সোমবার, ২৪ মে ২০২১

অনুপ্রেরনার সত্য গল্প অনুষ্ঠানে জীবনের গল্প শোনাবেন সাহাবুদ্দিন মিয়া

Home Page » এক্সক্লুসিভ » অনুপ্রেরনার সত্য গল্প অনুষ্ঠানে জীবনের গল্প শোনাবেন সাহাবুদ্দিন মিয়া
সোমবার, ২৪ মে ২০২১



 অনুষ্ঠানের পোস্টার

বঙ্গনিউজ ডেস্কঃ   ’ চলুন নতুন মানবিক দুনিয়া গড়ি - অনুপ্রেরণার সত্য গল্প শুনি ‘  শিরোনামে বঙ্গনিউজ বিডিসি চ্যানেলের নিয়মিত অনুষ্ঠানে আজ ২৪ মে রাত ১০ঃ৩০ টায় বাংলাদেশ সময় বাংলাদেশের গর্বিত সন্তান সাহাবুদ্দিন মিয়া তার জীবনের গল্প শোনাবেন। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের শিশু কিশোর ও যুবকদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে।অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন ইতালী প্রবাসী কণ্ঠশিল্পী সাবরিনা মমতাজ মমো । কবিতা পাঠ ও জীবনী উপাস্থাপনা করবেন বাংলাদেশের লাক্স ফটোজেনিক , লেখক ও ভয়েস আর্টিস্ট আজমেরিনা শাহানী । অনুষ্ঠান্টির পরিকল্পনা ও সঞ্চালনায় থাকবেন লেখক, গবেষক , সম্পাদকঅধ্যাপক লুৎফর রহমান জয় । নিচে সংক্ষিপ্তভাবে শাহাবুদ্দিন মিয়ার জীবনী উল্লেখ করা হল।

সাহাবুদ্দিন মিয়া । জার্মানিতে সকল বাঙালির কাছে পরিচিত মিয়াভাই হিসেবে
জন্ম তারিখ ২৬ জুলাই ১৯৫৫,

তার জন্ম হয়েছিল বাংলাদেশের একটি ছোট্ট গ্রামে, নাম বাজিতপুর, থানা রাজৈর, জেলা মাদারীপুর।
১৯৭২ সালে বাজিতপুর উচ্চবিদ্যালয় থেকে মেট্রিক , এরপর মাদারীপুর নাজিম উদ্দিন কলেজ থেকে
উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেন ১৯৭৪ সালে।
তারপর তিনি বাড়ী থেকে চলে যান উত্তরবঙ্গের নাটোর শহরে। সেখানে ভর্তি হন এইটিআইতে। সেখানে বৃত্তি দেয়া হত। তবুও তিনি একবছর তিনমাস পর সেখান থেকে চলে যান ,কারণ ভিন্নকিছু করার জন্য। ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজ থেকে ১৯৭৮ সালে শেষ করেন বিএসসি। ১৯৭৯ সালের অক্টোবর মাসে চলে যান জার্মানিতে।
সেখানে গিয়ে অন্য কোন পথ না থাকায় রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে হয়। তবে তা তিনি পাননি । এরপর প্রায় তিনবছর ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন ।
এরপর ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং লেখাপড়ার জন্য ডর্টমুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। তখন জার্মানিতে বিদেশি ছাত্রদের জন্য কোন টাকা-পয়সা সরকার থেকে দেয়া হয়না লেখাপড়ার জন্য। যদিও জার্মানরা সবাই সরকার থেকে সব খরচ পেত। তাই তাকে বিভিন্ন সময়ে পার্টটাইম জব করতে হয়েছে। প্রায় দুই বৎসর তখনকার ভিটেন শহরে শনি ও রবিবার ট্যাক্সি চালাতেন তিনি । তাই দিয়েই চলে যেত।
পড়াশুনা চলাকালীন ১৯৮৬ সালে শুরু করেন ইন্টারপ্রেটার হিসেবে কাজ করা।
১৯৯২ সালে সিদ্ধান্ত নেন একটি আন্তর্জাতিক ইন্টারপ্রেটার এবং ট্রান্সলেটর অফিস করার। এই অফিস শুরু
করেন পৃথিবীর সব ভাষার জন্য তার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথেই।
প্রায় ২৮ বৎসর যাবৎ এই অফিস চালাচ্ছেন। এই অফিসের মাধ্যমে প্রায় ৪০০ ফ্রিল্যান্সার কাজ
করছে। সাধারণত বাংলা – জার্মান – বাংলা ভাষার জন্য কাজ করা হয়। মাঝে মাঝে ইংরেজি থেকেও জার্মান
ভাষায় অনুবাদের কাজ হয় এখানে।
বিয়ে করেন ১৯৮৯ সালে। স্ত্রী জার্মান বাসিন্দা। তিন মেয়ে ও এক ছেলের সংসার।
দুই মেয়ে জার্মানিতে ডক্টরেট করছেন। ছোট মেয়েটি মাস্টার্স শেষ পর্বে । ছেলে জার্মানির
আখেন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিজিক্স নিয়ে লেখাপড়া করছে।
তিনি ডর্টমুন্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকালীন ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত হন।
২০০৮ সালে পূনরায় শুরু করেন রাজনীতি। তখন চলছিল লোকাল ইলেকশন। ওইসময় তিনি
গ্রিনপার্টির সঙ্গে যুক্ত হন। কারণ প্রবাসীদের পক্ষে কথা বলে এই গ্রিনপার্টি।
২০০৪ সালে যখন বাংলাদেশে বন্যা হয়, তখন তার অঙ্গরাজ্যের বাঙালিরা বন্যাকবলিত মানুষের জন্য
কিছু সহায়তা দেয়ার টাকা জমা করে। সাহাবুদ্দিন মিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয় তাৎক্ষণিকভাবে বাংলাদেশে গিয়ে এই অনুদান
দিয়ে আসার জন্য। ওইসময় নিজ খরচে ৫ দিনের জন্য বাংলাদেশে এসে অনুদানের ডকুমেন্ট করতে গিয়ে
দেখেন যে সেখানের ৬০% বাসিন্দা স্বাক্ষরও করতে পারেনা।
তাই তিনি ওইবছর ডিসেম্বর মাসে আবারও বাংলাদেশে যান এবং তার গ্রামের সবাইকে ডেকে একটি প্রাথমিক
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করেন ।
জার্মানীতে বন্ধুবান্ধব নিয়ে একটি এনজিও (জার্মান ভাষায় – ফেরাইন) প্রতিষ্ঠা করেন।
এরপর থেকে শুরু করেন বিশাল সামাজিক কর্মকাণ্ড । চার সন্তান
ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছে তার শহরের স্কুল-কাম-কলেজে। সেকারণে এই কলেজের প্রধান এক্সিকিউটিভ
কমিটির ছয় জন বাবা-মায়ের মধ্যে প্রায় ১০ বৎসর ইলেকটেড মেম্বার ছিলেন তিনি । বিভিন্ন স্থানে সভা সেমিনার করে
বাংলাদেশে ও বাঙ্গালিদের জীবন্যাত্রাকে তিনি পরিচিত করে তুলেন ।
এরপর তিনি ইলেকশনে এই শহরের মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের এম পি হন । এর সাথে সাথে তাকে ভোট দিয়ে
গ্রিনপার্টির সভাপতি নির্বাচিত করা হয় । সভাপতি পদে প্রায় ৮ বছর পূর্ণ করেন । গত সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত ইলেকশনে তিনি জেলা পরিষদের এম পি হন।
সাহাবুদ্দিন মিয়াকে গত বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে তার জেলার গ্রিনপার্টির সদস্যদের মাধ্যমে ফেডারেল সংসদের
প্রার্থী নিযুক্ত করা হয় এবং গতমাসে অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে ফেডারেল সংসদ
প্রার্থীদের তালিকায় একটি স্থান করে নেন ।তার দল ২০% ভোট পেলে তিনি অবশ্যই ফেডারেল
পার্লামেন্টের এমপি হবেন ।
সাহাবুদ্দিন মিয়া ৪২ বছর যাবত জার্মানিতে বসবাস করছেন। এখন বাঙ্গালীদের কাছে তিনি মিয়া ভাই হিসেবে একজন আপন ও জনপ্রিয় মানুষ হিসেবে সবার মনে স্থান করে নিয়েছেন।

সাহাবুদ্দিন মিয়া

বাংলাদেশ সময়: ১৩:৪৭:২৮   ১০১৫ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #  #  #  #