সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

প্রশাসনের একান্ত সহযোগিতা চেয়ে ঘাটাইলের এক অসহায় শিক্ষকের আর্তনাদঃ

Home Page » সারাদেশ » প্রশাসনের একান্ত সহযোগিতা চেয়ে ঘাটাইলের এক অসহায় শিক্ষকের আর্তনাদঃ
সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১



ফাইল ছবি

বঙ্গনিউজ প্রতিনিধি: বাজারস্থ রাস্তার পাশে জমি বিক্রয়পূর্বক চড়া মূল্য নিয়ে, পরিত্যক্ত চালা জমির দলিল করে দেয়ার মাধ্যমে প্রতারণা করে, বছরের পর বছর ধরে এক নিরীহ মাদ্রাসা শিক্ষকের কাছে চাঁদা দাবি ও তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে টাঙ্গাইলের, ঘাটাইল উপজেলার, ধলাপাড়া ইউনিয়নের, শহর গোপিনপুর নামক গ্রামে।

ভুক্তভোগী মাওলানা আব্দুর রহিম শহর গোপিনপুর ফাযিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক। দুই যুগ ধরে উক্ত মাদ্রাসায় শিক্ষকতার সুবাদে, তিনি পৈত্রিক নিবাস ছেড়ে এ এলাকায়ই বাসা-বাড়ি করার উদ্দেশ্যে বুলবুল হোসেন সিকদার ও আমিনুল ইসলাম ওরফে বাদল এই ভ্রাতৃদ্বয়ের
শহর গোপিনপুর বাজারস্থ চার শতাংশ জমি, সর্বোচ্চ বাজার মূল্যে ক্রয় করেন(০২/০৫/১৯৯৫ তারিখে)। যার দলিল নং -৩৫৭৭। অতঃপর ক্রয়সূত্রে গ্রহীতা আব্দুর রহিম রেজিস্ট্রি করে নিয়ে উক্ত জায়গার মালিক হন এবং বাসাবাড়ি ও দোকান করে বসবাস এবং ব্যবসা করতে থাকেন।

এভাবে কয়েক বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর ভুক্তভোগী আব্দুর রহিম জানতে পারেন যে, জমি বিক্রেতাগণ রাস্তার পাশের জমি বিক্রি করে কৌশলে সত্য গোপন করে পরিত্যক্ত চালা জমি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছে। অর্থাৎ-জমির দাগ নং -২১৮৭ এর স্থলে ২১৮৯ বসিয়ে প্রতারণা করেছে। এভাবে দলিলে ভুল দাগ লিখে দেয়ার বিষয় এলাকাবাসী জানতে পেরে বিবাদী বা বিক্রেতাদেরকে চাপ প্রয়োগ করলে ২১৮৭ নং দাগের পেছন থেকে আরো ৪ শতাংশ ও দখলকৃত ৪ শতাংশ মিলিয়ে মোট ৮ শতাংশ জমি সঠিক দাগ অনুযায়ী রেজিস্ট্রি করিয়ে দেবে বলে, ২য় ধাপে ক্রয়কৃত জমির মূল্য ২ লক্ষ টাকা ধরে, বাদী আবদুর রহিমকে ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা দিতে বলা হয় এবং পরিপূর্ণ রেজিস্ট্রি পরবর্তী সময়ে বাকি টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়। এজন্য বাদী ফেরত রেজিস্ট্রি করিয়ে দিতে তার জমি খারিজ করেন এবং এলাকাবাসীর সম্মুখে বিবাদীদের সম্মতি নিয়ে উক্ত জমিতে বিল্ডিং নির্মাণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে, আব্দুর রহিম তা নির্মাণের কাজ শুরু করেন। দুই মাস কাজ করানোর পর, ছাদ নির্মাণের সময় বাধা প্রদান করে বিবাদীরা তিন লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। এরই প্রেক্ষিতে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সম্মুখে ১৫ দিনের মধ্যে দলিল রেজিস্ট্রি করিয়ে দিবে বলে শর্তারোপ করে দুই লক্ষ বিশ হাজার টাকা প্রদান করলেও কয়েক দিন পর তারা আবার বিল্ডিং নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয় এবং দলিল করে দিতে গড়িমসি শুরু করে। একপর্যায়ে বিবাদীরা, বাদীর বিল্ডিংয়ের পেছনের বসতঘর ভেঙ্গে যাবতীয় মালামাল লুট করে নেয়, এমনকি বিল্ডিংয়েরও মালামাল নিয়ে যায়। আর বাদী আঃ রহিমকে খুন করে লাশ গুম করার হুমকি পর্যন্ত দেয়।

বাদী একজন আলেম, মাদ্রাসা শিক্ষক এবং একজন সরলমনা মানুষ হওয়ায় অর্থলোভী ও আইন অমান্যকারী বিবাদীপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিনিয়তই তার সাথে প্রতারণা করে আসছে। উল্লেখ্য যে, ইতিপূর্বে শহর গোপিনপুর ফাযিল মাদ্রাসার সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুল হাই ও বাংলা সহকারী অধ্যাপক খন্দকার আব্দুর রাজ্জাকের সাথেও একই কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছিল তারা।

গ্রাম্য সালিশ ও ইউনিয়ন পরিষদের সালিশি আদালতের অধিকাংশ বৈঠকগুলোতেই ২০১৬ সাল থেকে এপর্যন্ত বিবাদীরা উপস্থিত হয়নি। যতই দিন পার হয়েছে ততই তারা উক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকের ওপর নির্যাতন ও হয়রানির পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে। আজ পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়েও নিজ জমির দলিল পাননি অসহায় ওই মাদ্রাসা শিক্ষক। নিরুপায় হয়ে তিনি এ ব্যাপারে প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সাহায্য ও বছরের পর বছর ধরে তার এই অসহায়ত্বের অবসান চান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৩:৪১   ১২৫৮ বার পঠিত