মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৯
ভাঙ্গার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্ণীতির অভিযোগ
Home Page » প্রথমপাতা » ভাঙ্গার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্ণীতির অভিযোগব্যুরো অফিস, ফরিদপুরঃ
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকতাদিরুল আহমেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ ও দুর্ণীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২০/১০/২০১৯ ইং তারিখে সরকারী সম্পদ ক্ষতিসাধন, ক্ষমতার অপব্যবহার, ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্ণীতি করে নিজে লাভবান, জনগণকে হয়রানি ও দুঃশাসন করেছে বলে ‘দুর্ণীতি দমন কমিশণ’ এর চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের অনুলিপি জাতীয় প্রেসক্লাব, ফরিদপুর প্রেসক্লাব, ফরিদপুর জেলা প্রশাসক, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও অনলাইন প্রেসক্লাব বরাবর প্রেরণ করেছে অভিযোগকারী পৌরসদরের কাপুড়িয়া সদরদী গ্রামের শহিদ মিয়া। উক্ত সূত্রের আলোকে জানা যায়, উপজেলা পরিষদের মধ্যে চলমান ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্প, উপজেলা পরিষদের মেরামত কাজ সরকারী নিয়মানুসারে টেন্ডার বা কোটেশন না করে অফিস সহকারী জাকির হোসেন ও পিয়ন জাহাঙ্গীর হোসেনের মাধ্যমে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে করিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি ভাঙ্গা সরকারী খাদ্য গোডাউনে ধান, গম মজুদ করণের ক্ষেত্রে প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান, গম সংগ্রহ না করে ভিন্ন পথে মজুদ করার সুযোগ করে দিয়েছে মর্মে গত ৩০/০৮/২০১৯ ইং তারিখে উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সাইফুর রহমান মিরন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা খাদ্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেছে, যার তদন্তকার্য বর্তমানে চলমান রয়েছে। তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আবাসিক কোয়ার্টারের সামনে বেশ কয়েকটি সরকারী গাছ কেটে সেখানে অফিসার্স ক্লাব, গাড়ীর গ্যারেজ ও গাড়ী ধোঁয়ার র্যাম তৈরি করছেন। তিনি তার অফিস সহকারী ও পিয়নের মাধ্যমে ভাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী কুমার নদের বিভিন্ন স্থানে গোপনে বালু ব্যবসায়ীদের অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলনের অনুমতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। সম্প্রতি বালু উত্তোলনের সংবাদ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। তিনি সরকারী গাড়ী (ফরিদপুর ঘ ১১-০০২৪) ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে গত ০১/০৫/২০১৯ ইং তারিখে তার নিজ কর্মস্থল ফরিদপুর জেলার বাহিরে তার নিজ গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহের তারাকান্দায় ও ০২/০৫/২০১৯ ইং তারিখে শ্বশুর বাড়ী ঢাকার কল্যানপুরে যাতায়াত করেন। এছাড়াও তিনি সরকারী বরাদ্দ প্রাপ্ত কালো জিপ গাড়ী (ঢাকা অ ১৪৮) ব্যবহার করে ১৭/০৮/২০১৯ ইং তারিখে ময়মনসিংহ ফুলপুর হালুয়া ঘাট বর্ডার ও তারাকান্দায় বেড়াতে যান। সূত্রমতে আরও জানাযায় অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি তার নিজ বাড়িতে তিন তলা একটি বিল্ডিং তৈরি করছেন। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ও গত মে মাসে ঘটে যাওয়া ‘ফণি’র সময় সরকারী নির্দেশ মোতাবেক নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত না থেকে সরকারী নির্দেশ উপেক্ষা করে সরকারী গাড়ী নিয়ে নিজ বাড়ীতে অবস্থান করে ছুটি কাটিয়েছেন। এ দূর্যোগপূর্ণ সময়ে তার সফর সঙ্গী অফিস সহকারী ও পিয়নের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ভ্রমনের হাস্যোজ্জ্বল ছবি বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হয়েছে। গত ২৮/১০/২০১৯ ইং তারিখে ইলিশ প্রজণনের মৌসুমে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ সময়ে তিনি উপজেলার কালামৃধা ও নাসিরাবাদে অভিযান চালিয়ে এলাকার গরীব জেলেদের কাছ থেকে ৫-৬ মণ মাছ জব্দ করেণ এবং জব্দকৃত মাছ গোপনে তিনি নিজে এবং অফিস স্টাফদের মধ্যে ভাগ করে নেন। তিনি তার অধীনস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারী সহ উপজেলায় তার দপ্তরে বিভিন্ন কাজের জন্য যাওয়া সাধারণ জনগণের সাথে উত্তেজিত, কর্কশ ভাষা ও অসদাচরণ করেন। তার রূঢ় ও খারাপ আচরণে সংশ্লিষ্ট জনগণ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এ ব্যপারে এলাকার সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সাধারণ জনগণ সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবী জানিয়েছেন। এ ব্যপারে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, এখন পর্যন্ত অভিযোগের অনুলিপি আমার হাতে আসেনি। তবে অভিযোগের কপি হাতে পেলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। অভিযোগের বিষয়ে ১৮/১১/২০১৯ ইং সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুকতাদিরুল আহমেদের সাথে কথা হলে ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকারী নির্দেশনার বাহিরে আমি কোন কাজ করিনি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। বিভিন্ন মিডিয়ায় ইতি মধ্যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে মর্মে ইউএনও’কে জানালে তিনি বলেন, আমি কোন সংবাদ দেখিনি। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২:৪৯:৫৮ ৮৬১ বার পঠিত #উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা #ফরিদপুর #ভাঙ্গা