সোমবার, ১৩ জুলাই ২০২০

“আমরা কি আদৌ ধর্ষণ মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে পারবো?”

Home Page » ফিচার » “আমরা কি আদৌ ধর্ষণ মুক্ত বাংলাদেশ দেখতে পারবো?”
সোমবার, ১৩ জুলাই ২০২০



ধর্ষণ

ধর্ষণ’ এক ধরনের যৌন আক্রমণ। সাধারণত, একজন ব্যক্তির অনুমতি ব্যতিরেকে তার সঙ্গে যৌনসঙ্গম বা অন্য কোনো ধরনের যৌন অনুপ্রবেশ ঘটানোকে ধর্ষণ বলা হয়। ধর্ষণ শারীরিক বলপ্রয়োগ, অন্যভাবে চাপ প্রদান কিংবা কর্তৃত্বের অপব্যবহারের মাধ্যমে সংঘটিত হতে পারে। অনুমতি প্রদানে অক্ষম (যেমন- কোনো অজ্ঞান, বিকলাঙ্গ, মানসিক প্রতিবন্ধী কিংবা অপ্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি) এরকম কোনো ব্যক্তির সঙ্গে যৌনমিলনে লিপ্ত হওয়াও ধর্ষণের আওতাভুক্ত। ধর্ষণ শব্দটির প্রতিশব্দ হিসেবে কখনো কখনো ‘যৌন আক্রমণ’ শব্দগুচ্ছটিও ব্যবহৃত হয়।
[সূত্রঃ উইকিপিডিয়া ]

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ধর্ষণের মত নৃশংস ঘটনা প্রত্যাহ লক্ষণীয় হলেও আমার আলোচ্য বিষয় আজ বাংলাদেশ।

ধর্ষণ নামক বিকৃত যৌনাচারের মত ঘটনা বাংলাদেশে অহরহ ঘটেই চলছে।টেলিভিশনের পর্দায় কিংবা পত্রিকায় চোখ রাখলেই আমরা প্রায়ই ধর্ষণের সংবাদ দেখতে পাই।সমাজের মানুষরূপী জানোয়ার,যারা ধর্ষণ নামক বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত,তারা কতটা নৃশংস ভাবে একজন নারীর উপর তাদের যৌন লালসা চরিতার্থ করে তা শুনলে একজন স্বাভাবিক মানুষের গা শিহরিত না হয়ে পারে না।অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় আমাদের দেশে স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েরাই বেশি ধর্ষণের শিকার হয়।তবে বর্তমানে অনেক বিবাহিত মেয়ে, এমন কি শিশুরাও এই ধর্ষণের হাত থেকে রেহাই পায় না।গত কয়েক বছর ধরে এরকম খবরও শোনা যাচ্ছে শিশুর যৌনাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে বর্ধিত করে ঐসব নরপশু তাদের যৌনাঙ্ক্ষা চরিতার্থ করে।এমনো ঘটনা ঘটেছে যে নরপশুরা একটা মেয়েকে ধর্ষণ করে গলায় রশি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রেখেছে,ছুড়ি দিয়ে কুপিয়ে মেরেছে কখনো বা গলা টিপে হত্যা করে নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে।মেয়েরা এই রকম নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার যে শুধু বাইরে হচ্ছে এমন না,অনেকক্ষেত্রে দেখা গেছে মেয়রা তাদের নিজ ঘরেও এমন ঘটনার শিকার হয়েছে।এখন প্রশ্ন যারা এই নৃশংস কর্মকান্ড করে,তারা আসলে কারা,আর কি কারণেই বা তারা এধরণের কাজ করছে??

আমার দৃষ্টিতে প্রথমত যারা বিকৃত মস্তিষ্কের অধিকারী,যারা পরিবার থেকে শেখেনি কিভাবে মেয়দের শ্রদ্ধা করতে হয়,কেন মেয়েদের সম্মান করা জরুরী ইত্যাদি।

কিছু মানুষ আছে যারা মেয়েদের শুধু পণ্য হিসেবে মনে করে।তাদের মন মানসিকতা এরকম যে মেয়েদের জন্মই পুরুষদের ভোগের জন্য,তারা এই ধরনের কাজে লিপ্ত হয়।

তৃতীয়ত আমার কাছে যেটা মনে হয় সেটা হলো ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধের অভাব।কেউ ছোটবেলা থেকেই যদি ধর্মীয় মূল্যবোধের আদর্শে বেড়ে তাহলে সে অবশ্যই অস্বাভাবিক যৌন চিন্তায় মত্ত থাকবে না।কিন্তু যাদের এগুলার অভাব থাকে, তাদের মধ্যে এই কাজে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আবার দেখা যায় অনেকে পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে এই ধরনের কাজ করে থাকে।তাছাড়া প্রকৃত শিক্ষার অভাব সহ আরো বিভিন্ন কারণ রয়েছে।

অনেক ধর্ষক আছে যারা সমাজের লেবাসধারী,যারা ক্ষমতার দাপটে ভদ্র পোশাক পরিধান করে এই ধরনের কাজ করে।
এমন কি মাদ্রাসার মত পবিত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক,আলেমেরাও এই ধরনের কাজ করে থাকে।আসলে আলেমেরা ধর্ষণ করে না,তারা ধর্ষণ করার জন্য আলেম সাজে।

যারা ধর্ষণের শিকার হয়,সাধারণত সমাজ তাদের স্বাভাবিক ভাবে গ্রহন করে না,এটা সমাজের একটা বড় অন্য বলে আমি মনে করি।
সমাজ ভালো ভাবে গ্রহন না করায় তাদের কোন ছেলে বিয়েও করতে চায়।নানা চাপ সামলাতে না পেরে অনেক মেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

কিন্তু সমাজ থেকে এ কর্মকান্ড দূর করার উপায় কি??
আমার মনে ধর্ষক কে তাৎক্ষণিক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে,যেটা দেখে অন্যান্য ধর্ষক বা ধর্ষণ করার মনোভাব পোষণকারীও ভয় পায়।
তাছাড়া মেয়েদের কে সম্মান করতে শিখতে হবে।আমার মনে কোনো ধর্ম গ্রন্থেই মেয়েদেরকে অসম্মান করার কথা নেই।পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’আলা নারীর অধিকার,মর্যাদা,সনাজে নারীর অবস্থান ইত্যাদি নিয়ে সূরা আন নিসা নামক একটি সূরাই নাযিল করেছেন।
তাছাড়া মহানবী হযরত মুহাম্মদ সঃ নারীকে সর্বদাই সর্বোচ্চ সম্মানে দেখেছেন।তাই আমাদেরও উচিৎ মেয়েদের সম্মানের চোখে দেখা।

সর্বোপরি,মেয়েদের সমাজের একজন মানুষ হিসেবে দেখতে হবে।তাহলেই হয়তো ধর্ষণ নামক নৃশংস কর্মকান্ড বাংলাদেশ থেকে কিছুটা দূর হবে,যার প্রেক্ষিতে আমরা একটা সোনার বাংলাদেশ উপহার পাবো।

লেখকঃ মোঃশাহ আলম, শিক্ষার্থী,দর্শন বিভাগ,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

মোঃশাহ আলম

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৩৪:০৬   ৭৪০ বার পঠিত   #  #