বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

পাকিস্তানে ‘ধর্মান্তরিত করে’ বিয়ে, উত্তাল দেশ

Home Page » জাতীয় » পাকিস্তানে ‘ধর্মান্তরিত করে’ বিয়ে, উত্তাল দেশ
বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১



সংগৃহীত ছবি-ধর্মান্তরিত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

বঙ্গ-নিউজ: সংখ্যালঘু অমুসলিম এক কিশোরীকে ধর্মান্তরিত করার পর বিয়ে করার জেরে উত্তাল হয়ে উঠেছে পাকিস্তান। সম্প্রতি পাঞ্জাবের গুজরানওয়ালা শহরের ১৩ বছরের এক খ্রিস্টান কিশোরীর সঙ্গে ঘটেছে এমন ঘটনা। এই ঘটনায় দেশটির সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

এর জের ধরে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগের পার্লামেন্ট ভবনের সামনে গত ১২ জুন ব্যাপক বিক্ষোভ করেছেন সেখানে বসবাসরত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পাকিস্তানিরা। আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন স্থানীয় ডাচরাও। ‘সংখ্যালঘু খ্রিস্টান কিশোরীদের ওপর ব্লাসফেমি আইনের অপপ্রয়োগ বন্ধ করো’, ‘আমাদের মেয়েদের হত্যা বন্ধ করো’- এ ধরণের নানা শ্লোগানে সরব হয়ে ওঠে রাজপথ। প্রায় দেড়শ’ প্রতিবাদকারী ওই আন্দোলনে অংশ নেন।

গত মে মাসের ২০ তারিখে নিখোঁজ হয় মেয়েটি। বাবা পেশায় পোশাক কারিগর। তিনি জানান, বেশ কিছুদিন থেকেই তার মেয়েকে কর্মচারী হিসেবে কাজে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিলেন পাশেরই একটি দোকানের মালিক। প্রথমদিকে তিনি মেয়েকে কাজে দিতে অস্বীকৃতি জানালেও বারবার একই প্রস্তাব দিতে থাকলে এক পর্যায়ে সম্মত হন তার বাবা। এর কিছুদিন পরই অপহরণের শিকার হয় ওই কিশোরী। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন প্রতিবেশী জানান, মেয়েটিকে একটি পিকআপ ভ্যানে ওই দোকনদারসহ কয়েকজন নারী ও পুরুষের সঙ্গে কোথাও যেতে দেখেছেন।

পাকিস্তানে ধর্মান্তরিত করার প্রতিবাদ

মেয়ের বাবা স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানালে গত ২৯ মে এ বিষয়ে ওই দোকানিসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের নামে লিখিত মামলা দায়ের করা হয়। সন্দেহভাজন দুজনকে পুলিশি হেফাজতে নেয়া হয়। কিন্তু পরে মেয়েটি স্থানীয় আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজ জবানবন্দিতে জানায়, সে নিজের ইচ্ছায় অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে গিয়েছে এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিয়ে করেছে। পরে আদালত মেয়েটিকে স্বামীর সঙ্গে থাকার অনুমতি দেন।

কিন্তু মেয়ের বাবা ন্যায় বিচারের দাবি জানিয়ে বলেছেন, মেয়েটি নাবালিকা হওয়ায় ওই বিয়েতে স্বীকৃতি দেয়া পাকিস্তানের আইন বহির্ভূত সিদ্ধান্ত। এছাড়া মেয়েটির স্বামী বয়সে তার দ্বিগুণ এবং আগে একটি বিয়ে হয়েছে বলেও দাবি করেন। তিনি জানান, ছেলেটির চারটি সন্তানও রয়েছে। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের আইনে বিয়ের জন্য মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬ এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন বয়স নির্ধারণ করা আছে ১৮ বছর।

যুক্তরাষ্ট্র হিন্দু সিন্ধি সম্প্রদায়ের এক সংগঠনের মতে, দেশটিতে প্রতিবছর এক হাজারের বেশি ১২ থেকে ২৮ বছর বয়সী মেয়ে অপহরণ, ধর্ষণ, জোর করে ধর্মান্তরিত ও বিয়ের ঘটনার শিকার হন। প্রশাসন নানা সময়ে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও দেশটির খ্রিষ্টান, আহমাদিয়া ও শিয়া সম্প্রদায়ের মেয়েরাও এমন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন হরহামেশাই।

বাংলাদেশ সময়: ২০:১৪:৪০   ৬৫০ বার পঠিত   #  #  #  #  #