শনিবার, ১৮ জুলাই ২০২০
আজ থেকে শুরু হচ্ছে ‘কবির চোখে বৃষ্টি’ আয়োজনে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন ও আন্তরিক
Home Page » ফিচার » আজ থেকে শুরু হচ্ছে ‘কবির চোখে বৃষ্টি’ আয়োজনে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গন ও আন্তরিকবঙ্গনিউজ প্রতিনিধি কলকাতা ঃ
স্বপন কুমার দাস,
“তোমার জ্যোতিষ্ক তারে
যে পথ দেখায়
সে যে তার অন্তরের পথ,
সে যে চিরস্বচ্ছ,
সহজ বিশ্বাসে সে যে
করে তারে চিরসমুজ্জ্বল…”
রোগশয্যায় মুখে মুখে লাইনগুলো বলে গিয়েছিলেন তিনি। লিখে নিয়েছিলেন কন্যাসমা রানি চন্দ। তখনও কেউ ভাবেননি, আর কখনও তিনি কলম ধরে লিখবেন না। অমৃতলোকে যাত্রার আগে এই তাঁর শেষ কবিতা—-
”তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ আকীর্ণ করি
বিচিত্র ছলনাজালে
হে ছলনাময়ী।”
আশি বছর পূর্ণ হতে চলল, রবিঠাকুর নেই। সত্যিই কি নেই?
জীবন এগিয়ে চলে, আর জীবনের হাসিখেলা থেকে বিদায় নেওয়া প্রিয়জন তারা হয়ে রয়ে যান। ওই কোটি তারার মাঝেই একটি জীবনের ধ্রুবতারা আছে। তাঁর নাম রবীন্দ্রনাথ। অন্তরের পথ দেখানো সেই জ্যোতিষ্কটি তিনিই।
বাদল দিনে যখন প্রথম কদম ফুল ফুটে ওঠে, তখন আকাশ জুড়ে তাঁরই নাম বাজে। শুকনো গাঙে জীবনের বন্যা তাঁরই জয়গান গেয়ে ওঠে, খেলাঘর বাঁধতে লেগে মনে পড়ে তাঁর কথা, আবার বিপদকে ভয় না-করার বাণীটিও তাঁরই দেওয়া। শিশুর দেখা এক পায়ে দাঁড়ানো তালগাছ, বাংলার মাটি-জল-বায়ু-ফল, কালো কাজল মেঘ, কিনু গোয়ালার গলির বাঁশি কিংবা সন্ধ্যাসঙ্গীতটি চিনতে শিখিয়েছেন তিনিই। ছেয়ে রয়েছেন জীবন জুড়ে, প্রতিটি নিঃশ্বাসে।
তাই বাইশে শ্রাবণ তাঁর মহাপ্রয়াণের বার্ষিকী হলেও দিনটা হয়ে উঠুক তাঁর মহাজীবনের উদযাপন। নব প্রজন্মের সঙ্গে তাঁর সেতুবন্ধনের দিন হয়ে উঠুক, যে ভাষার মাথায় তিনি পরালেন সম্ভ্রমের শিরোপা, সেই বাংলাকে বাঁচানোর দিন হয়ে উঠুক। এই তিন অঙ্গীকারেই বাইশে শ্রাবণে বাগুইআটি নৃত্যাঙ্গনের নিবেদন— ‘ভুবনজোড়া আসনখানি’।
ভুবনজোড়াই তো! দুই বাংলার বাঙালিদের প্রযুক্তির সুতোয় বেঁধে নিয়ে গত পঁচিশে বৈশাখ থেকে শুরু করে এক সপ্তাহ চলেছিল আমাদের ‘রবীন্দ্র জয়ন্তী’। এ বার বাইশে শ্রাবণে আরও ব্যাপ্ত সেই পরিধি। নিমতলা মহাশ্মশানে কবির সমাধিতে শ্রদ্ধা অর্পণে যার সূচনা। তারপর জোড়াসাঁকো হয়ে রবীন্দ্রভারতী এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছব আমরা। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শিল্পীরা তো বটেই, অসম, ত্রিপুরা, শিলচর, জামশেদপুর, রাঁচি ও অন্যান্য রবীন্দ্র অনুরাগী ও শিল্পীরাও ‘আকাশ বেয়ে’ আজকের দিনে এসেছেন আমাদের অঙ্গনে। দেশভাগ হলেও রবীন্দ্রনাথ তো ভাগ হননি। তাই সীমান্ত পেরিয়ে আবার হাত ধরেছেন বাংলাদেশের শিল্পীরা।১৷ বর্ণালী সরকার ২৷ বর্ণালী বিশ্বাস শান্তা ৩৷ শিউলি রায় ৪৷ শামসুল হুদা ৫৷ বুলবুল মহলানবীশ এবংমোহসেনা হোসেন ইলোরা, লেখক, গল্পকার, কবি, বাচিক শিল্পী জনাব মুন্না ফারুক, সুরকার, সংগীত পরিচালক, সবাই বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশন এর নিয়মিত শিল্পী। অতলান্তিকের ও-পার থেকে ব্রিটেন ও আমেরিকার শিল্পীরাও অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁদের ডালি নিয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৫:০২ ৭২৯ বার পঠিত #কলকাতা #নৃত্যাঙ্গন #বাগুইআটি