বুধবার, ৪ মে ২০২২
তিল ধারণের ঠাঁই নেই লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সৈকত তটে কক্সবাজার
Home Page » জাতীয় » তিল ধারণের ঠাঁই নেই লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সৈকত তটে কক্সবাজারবঙ্গনিউজঃ বুধবার বিকাল থেকে তিল ধারণের ঠাঁই নেই লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সৈকত তটে। তবে সাগর উত্তাল থাকায় সমুদ্র স্নানে পর্যটকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন। ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটকের মুখর কক্সবাজার সৈকত।
আজ সকালে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায় সাগরে উত্তাল ঢেউ। এই ঢেউয়ের নোনা জলে মেতেছেন বিপুল সংখ্যক পর্যটক। সমুদ্র স্নান, টিউবে গা ভাসানো, ওয়াটার বাইকে ঘুরে বেড়ানো ও প্রিয় মুহূর্তগুলো ক্যামেরার ফ্রেমে বন্দি করে আনন্দে সময় পার করছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। আবার অনেকেই বালিয়াড়িতে ঘোড়ার পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
সুগন্ধা পয়েন্টে কথা হয় ঢাকা থেকে আগত পর্যটক ফারহানা আকতার এর সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রতিবছর ঈদের টানা ছুটিতে কক্সবাজার ভ্রমণ আসি। কিন্তু করোনার কারণে গেল দু’বছর কক্সবাজার সৈকতে আসতে পারিনি। তাই এবার সুযোগ পেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে এসেছি। সবাই একসঙ্গে খুব মজা করছি।
আরেক পর্যটক ওমর ফারুক বলেন, ব্যাংকে চাকরি। তাই বৃহস্পতিবার ছুটি নিয়ে টানা ৯ দিনের ছুটিতে এসেছি। গরমের দিনে সৈকতের লোনা জলে শান্তির পরশ মন জুড়িয়ে যায়। বাচ্চাদের উঠানো যাচ্ছে না পানি থেকে।
চট্টগ্রাম থেকে এসেছেন তিন বন্ধু রিয়াদ, শহীদ ও রায়হান। তারা বলেন, ঈদের ছুটিতে এখানে আসবো না এটা হতে পারে না। তাই বন্ধুরা সবাই মিলে সৈকতে চলে এলাম। সাগরের নোনা জলে বেশ মজা করছি।
সকালে হাল্কা বৃষ্টি হয়েছে, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। যার কারণে সাগর উত্তাল, তাই সতর্ক অবস্থানে লাইফ গার্ড কর্মীরা। সমুদ্র স্নানে পর্যটকদের নির্দেশনা মেনে চলার পরামর্শ তাদের।
সী সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার সাইফুলতাহ সিফাত বলেন, ঈদের টানা ছুটিতে সৈকতে লাখো পর্যটকের আগমন হয়েছে। তাই সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে লাইফ গার্ড মোতায়েন রয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে তারা সার্বক্ষনিক পর্যবেক্ষণ করছে। কিন্তু এতো পর্যটকের সমুদ্র স্নানে নিরাপত্তায় স্বল্প লাইফ গার্ড দিয়ে খুবই কষ্টসাধ্য। তাই এক্ষেত্রে পর্যটকদের সমুদ্র স্নানে সতর্ক হবার পাশাপাশি নির্দেশনা চলার অনুরোধ করছি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জানিয়েছে, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক টহল জোরদার করেছেন তারা। ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, সৈকতে দুই লাখের বেশি পর্যটকের আগমন হয়েছে। তাই আগত পর্যটকদের গাড়ি থেকে নামা, হোটেলে উঠা ও সৈকতে আসা পর্যন্ত সবখানে ট্যুরিস্ট পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। আর গরমকালে পর্যটকদের পিপাসা মেটাতে সৈকতের বালিয়াড়িতে স্থাপিত সেবা কেন্দ্র থেকে পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে।
ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকদের বিনোদন দিতে তারকা মানের হোটেলগুলোতে রয়েছে নানা আয়োজন। হোটেল সী গার্ল এর প্রধান নির্বাহী ইমরুল ইসলাম সিদ্দিকী রুমি বলেন, পর্যটকদের জন্য নানা আয়োজন রেখেছি। যাতে তারা এবারের ঈদের ছুটি ভালো ভাবে কাটাতে পারেন।
সমুদ্র সৈকত ছাড়াও রয়েছে মেরিন ড্রাইভ, হিমছড়ি ঝরনা, ইনানী ও পাটুয়ার টেকের পাথুরে সৈকত, শহরের অজ্ঞমেধা ক্যাং ও বার্মিজ মার্কেট, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এবং রামুর বৌদ্ধ মন্দিরসহ নানা জনপ্রিয় ভ্রমণ স্পট। সব পর্যটন কেন্দ্রে এখন উপচেপড়া ভিড়। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বেচাবিক্রিতে। আগামী শনিবার পর্যন্ত পর্যটকের ভিড় থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:০২:৪৫ ৪২৫ বার পঠিত # #কক্সবাজার