বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
উত্তরার উন্নয়নে আনন্দ গ্রুপের নিরলস চেষ্টা
Home Page » এক্সক্লুসিভ » উত্তরার উন্নয়নে আনন্দ গ্রুপের নিরলস চেষ্টাবঙ্গ-নিউজ:”আমরা যদি নিজের এলাকাকেই ভাল রাখতে না পারি, তাহলে এত মানবতার কথা বলে কী লাভ?” কথাগুলো বলেছিলেন “আনন্দ গ্রুপের” একজন প্রতিষ্ঠাতা জনি চৌধুরি।
মানবকল্যাণের ব্রত নিয়ে উত্তরাস্থ কিছু ছাত্র ছাত্রীর উদ্যম ও স্বেচ্ছাশ্রমে ২০১৭ সালের ২৪ শে জুন থেকে পথচলা ফেইসবুক সংগঠন আনন্দ গ্রুপের। যারা প্রত্যেক ২ মাস অন্তর অন্তর ১টি করে ইভেন্ট পরিচলানা করে আসছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর অসহায় মানুষের জন্য।
সদস্যদের সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে পরিচালিত হয় এই সংগঠনের কার্যক্রম গুলো। ইতিমধ্যে একে একে ১৬ টি সামাজিক উদ্যোগ সফল ভাবে সম্পন্ন করেছে তারা।
প্রথমেই বলতে হয়- উত্তরা ৭নং সেক্টরে সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের জন্য একটি ভ্রাম্যমাণ একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে আনন্দ গ্রুপ, যেখানে সাপ্তাহে ৭দিন শিশুগুলোকে সুস্থ পাঠদান করা হয় এবং ১ দিন তাদের খাবার প্রদান করাও হয়।(আনন্দ পাঠশালায়)।
তাদের প্রথম ইভেন্টটি প্রাথমিক ভাবে শুরু হয়েছিল ঢাকা এয়ারপোর্ট রেল স্টেশনের কিছু পথশিশুদের নিয়ে। প্রায় ৩৫ জন শিশুর মাঝে বস্ত্র বিতরণ করা ছিল তাদের প্রথম উদ্যোগ।
.
★২য় ইভেন্টটি করা হয় ঢাকা উত্তরখানের জিয়াবাগ সংলগ্ন আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের নিয়ে, যেখানে প্রায় ৪০ জন প্রবীণ মাকে বিনামূল্যে খাবার সরবরাহ সহ যাবতীয় ঔষধ সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
.
★৩য় ইভেন্টটি হয়েছিল উত্তরায় ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় র্যালী, যেখানে র্যালীর পাশাপাশি পথনৃত্যের মাধ্যমে অভিনয় করে দেখানো হয় কিভাবে একজন সন্ত্রাসী ও ইভটিজার এর হাত থেকে নারীদের রক্ষা পেতে হয়।
.
★৪র্থ ইভেন্টটি করা হয় ঢাকা উত্তরায় গোয়ালটেক বস্তির কিছু অসহায় মানুষদের নিয়ে, প্রচন্ড শীতের কারনে নারী পুরুষ ও শিশুদের মাঝে প্রায় ২০০ মানুষের মাঝে বিতরণ করা হয়েছিলো শীতবস্ত্র।
.
★৫ম ইভেন্টটি করা হয়েছিল উত্তরখানের তেরমুখ ব্রিজ সংলগ্ন কিছু এতিম শিশুদের সাথে নিয়ে আনন্দ আয়োজন সহ বার্ষিক বনভোজন খেলাধুলা ও পুরুষ্কার বিতরণ।
.
★৬ষ্ঠ ইভেন্টটি একই সাথে করা হয় ২টি স্থানে উত্তরা আজমপুর ও উত্তরা হাউজবিল্ডিং এ যেখানে পবিত্র রমজান উপলক্ষে প্রায় ২০০ সুবিধা বঞ্চিত রিকশাওয়ালা ভাইদের ইফতার করানো হয়।
.
★৭ম ইভেন্টটি করা হয় উত্তরা আজমপুর কাঁচাবাজার সংলগ্ন “ঝরাফুল” বিদ্যানিকেতন এর সুবিধা বঞ্চিত পথশিশুদের স্কুলে, যেখানে প্রায় ৪০ জন শিশুদের মাঝে বিনামূল্যে ব্যাগ,ও শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
.
★৮ম ইভেন্টটি করা হয় জিয়াবাগ এতিমখানায়, যেখানে প্রায় ৪০ জন এতিম শিশুদের নিয়ে আয়োজন করা হয় শুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াত ও ইসলামীক সংগীত প্রতিযোগিতা, এবং সকলের মাঝে পুরুষ্কার বিতরণসহ সকল এতিম শিশুদের দেওয়া হয় নতুন পাঞ্জাবি।
.
★৯ম ইভেন্টটি করা হয় উত্তরা ৪নং সেক্টরে, কনকনে শীতের সময় প্রায় ৫০ জন রিকশাওয়ালা ভাইদের মাঝে বিতরণ করা হয় শীতবস্ত্র।
পরবর্তী ইভেন্ট ছিল উত্তরা গোয়ালটেক বস্তিতে, যেখানে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকের উপস্থিতিতে প্রায় ১০০ অসহায় নারী পুরুষ ও শিশুদের বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান ও যাবতীয় ঔষধ সামগ্রী প্রদান করা হয়।
এছাড়াও এয়ারপোর্ট এলাকার প্রায় ৪০ জন পথশিশুদের মাঝে ঈদবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
.
★১৩তম ইভেন্টটি করা হয়েছিল দেশে যখন প্রাকৃতিক বন্যা কবলিত দূর্যোগ সৃষ্টি হয় ঠিক তখন কিছু সংগঠনের সহযোগিতায় জামালপুরের ইসলামপুর গ্রামের সুবিধা বঞ্চিত চর এলাকার প্রায় ২০০ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে ত্রান বিতরণ করা হয়।
এছাড়া আনন্দ পাঠশালার প্রায় ৪০ জন শিশুর ভিক্ষাবৃত্তি দূর করতে কর্মসংস্থানের জন্য নগদ অর্থ প্রদান করা তাদের উল্লেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম।
যান্ত্রিক উৎকর্ষতার এই যুগে মানুষ যেখানে ক্রমেই আত্মকেন্দ্রিকতার দিকে ঝু্ঁকছে সেখানে অন্যের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করে যাওয়া উদ্যমি এই মানুষগুলো সত্যিকারের প্রশংসার দাবিদার। শুরু করা হয়ত সহজ কিন্তু সেই স্বেচ্ছাশ্রমের কাজগুলো ধরে রাখা হয়ত কঠিন যেই কঠিন কাজগুলোই দিনের পর দিন করে যাচ্ছে তারা। এমন উদ্যমি তরুণ তরুণীর হাত ধরেই হয়ত একদিন আমার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।
স্বেচ্ছাশ্রমের এই প্লাটফর্ম আনন্দ গ্রুপের পরিচালনায় কর্তব্যরত আছেন ৬জন পরিশ্রমী ছেলে মেয়ে যাদের কথা না উল্লেখ করলেই নয়ঃ
১/মেহেদী আলম কাব্য।
২/ জনি চৌধুরী।
৩/আর.জে সুমন খান।
৪/সোহাগ হাসান।
৫/মশিউর আলম।
৬/সামিয়া ইসলাম সহ আরো অনেক কর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষী।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:৪৬:৪৫ ১২৮৪ বার পঠিত