণ্টার হরতাল ছিল। এর মধ্যে একদিন বৃহস্পতিবার হরতাল বিহীনভাবে অফিস আদালত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল। এদিকে, সাপ্তাহিক ছুটির পর প্রথম কর্মদিবস রোববার আবার আওয়ামী লীগের সমাবেশ। এরপর আবার সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ১৮ দলীয় জোটের ৬০ ঘণ্টার টানা হরতাল। ফলে রাজধানী জুড়ে যানজটে সৃষ্টি হয় মহাদুর্ভোগ।
অপরদিকে, হরতালের আগে গাড়ি পোড়ানোকে কেন্দ্র করে সাধারণ যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্কও তৈরি হয়। সব মিলিয়ে ঘরে ফেরার প্রতিযোগিতায় প্রচণ্ড যানজটে মহাদুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী।
রোববার দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে জনসভার আয়োজন করা হয়।
জনসভাকে কেন্দ্র করে নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জনসভায় যোগ দেন সকাল থেকেই। এতে করে জনসভায় যোগ দেওয়া ও জনসভা শেষে ফিরে যাওয়াকে কেন্দ্র করে নগরীতে এক দুর্বিসহ যানজটের সৃষ্টি হয়।
রোববার সকাল ১০টায় বঙ্গনিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইসমাইল হোসেন জানান, মিরপুর থেকে মতিঝিলে আসতে সময় লেগেছে প্রায় দুই ঘণ্টা; যেখানে অন্যান্য দিন সময় লাগে একঘণ্টারও কম।
এ যানজট মোহাম্মদপুরের সাতমসজিদ রোডেও ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান স্টাফ করেসপন্ডেন্ট সাজেদা সুইটি।
এরপর দুপুর দুইটার সময় রমনার মৎস্য ভবন থেকে রূপসী বাংলা হোটেল পর্যন্ত যানজট থমকে ছিল। এক সময় দেখা যায়, যাত্রীরা পরিবহন বাদ দিয়ে রাস্তার পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটে গন্তব্যস্থলে যাচ্ছেন।
শাহবাগ এলাকা থেকে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আল আমিন জানান, সমাবেশ চলাকালীন শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবনের সড়কটি ছিল বন্ধ।
সায়েন্সল্যাব থেকে কাঁটাবনের গাড়িগুলোকে রূপসী বাংলা হোটেল, কাকরাইল মসজিদ হয়ে যাতায়াত করতে দেখা গেছে।
সমাবেশের পরে শাহবাগ এলাকার যানজট চারদিকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আদনান রহমান জানান, জনসভা শেষে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শাহবাগ, বাংলামোটর, মগবাজার, মালিবাগ এলাকায় ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ ছাড়া কারওয়ান বাজার থেকে ফার্মগেট সড়কটি যানজটে থমকে ছিল। এ সব সড়কে যেসব যাত্রী পরিবহনে উঠেছেন, তাদের অনেকেই জটের কারণে পরিবহন থেকে নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন।
এদিকে, হরতাল সমর্থকরা বাসে আগুন দেওয়ার কারণে শাহবাগে থেকে কাঁটাবনে যানবাহন আটকা ছিল অনেক সময়। এ সময় সাধারণ পথচারীদের মধ্যে আতঙ্কও বিরাজ করে।
আদনান আরো জানান, একই সময়ে ফার্মগেটে কয়েক শতাধিক যাত্রী বাসের অপেক্ষায় ছিলেন। কিন্তু, বাসগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী থাকার কারণে অনেকে পরিবহনে উঠতে পারছিলেন না।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট নুর মোহাম্মদ জানান, জনসভাকে কেন্দ্র করে মহাখালী থেকে সাতরাস্তা ও মগবাজার সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া গুলিস্তান, পল্টন, ফকিরাপুল ও মতিঝিল এলাকাতেও যানজট ছড়িয়ে পড়ে।
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট জেসমিন পাপড়ি জানান, রামপুরা থেকে উত্তরা সড়কে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। অনেক যাত্রীর রামপুরা থেকে উত্তরা পৌঁছাতে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় পর্যন্ত লেগেছে।’
যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট রহমত উল্যাহ জানান, সকালে যাত্রাবাড়ী-গুলিস্তান ফ্লাইওভারেও যানজট ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় ৫০০ শতাধিক গাড়ি ফ্লাইওভারের ওপরে আটকে পড়ে। এতে করে সাধারণ যাত্রীদের দুর্ভোগের যেন অন্ত ছিল না। জনসভা শেষ হওয়ার পর গুলিস্তান থেকে যাত্রাবাড়ী সড়কেও একইভাবে যানজটের সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২০:২৫:২৩ ৩৮৫ বার পঠিত