রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

ইউএনওর উপর হামলার ঘটনায় আসাদুল নয়,রবিউল জড়িত-পুলিশ

Home Page » এক্সক্লুসিভ » ইউএনওর উপর হামলার ঘটনায় আসাদুল নয়,রবিউল জড়িত-পুলিশ
রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০



ফাইল ছবি- ইউএনও ওয়াহিদা খানম     স্বপন চক্রবর্তী, বঙ্গ-নিউজ:ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের বরখাস্তকৃত জনৈক মালি রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেছেন, এই রবিউল ইসলামই ইউএনও ওয়াহিদা খানমের উপর হামলায় জড়িত। কিন্তু র‌্যাব বলেছিল, হামলাটি চুরির ঘটনা;আসাদুল হক এই ঘটনায় জড়িত।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা ওমর আলীর উপর হামলা চালানো হয়। মাথায় হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর আহত ওয়াহিদা এখন ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনাটি নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোলের মধ্যে দুদিন পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেন, চুরি করতে ওই বাড়িতে ঢুকেছিল আসাদুল (৩৫)। তার সহযোগী ছিল নবীরুল ইসলাম (৩৪) ও সান্টু কুমার বিশ্বাস (২৮)।

আলোচিত এই ঘটনার ছায়া তদন্তে নামা র‌্যাবও এটাও বলেছিল যে আসাদুল ‘নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার’ করেছেন।

র‌্যাব বলেছিল, এই আসাদুল হক চুরি করতে গিয়ে ইউএনওর উপর হামলা চালিয়েছিল; এখন পুলিশ বলছে অন্য কথা।র‌্যাব বলেছিল, এই আসাদুল হক চুরি করতে গিয়ে ইউএনওর উপর হামলা চালিয়েছিল; এখন পুলিশ বলছে অন্য কথা।
তবে এই ঘটনা নিছক চুরির ঘটনা হিসেবে মানতে আপত্তি জানায় সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সমিতির নেতারা দাবি করেন, ওয়াহিদার উপর হামলা পরিকল্পিত।

নিজেদের তদন্তের অগ্রগতি তুলে ধরে শনিবার ডিআইজি দেবদাস দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন।

ঘোড়াঘাট উপজেলার সাগরপুর এলাকার আসাদুল এখন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রয়েছেন। ডিবিই এই মামলার তদন্ত করছে।

আসাদুল যুবলীগে যুক্ত ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা আসে।

বরখাস্ত মালি রবিউল ইসলামকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ডিআইজি দেবদাস। রবিউলের বাড়ি বিরল উপজেলার বিজোড়া গ্রামে।

ডিআইজি দেবদাস বলেন, “রবিউলকে গ্রেপ্তারের পর রাতেই তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। সে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।”

রবিউলের উদ্দেশ্য কী ছিল- তা জানতে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হবে বলে জানান রংপুর রেঞ্জ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা দেবদাস।

“এই ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না, কী কারণে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, সে বিষয়গুলো তদন্ত করা হবে।”

শনিবার বিকালে রবিউলকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের অনুমতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা ডিবির ওসি ইমাম জাফর। রবিউলকে কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, সে বিষয়েও ডিআইজি কিছু বলেননি।

তবে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের একজন কর্মচারী জানিয়েছেন, টাকা চুরির অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

হামলার পর ইউএনওর ভাই শেখ ফরিদ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন।

ওই মামলায় র‌্যাবের হাতে্‌ আটক আসাদুল, নবীরুল ও সান্টুকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। চতুর্থজন হিসেবে গ্রেপ্তার হলেন রবিউল।

এই দিকে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিউরোট্রমা বিভাগের প্রধান ও ওয়াহিদার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের প্রধান মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন জানান, ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় যে অপারেশন করা হয়েছিল, সেখানকার অধিকাংশ সেলাইগুলো শনিবার কাটা হয়েছে। অপারেশনের জায়গাগুলো এখন ভালো আছে। ওয়াহিদার শারীরিক অবস্থার উন্নতি ধারা অব্যাহত রয়েছে।

তিনি আরো জানান, ওয়াহিদার অবশ ডান হাতের কনুই পর্যন্ত অংশের উন্নতি হয়েছে। তিনি ডান হাতের কনুই পর্যন্ত তুলতে ও নাড়তে পারছেন, তবে ডান পা এখনো নাড়াতে পারেননি। তার স্বাস্থ্যগত আর কোনো জটিলতা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৫৫:০৪   ৫৩০ বার পঠিত