বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০১৩
আকাশের চিঠি; সাত -রোকসানা লেইস
Home Page » সাহিত্য » আকাশের চিঠি; সাত -রোকসানা লেইসনীল,
আজ আমি পাগলের মতন সব উল্টাপাল্টা কাজ করলাম। সকালে উঠে আমার যাওয়ার কথা খুব জরুরী একটা মিটিং এ। সেখান থেকে একজন ক্লায়েন্টকে নিয়ে যাবো বাড়ি দেখাতে। তিন চারটা বাড়ি দেখানোর কথা ছিল আজ। অথচ বাসা থেকে রওনা হয়ে হাইওয়ে দিয়ে যেতে যেতে আমি প্রায় দুশো কিলোমিটার দূরে চলে গেলাম। যখন আমার ভীষণ পিপাসায় বুক শুখিয়ে উঠল তখন টের পেলাম আমি অচেনা রাস্তা দিয়ে অজানায় হারিয়ে যাচ্ছি। শহরের একটু বাইরে বেরুলেই যে একাকী শুনশান একটা ব্যাপার থাকে। দুপাশে বিস্তৃর্ণ মাঠ গাছ পালার সারী মায়াময় মোহময় এক জগৎ যা আমাকে শুধু তোমার কথা ভাবায়। আমি সেই আমন্ত্রণ ধ্বনী অনুসরণ করে তোমার কাছে চলে যাচ্ছিলাম। আমি ভুলে গিয়ে ছিলাম আমার বাস্তব। তাছাড়া সেল ফোন বাসায় ফেলে গেছি। কেউ যে আমাকে ডেকে পাবে সে সুযোগও ছিল না।
ইলিউশন জগতের হাত ধরে আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম র্ভাসিটির সেই দিন গুলোতে সহজে। যেমন সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে দূর গ্রামের পথে আমরা হারিয়ে যেতাম। তেমনি তোমার অপেক্ষায় চলে গিয়েছি আমি। বাস্তবতা ভুলে ভাবছি, এই বুঝি তুমি এলে এই বুঝি তুমি এলে। আর একটু সামনে গিয়ে কোথাও আমি তোমার অপেক্ষায় করব। তুমি এসে আমাকে চমকে দিবে। পিছন থেকে চোখে হাত দিয়ে….
আমি বড় রাস্তা থেকে বেড়িয়ে একটা হাটের মতন জায়গা পেয়ে গেলাম যেখানে আদি মানুষের হাট বসেছে আজ। এই বিলাশ বহুল আধুনিকতার যুগে যারা নিজেদের প্রকৃতির কাছে রাখে। কোন মেশিন যন্ত্র ব্যবহারে তারা নারাজ। হস্তচালিত যন্ত্রপাতি, ঘোড়াটানা গাড়ি যাদের বেশী পছন্দ। আমিস ভিলেজের হাতে তৈরী সকালের নাস্তা খেয়ে আমি বসেছিলাম নদীর পাড়ে সারাদিন। সূর্য বিদায় নেয়ার সময় আমাকে বাড়ি যেতে বলে গেলো তুমি আজ আর আসবে না। সন্ধ্যা তারার দিকে চেয়ে আমার দুচোখ থেকে ঝরে গেলো অশ্রু। অজানা আমিস গ্রামের সোঁদা মাটিতে মিশে গেলো তোমার বিরহে ফেলা আমার চোখের জল। আমি পথ খুঁজে খুঁজে ফিরে এলাম শহরে আপন নিবাসে।
সেল ফোনে পঁচিশটা মিসকল। আমি ভয়ে কাউকে যোগাযোগ না করেই শুয়ে পরলাম বিছানায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪:২৪:৩৫ ৪৪৭ বার পঠিত