মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১

ভাঙ্গায় স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ

Home Page » প্রথমপাতা » ভাঙ্গায় স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে স্বামীর মৃত্যুর অভিযোগ
মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১



নিহত এনায়েত শেখ (২৫)
ব্যুরো চিফ, ফরিদপুরঃ
 ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে এনায়েত শেখ (২৫) নামের এক যুবক বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়াগেছে। স্ত্রীকে আরেক জনের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় দেখে ফেলেন স্বামী এনায়েত শেখ। ঘটনার দু’দিন পরে লোকলজ্জার ভয়ে বিষ পান করেন ওই যুবক। পরে তাকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতী দেখে তাকে রেফার্ড করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার ১০ দিন পর মঙ্গলবার দুপুরে নিহতের পিতা ভাঙ্গা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নিহত যুবক উপজেলার আলগী ইউনিয়নের বালিয়াচরা গ্রামের লুতফর শেখের ছেলে। তার স্ত্রী বিথি আক্তার (১৯) একই উপজেলার নওপাড়া জান্দী গ্রামের হাসমত মাতুব্বরের মেয়ে।
স্থানীয় ও পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, গত সোমবার ৬/১/২০২১ রাতে স্বামী-স্ত্রী মিলে শোবার ঘরে যায়। স্বামীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে শোবার ঘরে গভীর রাতে আরেক জনের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত ছিলেন স্ত্রী। হঠাৎ গভীর রাতে এনায়েতের ঘুম ভেঙ্গে গেলে সে তার শোবার ঘরে অপরিচিত এক যুবকের সঙ্গে তার স্ত্রী বিথিকে অনৈতিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় দেখে ফেলেন। সকালে ঘটনাটি উভয় পরিবার ও প্রতিবেশীর মধ্যে জানাজানি হয়। একপর্যায়ে স্ত্রীর পরকিয়ার ঘটনা সইতে না পেরে শুক্রবার দুপুরে নিজের ঘরে এনায়েত বিষ পান করেন। পরে তাকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতী হওয়ায় ফরিদপুর মেডিকেলে তাকে রেফার্ড করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যু বরণ করেন। পরে ফরিদপুর কোতয়ালি থানা পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। শনিবার সকালে নিজ গ্রামে তার দাফনকাজ সম্পন্ন করা হয়।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ৬ মাস আগে এনায়েতের সাথে বিথির পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়। আমরা জানতাম না বিয়ের আগে থেকেই বিথির সঙ্গে অন্য কোন ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিথির মা ও বড় বোন তাসলিমার সহযোগিতায় বিথি তার গর্ভে থাকা ২ মাসের অন্তঃসত্বা সন্তানকে নষ্ট করে ফেলেছে। বিথির পরকিয়ার জেরে এনায়েতের এমন মৃত্যু হল।
নিহতের ভগ্নিপতি ইউপি সদস্য শওকত মোল্লা জানান, বিথির পরিবারের সাথে কথা হয়ে ছিল স্থানীয়ভাবে মিমাংসার জন্য। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। ভাঙ্গা থানায় এ বিষয় ওসির সাথে কথা হলে তিনি জানিয়েছেন লাশের ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আলগী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ম ম সিদ্দিক জানান, বিথির পরিবারের সদস্য নুর মোহাম্মদ স্থানীয় শালিশের মাধ্যমে মিমাংসার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ঘটনার প্রায় ১১ দিন পার হয়ে গেলেও কোন সমাধান হয়নি। বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনের নিকট আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ভাঙ্গা থানার ওসি সৈয়দ লুৎফর রহমান জানান, হ্যা আমি শুনছি। তাদেরকে বলছি, যেহেতু সে স্যুইসাইড (আত্মহত্যা) করছে, তাই তাদের যদি অভিযোগ থাকে তারা কোর্টে যেয়ে মামলা করবে। এরপর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৯:৪০   ৬৯৬ বার পঠিত   #  #  #  #  #