বঙ্গ-নিউজ ডট কম:
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘বিদেশে গিয়ে ড. ইউনূস যে অর্থ আয় করেছেন (ওয়েজ আর্নার্স) তা বৈধ, কিন্তু সরকারের অনুমতি না নিয়ে তাঁর বিদেশ গমনটা অবৈধ।
এ ছাড়া ড. ইউনূসের বিভিন্ন কোম্পানি গ্রামীণের নয়। এগুলো তাঁর ব্যক্তিগত কোম্পানি। অথচ তিনি গ্রামীণের নামে কর রেয়াত সুবিধা নিয়েছেন।’ গতকাল সোমবার সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। কিন্তু সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন, বিধিবহির্ভূত বিভিন্ন সুবিধা নিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৮৩ থেকে ২০১০ সময়কালে গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনার জন্য কোনো দিনই সরকারের কোনো অনুমতি নেননি ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ‘এজন্য অবশ্য সরকারেরও দোষ আছে। সরকার বিষয়টির কখনোই কোনো তদারক করেনি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংকের সহযোগী অন্তত ১৩টি প্রতিষ্ঠান শুধুই গ্রামীণের নয়। এগুলোতে সরকারের প্রতিনিধি রয়েছেন। উনারাও কখনো লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করেননি। ড. ইউনূসকে এমনকি কেউ কোনোদিন জিজ্ঞাসাও করেননি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের দিক থেকে এ ব্যাপারে কী করণীয় রয়েছে—জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের তেমন কিছুই করণীয় নেই। ব্যবস্থা কিছু নিতে হলে গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
ড. ইউনূস কি তাহলে সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অবশ্যই। সচিব, বিভিন্ন সংস্থার প্রধান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইত্যাদি পদবিধারীরা যে রকম, ঠিক সে রকম।’
নিয়ম-কানুনের বিষয়গুলো এত দিন কেন দেখা হয়নি—এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ড. ইউনূসের প্রতি আস্থা রেখেছিল বলে জানান। তিনি বলেন, ‘এনবিআর হয়তো ভেবেছিল, উনি সম্মানী মানুষ। সবকিছু তো ঠিকঠাকই থাকবে।’
বর্তমান সরকার কেন ইউনূসের ব্যাপারে কেন এত কঠোর হলেন—এমন প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের ইঙ্গিত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের দাবিতে। ২০০৯ সালে আমরা ক্ষমতায় এসেছি। ওই সময় কিছু করিনি। ২০১০ সালেও তো কিছু করা হয়নি।’
আয়করমুক্ত সুবিধার ১২ কোটি টাকা ইউনূস এখন সরকারকে ফেরত দেবেন কি না, এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, এনবিআর তাঁর কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে একটি নোটিশ দিতে পারে। অনেকটা এ রকম যে, আপনি যে সুবিধা নিয়েছেন, তা কেন নিয়েছেন, তা আমাদের জানান।’
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কি মামলা হতে পারে—জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি না।’ ইউনূসের জেলে যাওয়ার আশঙ্কা আছে কি না—জানতে চাইলেও অর্থমন্ত্রী প্রায় একই ধরনের জবাব দিয়ে বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই।’
বাংলাদেশ সময়: ১:৫৮:৫৮ ৫০৫ বার পঠিত