সোমবার, ২৯ জুন ২০২০

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরারব একজন সপ্রাবি দপ্তরির খোলা চিঠি!

Home Page » জাতীয় » প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরারব একজন সপ্রাবি দপ্তরির খোলা চিঠি!
সোমবার, ২৯ জুন ২০২০



 ফাইল ছবি

বরাবর,

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
বিষয়ঃ-চাকরী জাতীয়করণ প্রসঙ্গে।

আসসালামু আলাইকুম! শ্রদ্ধেয় আমার মমতাময়ী মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বুকভরা কষ্ট নিয়ে আজ আমি আপনার কাছে একটি খোলা চিঠি লিখতে বসলাম। প্রিয় মমতাময়ী মা, সর্বপ্রথম শ্রদ্ধা জানাই বাংলার নায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, আমি শ্রদ্ধার সাথে স্বরন করছি শিশু রাসেলসহ আপনার সপরিবারকে ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ সালে কুখ্যাত বেইমানদের হাতে যারা শহীদ হয়েছিল তাদেরকে, আমি শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি জাতীয় চার নেতা কে, আমি শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যাদের আত্মত্যাগের মহিমায় এই দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে রক্ষা করে নিজের জীবন বাজি রেখে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে করেছেন একটি স্বাধীন লাল সবুজের সোনার বাংলাদেশ, তাদেরকে!

প্রিয় মমতাময়ী মা,
আমি জানি, এই চতুর্থ শ্রেণির চাকরিজীবীদের অধিকার আদায়ের জন্য সর্বপ্রথম সংগ্রাম করেছিলেন আপনার বাবা আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ।
আপনি নবম জাতীয় নির্বাচনী ইশতেহারে বলেছিলেন, নির্বাচনে ক্ষমতায় আসলে প্রত্যেক ঘরে ঘরে চাকরী দিবেন।
তারই ধারাবাহিকতায় এই দপ্তরী-কাম-প্রহরী পদটি ২য় বার ক্ষমতায় আসার পর আপনি নিজেই সৃষ্টি করেছেন।

প্রিয় মমতাময়ী মা,
আমরা প্রায় ৩৭০০০ হাজার দপ্তরী আপনার কাছে চির কৃতজ্ঞ।
আমরা ৩৭০০০ হাজার সহকর্মী আপনার দেওয়া চাকরী নিঃস্বার্থ ভাবে করে যাচ্ছি।
কিন্তু আজ সব জেনে ও পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারছিনা।

প্রিয় মমতাময়ী মা,
আপনার কাছে আমার আকুল আবেদন, আমরা দপ্তরী পরিবার টি খুবই অসহায় অবস্থায় আছি। আমাদের দিকে আপনি ছাড়া আর কেউ তাকাবে না।

প্রিয় মমতাময়ী মা,
আপনার সৃষ্টি করা চাকরীটি দয়া করে জাতীয়করণ করে নিন।আর আমাদের দিকে একটু তাকান।

আপনি বাংলার মাতা, আপনি বাংলার জননী, আপনি কওমি জননী,আপনি এই দেশে প্রায় ১৫ লক্ষ রোহিঙ্গা কে বাসস্থান করে দিয়ে স্বনামধন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সারা বিশ্ববাসীর কাছে মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর সুসম্মান অর্জন করেছেন। আপনার পরিচালনায় দেশের জনগণ অনেক সুখে আছে ও অনেক কিছুই পেতে যাচ্ছে এবং আপনি ক্ষমতায় থাকলে দেশের জনগণ
আপনার কাছে আরো অনেক কিছু পাবে বলে আশা করে।

প্রিয় মমতাময়ী মা,
দেশের এমন কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী দেখাতে পারবেন না, যারা জীবন বাজি রেখে আজও দেশের সেবা করে যাচ্ছে। তারা শুধু নির্দিষ্ট সময়ে কাজ করে যাচ্ছে , আর বেতন নিচ্ছে।তাই আজ আমার দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আমরা বিগত ৭ বছর যাবত আপনার বাবার সপ্নের গড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয়করন ছাড়াই ২৪ ঘণ্টা সরকারি চাকরি করে যাচ্ছি, আর আমরা এই ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করতে গিয়ে বিগত ৭ বছরের ভিতরে আমাদের অনেক অসহায় দপ্তরী সহকর্মী ভাইদেরকে হারিয়েছি, যাদের সন্ত্রাসীদের হাতে জীবন দিতে হয়েছে ও এলাকার প্রভাবশালীদের হামলায় এখনো বার বার শিকার হচ্ছেন।

প্রিয় মমতাময়ী মা,
আমাদের এই চাকরিটা জাতীয়করণ করার লক্ষ্যে বহুদিন ধরে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতি কেন্দ্রিয় কমিটির নেতৃবৃন্দ সহ আমরা ৩৭০০০ হাজার সহকর্মী সাংবাদিক সম্মেলনসহ বহু রকম আন্দোলন করে যাচ্ছি এবং হাই কোর্টের রায়ও আসলো। আমাদের পক্ষে কোন কিছুই কায্য করা হলো না এবং আমাদের চাকরিটা জাতীয়করণের জন্য মহান সংসদে ২ জন সংসদ নেতা আমাদের চাকরিটা জাতীয়করণ ও ৮ ঘণ্টা ডিউটি উপলক্ষে উত্থাপন করেছেন কিন্তুু আজ পর্যন্ত কোন কিছুই হলোনা।

এজন্যই আমি বলি
প্রিয় মমতাময়ী মা! আপনি ছাড়া আমাদের দুঃখ কষ্ট দেখার কেউ নেই।

কিন্তুু দুঃখজনক হলেও সত্য, একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী কাম প্রহরীরা নিজের জীবন বাজি রেখে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে আপনার বাবার সপ্নের গড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোর সেবা করে যাচ্ছি।
তাই আমি আপনার কাছে আমাদের সকল সহকর্মী ভাইদের কিছু দুঃখের কথা গুলো উঠাইয়া ধরলাম। এই স্বাধীন বাংলাদেশে কেন আমরা পরাধীনতা নিয়ে চাকরি করব?

প্রিয় মমতাময়ী মা,
আপনার কাছে আমার আকুল আবেদন আপনার বাবার সপ্নের গড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরী করা অসহায় দপ্তরী সেবকদেরকে একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই দিন। আমাদেরকে একটু সহযোগিতা করুন। একটু সহানুভূতি দিন,শুধুই আপনিই পারেন আমাদেরকে একটু সুখের পরশ দিতে, আর আমরা আপনার সুখের পরশ পেলে অনেক আনন্দিত হব।

আর আপনি দেখবেন সারা বাংলাদেশের আপনার বাবার সপ্নের গড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো আরো অনেক উজ্জ্বল হয়ে যাবে।

প্রিয় মমতাময়ী মা,
আপনার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ আরো এগিয়ে যাবে আমাদের এই সোনার বাংলাদেশ।

আপনার অক্লান্ত পরিশ্রমের প্রচেষ্টায় হতে যাচ্ছে দূনীর্তিমুক্ত বাংলাদেশ।একদিন হয়ে যাবে আপনার বাবার ও আমাদের জাতির জনকের সপ্ন দেখার সোনার বাংলাদেশ।
পরিশেষে আপনার দীর্ঘায়ু কামনা করি, মহান সৃষ্টিকর্তা যেন আপনাকেসহ দেশ ও পৃথিবীর সকল কে এই মহামারী ভাইরাসসহ সব রকম বিপদ-আপদ হইতে রক্ষা করেন।
ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন,

,,,,,,,,,,,,,ইতি,,,,,,,,,
আপনার বাবার সপ্নদেখার ও আপনার গড়ার সোনার বাংলার ছেলে,,,
বিনীত:
সুমন সরকার
বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, নবীগঞ্জ উপজেলা কমিটি।

সুমন সরকার

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৪:৫৩   ২৩৮৪ বার পঠিত   #  #  #