বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১

ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তরুছায়ার সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

Home Page » প্রথমপাতা » ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তরুছায়ার সভাপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ
বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল ২০২১



ধর্ষণের অভিযোগ
ব্যুরো চিফ, ফরিদপুরঃ-

ফরিদপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তরুছায়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি খালিদ মাহমুদ সজিবের বিরুদ্ধে এক হিন্দু মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও একাধিক নারীর সাথে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সংগঠনের রাজেন্দ্র কলেজ শাখার এ্যাম্বাসেডর সারথি (ছদ্মনাম) এ ধর্ষণের অভিযোগ করেন। সারথি সরকারী রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও মাদারীপুর জেলা সদরের বাসিন্দা।
অভিযুক্ত তরুছায়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি খালিদ মাহমুদ সজিব ফরিদপুর পৌরসভার রঘুনন্দপুর এলাকার মোঃ টুটুল মোল্লার ছেলে।
অভিযোগকারীনী প্রতিবেদককে বলেন, ফরিদপুরে পড়ালেখার সুবাদে সজিবের সাথে আমার পরিচয় হয়। এরপর আমাকে তরুছায়া ফাউন্ডেশনের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের কলেজ এ্যাম্বেসেডর করে। ঐখান থেকেই আমাদের সম্পর্ক শুরু হয়। আমাদের সম্পর্ক ২ বছরের বেশী সময় যাবৎ ভালোই চলছিলো। এছাড়া সজিব হঠাৎ করে আমাকে বলে দুজনে একটি বাসা নিয়ে থাকবো। আমাদের এ সম্পর্কের কথা ফরিদপুরের অনেকের কাছেও বলেছে সজিব। এরপর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফরিদপুর শহরের কমলাপুরের ডিআইবি বটতলা এলাকায় শরীফ মঞ্জিল নামক একটি বাসা আমাকে ভাড়া করে দেয়। সেখানে আমি ৪ মাস অবস্থান করি। এই ৪ মাসে বিয়ে ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মিতভাবে আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করেছে। আমি সজিবকে এতটাই ভালোবাসতাম যে, সনাতন ধর্মের লোক হয়েও ওকে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। ওরে আমি অন্ধভাবে ভালোবাসতাম। এই সুযোগে ও আমার সাথে প্রতিনিয়ত দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এরপর তাকে আমি বিয়ের কথা বললে, সে বলে আমার পরিবার অনেক সমস্যায় আছে। এসব কথা বলে চুপ করিয়ে দেয়। এভাবে ৪ মাস অতিক্রম করার পরে আমাকে বিয়ে না করার বিভিন্ন অযুহাত দেখায়। এ নিয়ে আমাদের মাঝে ঝগড়া হয়। ঝগড়া হলে আমার সব কিছু নিয়ে বাসা থেকে বাড়িতে চলে আসি। এক পর্যায়ে বলে আমাকে সে বিয়ে করতে পারবে না এবং আমার নামে নানান মিথ্যা অভিযোগ রটায়। এছাড়া আমাকে বলে, আমার ফ্যামিলি ভিখারী, আমার ফ্যামিলি আমাকে টাকা পয়সা দেয় না, তোকে বিয়ে করতে পারবো না। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা এবং সাংবাদিকদের জানানোর কথা বললে, আমাকে নানা ধরনের হুমকি দেয় এবং আমার নামে মানহানি মামলা করবে বলেও হুমকি দিচ্ছে এখনও। এখন আমি সনাতন ধর্মের মেয়ে হিসেবে আমার সাথে যে প্রতারণা করেছে, এর জন্য আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। ওর এমন বিচার চাই যে, ভবিষ্যতে আর কোনো মেয়ে ওর প্রতারণার শিকার হয়ে জীবন নষ্ট না করে। ওর হুমকির জন্য বর্তমানে আমার ফরিদপুর যাওয়া রিস্ক হয়ে পড়েছে। ওর বিশাল একটি গ্যাং আছে। আমাকে মেরেও ফেলতে পারে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সজিবের কোনো ইনকাম সোর্স নেই। ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে টাকা এনে লুটে-পুটে খায়। এই টাকা দিয়ে সজিব আয়েসী জীবন-যাপন করে যাচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবীর নামে দূর্ণীতি করে যাচ্ছে, দেশের ক্ষতি করছে। এছাড়া এই নারী আরো অভিযোগ করে বলেন, এই সজিবের সাথে অতিতেও আরো মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো। আপনারা খোঁজ নিলে সত্যটা বেড়িয়ে আসবে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, তরুছায়া সংগঠনটি (সংগঠনের রেজিঃ ৯৪৩) স্কুল-কলেজে পড়ুয়া একঝাঁক তরুণ-তরুণী মেধাবী স্বেচ্ছাসেবী দ্বারা পরিচালিত। ২০১৮ সালে ইয়াং বাংলা কর্তৃক আয়োজিত সামাজিক ক্যাটাগরিতে জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত একটি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান। এই সুবাদে সংগঠনের কর্মসূচী হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করা হয়। বিশেষ করে সমাজের পিছিয়ে পড়া অসহায় হতদরিদ্র মানুষের মাঝে সাহায্য সহযোগিতা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। খালিদ মাহমুদ সজিব এ সংগঠনের সভাপতি হওয়ায় একক ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে তার অপকর্ম গুলো দিনদিনই বেড়ে উঠে। সংগঠনের নামে নগদ আর্থিক অনুদান সংরক্ষণের জন্য এখনো কোনো ব্যাংকে হিসাব বই খোলা হয়নি। আরও জানা যায়, সংগঠনের নামে প্রায় দুই লক্ষ টাকা, কয়েকটি ল্যাপটপ সহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী রয়েছে তার নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া সংগঠনের মেয়ে সদস্যদের প্রতি খালিদ মাহমুদ সজীবের রয়েছে কুদৃষ্টি। মেয়েদেরকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে করা হয় তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক। তরুছায়ার সভাপতি সজীবের অপকর্মের শিকার হয়েছে ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স পড়ুয়া সনাতন ধর্মাবলম্বী উল্লেখিত অভিযোগকারীনী।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত খালিদ মাহমুদ সজীব বলেন, অভিযোগকারীনী আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ দিয়েছে, তা মিথ্যা। আমি তাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম এবং এখন পর্যন্ত চাই। তার পরিবারের সাথে আমার প্রায়ই কথা হয়। আমি তার বাবা-মায়ের সাথে কথা বলেছি। আমাদের বিয়ের কথাও হয়েছে। ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য কারও প্ররোচনায় পড়ে সে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করছে।

বাংলাদেশ সময়: ০:৩৪:৪২   ৮৩০ বার পঠিত   #  #  #  #