সোমবার, ৬ জুলাই ২০২০
চট্টগ্রাম সিটি: মেয়াদান্তে নির্বাচন না বিকল্প ব্যবস্থা
Home Page » জাতীয় » চট্টগ্রাম সিটি: মেয়াদান্তে নির্বাচন না বিকল্প ব্যবস্থাস্বপন চক্রবর্তী,বঙ্গ-নিউজ:চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ৫ অগাস্ট। আ জ ম নাছির উদ্দিন এখনো মেয়র হিসাবে আছেন। সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় করোনাভাইরাস মহামারীর এই সময়েও বগুড়া ও যশোর উপ নির্বাচনের জন্য ১৪ জুলাই দিন ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের কোনো তারিখ তারা নির্ধারণ করেনি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়াদ ফুরিয়ে এলেও করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সেখানে ভোটের আয়োজনের তাড়াহুড়ো নেই স্থানীয় সরকার বিভাগ বা নির্বাচন কমিশনের মধ্যে, বরং প্রশাসক নিয়োগের সম্ভাবনার বিষয়টি রয়েছে তাদের ভাবনায়।
কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর জানান, “সংসদের দুটি উপ নির্বাচনের বিষয়ে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় ১৮০ দিনের মধ্যে করতে হয়েছে। তাই বগুড়া ও যশোর উপ নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
“চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের বিষয়টি স্থানীয় সরকার বিভাগের ওপর। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নেবে।”
আর নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন করতে হবে ৫ অগাস্টের মধ্যে। সুতরাং এ সময়ের মধ্যে কমিশনে বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।
“আমরা যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনটি করতে না পারি, তখন দেখা যাবে কী করণীয়। সেক্ষেত্রে প্রশাসক নিয়োগ হবে কিংবা কি পদক্ষেপ নেওয়ার বিধান আছে- বিষয়টি আমাদেরও নয়; স্থানীয় সরকার বিভাগের।”
তিনি বলেন, “অনন্তকাল নির্বাচন হবে না তা তো নয়। অনেক কিছুই স্বাভাবিক হয়ে আসছে। নির্বাচন নিয়েও ভাবতে হবে। সামনে ঈদ উল আজহা রয়েছে; করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি কেমন তা বিবেচনায় নিতে হবে। সব মিলিয়ে কমিশন সভা হলে চট্টগ্রাম নিয়েও সিদ্ধান্তে আসতে হবে।”
স্থানীয় সরকার নির্বাচন (সিটি করপোরেশন) আইনে বলা হয়েছে, করপোরেশনের প্রথম সভার তারিখ থেকে পাঁচ বছর হবে এর মেয়াদ। আর করপোরেশনের মেয়াদ শেষ হওয়োর আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে।
আ জ ম নাছির চট্টগ্রামের মেয়রের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০১৫ সালে ৬ অগাস্ট। মেয়াদপূর্তির ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে ২৯ মার্চ ভোটের তারিখ রেখে তফসিলও দিয়েছিল ইসি। কিন্তু মহামারীর কারণে ভোটের সপ্তাহ খানেক আগে ২১ মার্চ তা স্থগিত করা হয়।
ভোট করতে স্থানীয় সরকার বিভাগ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে কি না জানতে চাইলে জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, মেয়াদ শেষ হলে তারপর করণীয় ঠিক হবে। নির্বাচন সম্ভব না হলে নির্বাচন কমিশনের মতামত নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
আইনে বলা হয়েছে, নূতন সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করা হলে অথবা কোনো সিটি করপোরেশন বিভক্ত করা হলে অথবা কোনো সিটি করপোরেশনের মেয়াদোত্তীর্ণ হলে সরকার নতুন সিটি করপোরেশন গঠিত না হওয়া পর্যন্ত একজন উপযুক্ত ব্যক্তি বা কোনো কর্মকর্তাকে প্রশাসক নিয়োগ দিতে পারবে।
প্রশাসকের কাজে সহায়তার জন্য সরকার প্রয়োজন মনে করলে একটি কমিটিও করে দিতে পারবে। প্রশাসক এবং সেই কমিটির সদস্যরা মেয়র ও কাউন্সিলরের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।
তবে মেয়াদোত্তীর্ণ সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে ১৮০ দিনের বেশি দায়িত্বে থাকতে পারিবেন না প্রশাসক।
জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন বলেন, “৫ অগাস্টের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন করা সম্ভব না হলে আমরা নির্বাচন কমিশনের মতামত নেব। তারপর সব কিছু পর্যালোচনা করে প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে পদক্ষেপ নেব।”
মহামারীর মধ্যে নির্বাচন কমিশন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রেখেছে। কিন্তু এরমধ্যেও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মৃত্যুতে অনেক পদ শূন্য হচ্ছে। আবার স্থানীয় সরকারও অনিয়মের অভিযোগে অনেককে বরখাস্ত করছে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সরকারি ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের কারণে এখন পর্যন্ত ১০৩ জনকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
তিনি বলেন, এই জনপ্রতিনিধিরা কারণ দর্শাও নোটিসের সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারলে যথাসময়ে পদগুলো শূন্য ঘোষণা করা হবে।
“তারপর সেখানে নির্বাচনের ব্যবস্থা নিতে ইসিকে আমরা অনুরোধ করব। যথাসময়ে এ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন এমন কয়েকজন জনপ্রতিনিধিও ইতোমধ্যে মারা গেছেন। সব বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সভায় আগামীতে আলোচনা হবে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ৯:১২:০৩ ৫৭৪ বার পঠিত # #করোনা #চট্টগ্রাম #নির্বাচন #প্রশাসক #সিটি কর্পোরেশন