শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩

সুর-সম্মিলনে ৫০ বছর

Home Page » বিনোদন » সুর-সম্মিলনে ৫০ বছর
শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩



untitled-12.jpgসুর-সম্মিলনে ৫০ বছর
মুখরিত সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়
- সুমন হাফিজ

 

 দেশের একমাত্র স্বনামধন্য সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় দেশীয় সংস্কৃতি চর্চা, প্রাতিষ্ঠানিক সঙ্গীত শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর ধরে (১৯৬৩-২০১৩) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। উপমহাদেশের খ্যাতিমান শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ পন্ডিত বারীণ মজুমদারসহ কয়েকজন গুণী মানুষের স্বপ্ন ও কর্মসাধনায় ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের ১০ নভেম্বর শুভযাত্রা শুরু করেছিল এই সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়। তখন নাম ছিল মিউজিক কলেজ বা কলেজ অব মিউজিক। উক্ত ৫০ বছরে যে সকল গুণী মানুষের প্রচেষ্ঠা ও সাধনায় এই প্রতিষ্ঠানটি আলোকিত হয়েছে তাঁদের মধ্যে পন্ডিত বারীণ মজুমদার, ডক্টর কাজী মোতাহার হোসেন, আব্দুল আলীম, মীর কাশেম খান, আবেদ হোসেন খান, নারায়ণ চন্দ্র বসাক, ফজলে নিজামী, শেখ লুৎফর রহমান, ইলা মজুমদার, কামরুজ্জামান মনি, খালিদ হোসেন, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী, জহির আলীম, নাদিরা বেগম, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সাদি মহম্মদ তকিউল্লাহ এবং বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর শামীমা পারভীন অন্যতম। এই সুদীর্ঘ সময়ে এই প্রতিষ্ঠান থেকে জন্ম নিয়েছে দেশ বরেণ্য সঙ্গীত শিল্পী শাহনাজ রহমতুল্লাহ, আবিদা সুলতানা, খুরশিদ আলম, রথীন্দ্রনাথ রায়, বিপুল ভট্টাচার্য, ইয়াকুব আলী খান, ডক্টর লীনা তাপসী খান, মুজিব পরদেশীসহ অনেক খ্যাতিমান সঙ্গীত শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব। মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়সহ বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা), বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা), ছায়ানট, নজরুল একাডেমি, নজরুল ইন্সটিটিউট -এ গবেষণা ও শিক্ষকতা পেশায় কর্মরত রয়েছেন। সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের সুর-সম্মিলনে আনন্দে মুখরিত ৫০ বছর পূর্তি উৎসব উপলক্ষে বিগত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩ শুক্রবার সারাদিনব্যাপি নানান কর্মসূচীর মধ্যে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দ মেতে ওঠেন এক মিলন-মেলায়। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দের সংগঠন শিল্পীবৃত্ত। ভোরের আলো ফোটার কিছু পরেই ধীরে ধীরে সঙ্গীত কলেজ ভবনে রেজিস্ট্রেশনকৃত শিক্ষার্থীবৃন্দ জড়ো হতে থাকেন। অনেক সুন্দর একটি সকাল সকলের জন্য মনে হয় দীর্ঘদিনের অপেক্ষায় ছিল। বহু ব্যাস্ততার মাঝেও বর্তমান সময়ে ফোন ও ফেসবুকসহ অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক বন্ধুদের যোগাযোগ থাকলেও সরাসরি দেখা হওয়া তা হোকনা অনেক বছর পরে, এ এক অন্যরকম অনুভুতি, অন্যরকম স্বাদ। অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন হয় সকাল ১০ টায় র‌্যালীর মাধ্যমে। র‌্যালী শেষে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ তাঁদের স্মৃতিচারণ করেন। স্মৃতিচারণে অনেক আবেগ, অনুভূতি ও দাবি ফুটে ওঠে তাঁদের বলিষ্ঠ কন্ঠে। বিশেষ করে দেশের একমাত্র সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ সঙ্গীত বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করবার যৌক্তিক দাবিটি সকলকে প্রানবন্ত করে তোলে। অনুষ্ঠানে বিশেষ ব্যাক্তিবর্গের মধ্যে স্মৃতিচারণ করেন প্রথম ব্যাচের (১৯৬৩) প্রাক্তন শিক্ষার্থী জনাব সালেহ আহমেদ, দ্বিতীয় ব্যাচের (১৯৬৪) মোতাহার হোসেন, (১৯৭২) ব্যাচের মাজাহারুল ইসলাম, আজাদ রহমান, শেখ সাদী খান, আবিদা সুলতানা, সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের বর্তমান অধ্যক্ষ প্রফেসর শামীমা পারভীন, শিল্পীবৃত্তের আহবায়ক কমল খালিদ, সম্পাদক মাইনুল আহসানসহ আরো অনেক সুরের স্বজন। অনুষ্ঠান শেষে র‌্যাফেল ড্র ও একটি মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৯:২৬:২০   ৪২৮ বার পঠিত