রবিবার, ২৮ জুলাই ২০১৩
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা জানেন না
Home Page » জাতীয় » বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা জানেন না
বঙ্গ-নিউজ ডটকম:বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ঘোষিত ‘নতুন ধারার সরকার’ নিয়ে অন্ধকারে রয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বেশির ভাগ নেতা। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত খালেদা জিয়া দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি।
স্থায়ী কমিটির আটজন সদস্য এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও দলীয় পদে নেই কিন্তু বিএনপির নীতিনির্ধারণে ভূমিকা রাখেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করে এ কথা জানা গেছে। তবে এসব নেতা বলেছেন, আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সরকারপ্রধান ও দলীয় প্রধান হবেন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি, এটা প্রায় নিশ্চিত।
খালেদা জিয়া ১৮ জুলাই জাতীয় সংসদের এলডি হলে এক ইফতার অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে নতুন ধারার সরকার গঠন করবে।’ এই বক্তব্যের পর গতকাল শনিবার পর্যন্ত খালেদা জিয়া দলের স্থায়ী কমিটি বা জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে কোনো বৈঠক করেননি। তাই ওই বক্তব্যে দলীয় চেয়ারপারসন কী বোঝাতে চেয়েছেন, সে ব্যাপারে নেতারা এখন পর্যন্ত পরিষ্কার কিছু বলতে পারছেন না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সর্বশেষ বৈঠক হয় গত ৮ জুন। কিন্তু ওই বৈঠকে নতুন ধারার সরকার নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহাবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দলীয় প্রধান ও সরকারপ্রধান ভিন্ন ব্যক্তি হতে পারেন। এটা নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা আছে। এর বাইরে সরকার কাঠামোর কোনো পরিবর্তন বা নতুন ধারা নিয়ে দলের ভেতরে আলোচনা হয়নি।
খালেদা জিয়ার ঘোষণার পর এ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নয়জন সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও আ স ম হান্নান শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও শামসুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। দলীয় সভায় আলোচনা না হওয়ায় এসব নেতা ‘নতুন ধারার সরকার’ প্রসঙ্গে কিছু বলতে পারেননি। তবে তাঁদের কেউ কেউ নিজস্ব ভাবনা বা ধারণার কথা প্রথম আলোকে বলেছেন।
এম কে আনোয়ার বলেন, ‘আমি মনে করি, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) হয়তো বলতে চেয়েছেন, ক্ষমতায় গেলে সুশাসন নিশ্চিত করা হবে। মানুষ সুবিচার পাবে, প্রতিহিংসার রাজনীতি বন্ধ করা হবে, প্রশাসনে দলীয়করণ করা হবে না।’
খন্দকার মোশাররফ হোসেনের মতে, ‘বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও জঙ্গি মদদের মতো মিথ্যা দায় চাপানো হয়েছে। কিন্তু বিএনপি এর বিরুদ্ধে। ম্যাডাম হয়তো এ ব্যাপারে দলীয় অবস্থান মানুষের কাছে সুস্পষ্ট করার কথা বলতে চেয়েছেন।’
বিএনপির নীতিনির্ধারকদের কেউ কেউ বলেছেন, একটি বিষয় নিয়ে দলের মধ্যে আলোচনা আছে। সেটা হলো, আগামী দিনে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সরকারপ্রধান ও দলীয় প্রধান হবেন ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি। তাঁরা বলেন, স্বাধীনতার ৪২ বছরে সব সময়ই দেখা গেছে একই ব্যক্তি একই সঙ্গে দলীয় প্রধান ও সরকারপ্রধান হচ্ছেন। সংসদীয় সরকারব্যবস্থা চালু হওয়ায় দলীয় প্রধান, সরকারপ্রধান ও সংসদ নেতা হচ্ছেন একই ব্যক্তি। এ জন্য বলা হয়ে থাকে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা একই ধরনের সরকারব্যবস্থার অন্যান্য দেশের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে ক্ষমতা বেশি।
জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) চান, এমন একটা সরকার গঠন করতে যে সরকার অন্যায় ও দুর্নীতির সঙ্গে আপস করবে না।’ তিনি দাবি করেন, বর্তমান সরকারের দুর্নীতির কারণে, কখনো কখনো দুর্নীতির পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় সাধারণ মানুষকে মূল্য দিতে হয়েছে। এ থেকে বেরিয়ে আসবে বিএনপি।
বাংলাদেশ সময়: ৫:০৬:১৪ ৩৯৭ বার পঠিত