রবিবার, ৪ আগস্ট ২০১৩

” অর্ধেক পথ বাকি: জয়”

Home Page » প্রথমপাতা » ” অর্ধেক পথ বাকি: জয়”
রবিবার, ৪ আগস্ট ২০১৩



joy-1.jpgবঙ্গ- নিউজ ডটকমঃতরুণদের সঙ্গে এক খোলামেলা আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে অর্ধেক এগিয়েছে।বাকি পথ পেরুতে বর্তমান সরকারের আবার আসা দরকার বলে মনে করেন তিনি। আওয়ামী লীগ প্রতিশ্রুত ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে এই দলকে আবারো ক্ষমতায় আনতে তরুনদের প্রতি আহবান জানান জয়।শনিবার বিকেলে গুলশানের একটি মিলনায়তনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ‘লেটস টক’ শিরোনামের এক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে মুখোমুখি হন বঙ্গবন্ধুর নাতি।

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী জয় সম্প্রতি দেশে্ এসে রাজনীতি নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনার ঝড় তোলেন। কয়েকদিন ধরে প্রধান রাজনৈতিক দল দুটির শীর্ষ নেতারা কথা বলছেন তার পক্ষে বিপক্ষে।

এমন পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠানে উপস্থিত কয়েক’শ শিক্ষার্থীর মধ্য থেকে রাজনীতি, অর্থনীতি, হত্যা, যুদ্ধাপরাধীর বিচার থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও প্রশ্ন আসে জয়ের সামনে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের দু‘জন সাংবাদিক পুরো অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।

তরুণ শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের জবাবের এক জায়গায় প্রধানমন্ত্রীর ছেলে বলেন, “এই পাঁচ বছরে আমরা বিদ্যুতের সমস্যার সমাধান করেছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ অর্ধেক পথ এগিয়েছি। আরো অর্ধেক পথ কিন্তু বাকী আছে। আর যেটা সমস্যা আশা করি আওয়ামী লীগ ফেরত আসলে আমরা সমাধান করতে পারবো।”

তার দাবি, “আমরা যেটা করেছি, আগের সরকারগুলো করেনি। আমরা গ্রামাঞ্চলে ভাতা দেওয়া শুরু করেছি। আমরা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বিস্তৃতি এতো বাড়িয়েছি যা আগের কোন সরকারের আমলে ছিল না। যারা দরিদ্র তারা ভাতা, চাল, ডাল পাচ্ছে।”

ভুলভ্রান্তি থাকলেও সরকার তার দায়িত্ব পালন করেছেন বলে মনে করেন জয়।

দুই ঘন্টারও বেশি সময় ধরে জয় একের পর এক প্রশ্নের উত্তর দেন।

বিশ্বজিত হত্যাকাণ্ড ও লিমনের ঘটনার মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে কি না না- এক শিক্ষার্থীর এই প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, “আমরা সভ্য সমাজের নাগরিক হিসেবে এটা সহ্য করতে পারি না। সহ্য কিন্তু আমরা করিনিও। যারা বিশ্বজিতকে হত্যা করেছে তাদেরকে সঙ্গে সঙ্গেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দল বা পারিবারিক পরিচয় কিছুই কিন্তু দেখা হয়নি।”

“আমাদের দেশে ১৫ কোটি মানুষ। সবকিছু পারফেক্ট হবে সেটা কিন্তু আশা করতে পারেন না। তবে সরকারের দায়িত্ব যারা আইন ভাঙবে তাদের বিচার করা, সেটা আমরা করেছি। যে সরকার বিচার করেছে আপনারা তার দোষ দেবেন?” পাল্টা জানতে চান তিনি।

বিগত বিএনপি-জামায়াত সরকারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “দেশ হিসেবে আমরা কোথায় ছিলাম? মানবাধিকার বলে বাংলাদেশে কিছু ছিলো? শুধু দোষ দিলে তো হবে না, তুলনাটাও করতে হবে। আবার দেখতে হবে ইমপ্রুভমেন্ট হয়েছে কী না, উন্নয়ন হয়েছে কী না। আমরা সামনে এগুচ্ছি কি না?

“১০ বছর আগে কতজন মানুষ মারা গিয়েছিল ছাত্রদলের হাতে, আর কয়জন ছাত্রদল নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আপনারা যদি আশা করেন, পাঁচ বছরের মধ্যে সব হয়ে যাবে, বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হয়ে যাবে, সেটা কি সম্ভব?

“বিষয়টা হচ্ছে উন্নতি হচ্ছে কি না? মানবাধিকারের ক্ষেত্রে মারাত্মক ইমপ্রুভমেন্ট হচ্ছে। হ্যা ভুলভ্রান্তি হয়েছে, তবে সরকার তার দায়িত্ব পালন করেছে। একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই দায়িত্ব পালন করেছে। সরকারের ভূল হবে, তবে আমরা সামনের দিকে আগাচ্ছি কিনা, সেটাই হচ্ছে বিষয়।”

বিকেল ৩টা থেকেই জয়ের অনুষ্ঠানে জড়ো হন কয়েক’শ শিক্ষার্থী। তিনি মিলনায়তনে প্রবেশ করেন ৩টা ৩৫ মিনিটে। শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানায়। হাসিমুখে তিনি প্রতিউত্তর দেন।

এসময় উপস্থাপক জয়কে নিয়ে মঞ্চে নিয়ে যান।

উপস্থাপকের ভুমিকা শেষে জয় বলেন, “বেশিদিন হয়নি আমি ছাত্র ছিলাম। পাঁচ বছর আগে মাস্টার্স শেষ করেছি।”

জয় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর করেছেন পাঁচ বছর আগে।

এসময় উপস্থাপকের প্রশ্ন, “রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান, নাকি তথ্য প্রযুক্তিবিদ? কোন পরিচয় পছন্দ করেন?”

উত্তর দেন জয়, “ওইরকম পরিচয় কোনদিন আমি খুঁজিনি। নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি। কারণ নিজের দক্ষতা দিয়ে দেশকে সেবা করতে পারছি। এরকম সুযোগ অনেকেই পায় না। আমার পরিচয় বা ভবিষ্যত কি হবে সেটা নিয়ে ভাবি নাই।

“আমার ক্যারিয়ার কিন্তু রাজনীতি নয়, আমার ক্যারিয়ার আইটি নিয়ে। দেশের মানুষকে দেশকে সেবা করার জন্য এসেছি।”

“ভবিষ্যত বাংলাদেশকে কীভাবে দেখেন আপনি?”

উপস্থাপকের পরের প্রশ্নে একটুও দেরি নয়, তৈরি উত্তর জয়ের, “বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হবে। এখানে দারিদ্র্য থাকবে না। আমরা যদি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮, ৯, ১০ শতাংশে নিয়ে যেতে পারি তাহলে মধ্যম আয়ের দেশ না, উন্নত দেশের মধ্যেও চলে যেতে পারি। এবং এটা অসম্ভব না। এটা আপনাদের লাইফ টাইমেই সম্ভব। তবে তার জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।”

এরপরই ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন করার জন্য সুযোগ দেওয়া হয়।

এসময় কালো প্যান্ট, ছাই রঙা ফুলহাতা শার্ট গায়ে দেওয়া জয় মঞ্চ থেকে নেমে আসেন। হাসতে হাসতে দর্শক সারিতে হাঁটাহাঁটি করতে থাকেন।

প্রশ্ন নিয়ে তা বাছাই করার জন্য জয়কে আমন্ত্রণ জানান উপস্থাপক। তিনি তা না করে উপস্থাপককেই করতে বলেন।

“আপনার প্রথম প্রেম কার সঙ্গে?” প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গেই মিলনায়তন জুড়ে হাসির রোল।

সম্প্রতি ৪২ পেরুনো জয় বলেন, “আমি ঠিক জানি না। আমার অতো বেশি গার্ল ফ্রেন্ড হয়নি। আমি দশ বছর ধরে বিবাহিত। তার আগে কবে কি হয়েছিল আমার অতো মনেও নাই।”

“বাইক চালাতে পছন্দ করেন কী না?”

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, “আমি মটর সাইকেল চালাতে পছন্দ করি। ১৮ বছর বয়স থেকে বাইক চালায়, যখন ব্যাঙ্গালোরে স্মাতক করি। তখন অতো টাকাও ছিল না। তখন আমি একটা পুরনো মটর সাইকেল চালাতাম। এমেরিকায় আমি মটর সাইকেল রেইস করতাম, প্রফেশনালি। হাত ভেঙেছিল একবার।”

বলতে বলতে শার্টের হাতের বোতাম খুলে কবজির পুরোনা জখম দেখান তিনি।

“স্ত্রী ক্রিস্টিন ওভারমায়ারের সঙ্গে পরিচয় কীভাবে?”

“আমি যে অ্যাপার্টমেন্টে থাকতাম ওই অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সেই ওর বেস্ট ফ্রেন্ড থাকতো। ওরা তিনচার বন্ধু মিলে ছুটির দিনে আড্ডা মারতে এসেছিল। সেখান থেকেই পরিচয়। তারপর থেকেই.. ”

“আদর্শ কে? বাবা নাকি মা?”

উত্তর: বিজ্ঞানের দিকে আমার আকর্ষণটা একটু বেশি। বাবার সায়েন্টিফিক আউটলুক আমি পেয়েছি। কিন্তু বন্ধুত্বের দিক থেকে মা’র সঙ্গে বেশি ক্লোজ। বাবা অফিসে থাকতেন। মার সঙ্গে সময় কাটানো হতো।

কি খেতে পছন্দ করেন?

“খাদ্যের দিক দিয়ে, ক্রিস্টিন যে কথাটা বলে, সে খুবই ভাগ্যবান। ও যা রান্না করে আমি তাই খেয়ে নেই। খাবারের প্রতি আমার খুব আকর্ষণ নেই।”

প্রিয় লেখকে কে?

“এইটা একটু চিন্তা করতে হবে। ফিকশনের দিক দিয়ে কেন ফলেট। তার ফিকশন আমার খুব প্রিয়। প্রেসিডেন্ট ওবামা কিন্তু আমার ফেভারিট একজন রাইটার। ওনার বইগুলো খুবই ভালোভাবে লেখা, মজা করে লেখা এবং খুবই ইনফরমেটিভ। ভালো ভালো অভিজ্ঞতা আছে, রাজনৈতিক তথ্য বলেন, সামাজিক তথ্য বলেন- ওর মধ্যে আছে।”

এসময় ব্যক্তিগত বিষয়ের বাইরে প্রশ্ন করার জন্য দর্শকদের আহ্বান জানানো হলে প্রথম প্রশ্ন আসে, “ফরমালিন দীর্ঘদিন খেতে খেতে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে কী না?”

সজীব ওয়াজেদ বলেন, “শরীরে ফরমালিনের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব আমাদের এখানে স্টাডি করা হয় নাই। তারপরও আমাদের সরকার ড্রাইভ চালিয়ে যাচ্ছে অবৈধ ফরমালিনের বিরুদ্ধে। আমাদের একটা কালচার অব ইমপিউনিটি হয়ে গেছে, আমরা যা ইচ্ছা তাই করতে পারি, কেউ কিছু বলবে না, কেউ ধরবে না। মূল কারণটা হলো, আমাদের দেশে বড় বড় যে ইনজাস্টিজগুলো হয়েছে সেগুলোর এখনও বিচার হয়নি।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী হত্যা, পঁচাত্তরের ক্যু। আমরা আওয়ামী সরকার সবগুলোর বিচার করার চেষ্টা করছি। আমরা এরকম ড্রাইভ চালাতে থাকলে শিগগিরই এ সমস্যা আর থাকবে না।”

“আইটি নিয়ে কি স্বপ্ন দেখেন?”

এ প্রশ্নে উত্তর জয়ের, “তথ্য প্রযুক্তিতে আমরা যে বিপ্লব আনার চেষ্টা করছি সেটা কিন্তু পাঁচ বছরে সম্ভব নয়। আমরা একেবারে শূন্য থেকে শুরু করেছি। শুরুর সময় দুটো সমস্যা ছিল। একটা বিদ্যুত, আরেকটা কানেকটিভি। আমরা সমান্তরালভাবে সমস্যা সমাধানের চেস্টা করেছি। বিদ্যুতের সমস্যা নেই। কানেকটিভিটিও চলে গেছে, যদিও ব্যান্ডউইথ কম। কিন্তু পাঁচ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ করা সম্ভব নয়। সময় লাগবে, তবে অনেক এগিয়ে গেছি।”

এরপর বেশ কয়েকটি প্রশ্ন একসঙ্গে করা হয়। এক এক করে জয় তার উত্তর দেন।

“আপনি যদি দলে গণতন্ত্র চর্চা না করে রাজনীতিতে চলে আসেন তাহলে গণতন্ত্র থাকবে কি? আপনি বলেছেন তথ্য আছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় চলে আসবে। ভোট গনণার আগেই এ তথ্য পেলেন কীভাবে? রাজনীতিতে তরুণদের চোখে পড়ছে না কেন?”

টানা কয়দিন সংবাদপত্রের শিরোনামে থাকা জয় বলেন, “আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। আমার কিন্তু কখনো ক্ষমতায় বসার ইচ্ছা ছিল না। দলে আমার কোনো পোস্ট নেই। আমি সরকারি পোস্টও নেইনি। আবার ধাপ করে এসে ক্ষমতায় বসে পড়ার ইচ্ছাও নাই। সরাসরি আমি এখনো রাজনীতিতে যোগ দেইনি। আমি এসেছি আমার দলকে সহযোগিতা করতে।

“দেশের জন্য কাজ করার অনেক রকম পদ্ধতি আছে। দলে বা সরকারে পোস্ট নিতে হবে, সেটা কিন্তু সঠিক নয়। আমি সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে কি হবে সেটা কিন্তু ভোটারদের ওপরই নির্ভর করবে। আমি যদি কোনদিন নির্বাচনে দাঁড়াই, আমাকে কিন্তু ভোটের মাধ্যমেই আসতে হবে।

“বিশ্বের সব দেশেই নির্বাচনের আগে পোলিং চলে। আমাদের দেশেও পোলিং চলে। পোলিং করে বলে দেওয়া যায় কোন দল ক্ষমতায় আসবে, হয়তো ২ থেকে ৪ শতাংশ এরর হতে পারে।”

উত্তর শেষ হতেই আরেক শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেন, “আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নির্বাচনের মাধ্যমে হয় না। দলে গণতন্ত্র আছে কি?”

দ্বিমত পোষণ করে শেখ হাসিনাপুত্র বলেন, “আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের সবগুলো পদে নির্বাচন হয়েছে। ছাত্রলীগ গতবার ব্যালট দিয়ে নির্বাচন করেছে। আমার মায়ের ক্ষেত্রে অন্য কারণ আছে। ৮৫ সালের পর থেকে মায়ের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কেউ মনোনয়ন দেননি। কেউ দাঁড়ালে নির্বাচন হতো। আমিও যদি ফিউচারে দাঁড়াতে যাই আমাকেও কিন্তু পার্টির মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। আওয়ামী লীগ একমাত্র দল যারা পার্টির মধ্যে নির্বাচন করে।”

আরেক শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেন, “খাদ্যমূল্য কমানো, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা ও পদ্মা সেতু বাস্তবায়নসহ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন সরকার করতে পারেনি, এজন্য তারা জনগণের আস্থা অনেকটা হারিয়েছে। আস্থা কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন ”

জয় বলেন, “যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তো আমরা করেছি, রায়ও পেয়েছি। পাঁচ বছর আগে কি তাদের বিরুদ্ধে কেসও করা হয়েছিল? আমরা তো বিচার করছি। পদ্মা সেতু আমরা করতে পারিনি। কিন্তু পদ্মা সেতুর কাজ তো এগুচ্ছে, সময় লাগছে।

“আমরা চালের উৎপাদন বাড়িয়েছি। মঙ্গায় কেউ মারা যায়নি। চাল রপ্তানি হচ্ছে। আরো এতগুলো ওয়াদা ছিলো, সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করেছি। সেগুলোর কথা কেন বলছেন না? আমরা যে পরিমাণ বই বিতরণ করেছি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছি, কোনো সরকার তা পারেনি। বিদ্যুতের সমস্যার আমরা সমাধান করেছি। প্রত্যেকটি গ্রামে আমরা স্বাস্থ্যসেবা ক্লিনিক করে ফেলেছি। সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষিতে আমরা উন্নতি করেছি। তাহলে ব্যর্থতা কোথায়?”

একটি প্রশ্ন আসে, “ট্র্যাফিক জ্যাম নিরসন কীভাবে করবেন?”

উত্তর আসে, “এতোগুলো ফ্লাইওভার দেখছেন, পরিকল্পনা ও নির্মাণ কাজ এই সরকারের আমলেই করা হয়েছে। এতদ্রুত কোন সরকার কাজ করতে পারেনি। জ্যাম নিরসনের পরিকল্পনা আছে আমাদের। তবে দুটো সমস্যা। ব্যক্তিগত গাড়ী বাড়ছে এবং ট্রাফিক ডিসিপ্লিন আনা। এক্ষেত্রে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যার অভাব। আমরা পাবলিক ট্রান্সপোর্টেশন সিস্টেম নিয়ে আসছি। বড় বড় অনেক বাস এনেছি। মেট্রো সিস্টেমে ফাইনাল স্টেজে চলে এসেছে। আগামীতে এটা হয়ে যাবে।

তবে এরজন্য আবার আওয়ামী লীগ সরকারের প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ সরকার না আসলে কিন্তু হবে না। আগের সরকার তো এরকম কিছু করেনি।”

শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না?-উপস্থাপকের এরকম প্রশ্নের জবাবও দেন সজীব ওয়াজেদ জয়, “আমরা চেয়েছি, আমাদের সকল এডুকেশন সিস্টেম একটা কমন কারিকুলামে আসবে। সেটা ইংলিশ মিডিয়াম হোক, বা মাদ্রাসা হোক। বেসিক একটা রিকোয়ারমেন্ট থাকবে যাতে সবারই একটা ভালো এজুকেশন থাকে। এটা আমরা করেছি। এছাড়া স্কুল লাঞ্চ প্রোগ্রাম নিয়েছি।”

এক শিক্ষার্থী প্রশ্ন করেন, “বর্তমান ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ করতে হলে অ্যগ্রেসিভ হতে হয়। তারেকের মতো সিরিয়াল কিলার যখন যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকেন তখন আমরা পরিচ্ছন্ন রাজনীতি আশা করবো কীভাবে?

জয় বলেন, “রাজনীতি করতে হলে উত্তরাধিকারের প্রয়োজন বা মাঠে নেমে পিটাপিটি করতে হবে এরকম কোন প্রয়োজন নেই। আমার একটা অ্যাডভানটেজ আছে যে আমার নানা জাতির জনক। কিন্তু উনারও গোড়া থেকে শুরু করতে হয়েছে। আপনাদেরও সেই সুযোগ আছে।

“ছাত্রলীগ-যুবলীগের সব যে খারাপ তা নয়, কয়েকজনের জন্য দুর্নামটা হয়। আওয়ামী লীগ একমাত্র সরকার যার আমলে ছাত্রলীগের ৬০০ জনকে জেল দেওয়া হয়েছে গত পাঁচ বছরে।”

এসময় দেশের ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ কি তা শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চান সজীব ওয়াজেদ।

বেশিরভাগই রাজনৈতিক অনৈক্যের কথা বলেন। বিরোধীদলের সঙ্গে সম্পোর্কন্নয়নের ওপরও গুরুত্ব দেন অনেকে।

জয় বলেন, “আওয়ামী লীগ বিরোধীদলে থাকার সময় আমার বোনের বিয়েতে তখনকার প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত করেছিলাম। তিনি এসেছিলেন, আমি তাকে রিসিভ করে নিয়ে যাই, একসঙ্গে বসে ডিনার করি। উনার ছেলের বিয়েতেও আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল।

“কিন্তু ২০০১ সালের পর সব পরিস্থিতি পাল্টে গেল, যখন আমাদের দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হলো ও আমার মায়ের ওপর হামলা করা হলো। ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা হয়েছিল হাওয়া ভবনে। এটা মুফতি হান্নান বলেছেন।”

জয় বলেন, “সন্ত্রাসীর সঙ্গে বসে পরিবর্তন আসবে না। পরিবর্তন আনতে পারেন আপনারাই। ভোটের মাধ্যমে।”

বাংলাদেশ সময়: ০:২৩:১৯   ৬৪৫ বার পঠিত