শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০১৩

কমবয়সী কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান মিলেছে…

Home Page » ফিচার » কমবয়সী কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান মিলেছে…
শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০১৩



krisno-gohor.jpgতানিয়া সুলতানা বঙ্গনিউজ ডটকম:মহাকাশে সবচেয়ে কমবয়সী কৃষ্ণগহ্বরের সন্ধান পেয়েছেন আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা- নাসার বিজ্ঞানীরা। এ কৃষ্ণগহ্বরের বয়স এক হাজার বছরের মতো। আর দূরত্ব পৃথিবী থেকে মাত্র ২৬ হাজার আলোকবর্ষ। মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার মুন এক্স-রে অবজারভেটরির সূত্র ধরে গত বুধবার সংস্থাটির বিজ্ঞানীরা এ তথ্য দেন। আর আমেরিকার অ্যাস্ট্রো-ফিজিক্যাল জার্নালে এ গবেষণা সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়। নাসা মহাকাশ সংস্থা তাদের এক সংবাদ বিবৃতিতে জানায়, ‘ডাবিস্নউ ফোর নাইন বি’ নামে অতিকায় এ নব-নক্ষত্র একটি বিরল বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে। সেটি সাম্প্রতিক সময়ে অনেকটা তারকারাজির মতো ঘূর্ণায়মান অবস্থায় মহাকাশে বিবর্তন করছে।’
তবে বিজ্ঞানীরা এ অতিকায় নব-নক্ষত্রের মধ্যে বিশেষত্বের সন্ধান পেয়েছেন। ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) বিজ্ঞানী এবং এ গবেষণা দলের প্রধান লরা লোপেজ বলেন, ‘এটা এমন অতিকায় নব-নক্ষত্র, যা আগে কখনো পরিলক্ষিত হয়নি। এর পূর্বসূরী অতিকায় তারকারাজিগুলো বিস্মৃত হওয়ার পর এটি টিকে আছে, যা কিন্তু অন্য অতিকায় তারকারাজির বেলায় সবসময় এমনটা ঘটে না।’ তবে সাধারণ সত্য কথা হলো, কোনো তারকারাজি যখন ভেঙে পড়ে, তখন তা বড় বিস্ফোরণের সৃষ্টি করে। আর এর মাধ্যমেই মূলত কৃষ্ণগহ্বরের সৃষ্টি করে। আর অধিকাংশ বিস্ফোরণই ‘প্রতিসম’ ধরনের হয়। অর্থাৎ ‘স্টেলার ম্যাটেরিয়াল’ (নাক্ষত্রিক উপাদান) কমবেশি আকারে চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে। আর ছড়িয়ে পড়া এসব উপাদানই পরবর্তী সময়ে কৃষ্ণগহ্বরের সৃষ্টি করে।
গবেষক দল দাবি করে, ‘ডাবিস্নউ ফোর নাইন বি’ এমন একটি অতিকায় নব-নক্ষত্র, যার বিস্ফোরণ অতি দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হয়েছে, যার কারণে এখান থেকে সৃষ্ট কৃষ্ণগহ্বরও একটি ভিন্ন ধরনের আবহের সৃষ্টি করছে।’ গবেষক দলের আরেক সদস্য এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এনরিকো রামিরেজ-রুইজ এ মন্তব্যের সঙ্গে তার সমর্থন পোষণ করেন। তিনি বলেন, ‘একটি তারকার অস্বাভাবিক পতনের নজির আমরা এ অতিকায় নব-নক্ষত্রের পতনের মাধ্যমেই উপলব্ধি করতে পারি।’
এদিকে, নাসার গবেষকরা একটি তারকা কীভাবে বিস্ফোরিত হয় এবং এর কী পরিণতি ঘটে, সে সম্পর্কে তাদের যে তত্ত্বীয় জ্ঞান রয়েছে, এর মধ্যে লব্ধ অভিজ্ঞতা সম্মিলনের মাধ্যমে একটি তুলনামূলক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে সমর্থ হয়েছেন বলেও মত প্রকাশ করেন।
গবেষক দলের প্রধান লরা লোপেজ অতিকায় নব-নক্ষত্রের বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্ট অবশিষ্টাংশকে নিউট্রন তারকা বলে ধারণা করেছিলেন। কিন্তু তার অন্য সহ-গবেষকদের সঙ্গে আলোচনা এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পর তিনি এ অবশিষ্টাংশকে নিউট্রন তারকারাজি না বলে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে একটি ‘কৃষ্ণগহ্বর’ বলে দাবি করেন। মজার ব্যাপার হলো, এর আগে এত কম বয়সের কৃষ্ণগহ্বর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা সন্ধান পেতে সমর্থ হননি। এটিই সবচেয়ে কমবয়সী কৃষ্ণগহ্বর।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:১৫:২১   ৬৪২ বার পঠিত