সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০১৯

আম্র-পালী আমের নামকরণের ইতিহাস -১০( বিম্বিসার ও আম্রপালীর প্রেম –কাহিনী-৩) :জালাল উদদীন মাহমুদ

Home Page » বিনোদন » আম্র-পালী আমের নামকরণের ইতিহাস -১০( বিম্বিসার ও আম্রপালীর প্রেম –কাহিনী-৩) :জালাল উদদীন মাহমুদ
সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০১৯




জালাল উদদীন মাহমুদ সম্রাট বিম্বিসারকে রাজ্য রক্ষা বা রাজ্যবিস্তারের প্রয়োজনে অনেক যুদ্ধ করতে হয়েছিল। এমনি এক যুদ্ধে তিনি জয়লাভ করেছে প্রাসাদে ফিরলেন। রাতে প্রাসাদের নাচ-গানের আসর জলসা শুরু হলো। আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুন্দরী সুন্দরী রাজ-নর্তকীদের হাজির করা হয়েছে । চারদিকে আনন্দ- উল্লাস , চারদিকে বাদ্য-বাজনা , চারদিকে নাচ- গান । রাজা বিম্বিসার তার মন্ত্রী ও সভাসদদের নিয়ে তাদের নৃত্যগীত উপভোগ করছেন ।

একজন নর্তকীর নাচে মুগ্ধ হয়ে তিনি তার পাশে বসা মন্ত্রী গোপাল কে বললেন – এ নর্তকী সারা পৃথিবীর মধ্যে সেরা।

গোপাল মৃদুস্বরে বলে উঠলো, ‘মহারাজ ! এইমাত্র যে নাচ আপনি দেখলেন তা বৈশালীর রাজনর্তকী আম্র-পালীর নখেরও যোগ্য না ।

মহারাজ গোপালকে খুব বিশ্বাস করতেন। তাছাড়া গোপাল বৈশালীরই এক রাজার পুত্র ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নিজ রাজ্য ত্যাগ করে রাজা বিম্বিসারের দরবারে আসলে বিম্বিসার তাঁকে মন্ত্রীত্ব প্রদান করেন । তাঁর মেধা ও সততায় রাজা বিম্বিসার বরাবরই মুগ্ধ ছিলেন । গোপালকে অবিশ্বাস করার কোন কারনই ছিল না । রাজা অবশ্য সেদিন বৈশালীর রাজনর্তকী আম্র-পালী সম্পর্কে মন্ত্রী গোপালকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করলেন না। কিন্তু আম্র-পালীর চিন্তা মন থেকে মুছে ফেলতেও পারলেন না। কয়েকদিন পরের ঘটনা। মহারাজ বিম্বিসার গোপালের কাছে আম্র-পালীর কথাটা তুললেন‘গোপাল !

আমি ভাবছি সামনের কোন এক উৎসবে তোমাদের বৈশালীর সেই রাজনর্তকীকে নিয়ে আসবো ।’

‘তাতো কোন ভাবেই সম্ভব নয় মহারাজ ।’

‘কেন সম্ভব নয় ?’

‘বৈশালী ছেড়ে অন্য কোথাও যাওয়া আম্রপালীর জন্য ,শুধু নিষেধই নয় একধরনের অপরাধ ।’

আমি প্রয়োজনে বৈশালীরাজকে বলবো। ‘সম্রাট বিম্বিসার স্বয়ং বৈশালীরাজকে বললেও অসম্ভব ?’ কেন ?

“মহারাজ ! এই নারীর জন্য বহু রক্তপাত হয়েছে । বহু রাজা, রাজপুত্র বণিক , ধনাঢ্য ব্যাক্তি কেবল এক নজর চোখের দেখার জন্য তার বাড়ির সামনে দিনের পর দিন তাঁবু খাটিয়ে অপেক্ষা করে । যতক্ষণ পর্যন্ত আম্র-পালীর আগ্রহ না জন্মে, কেউ তার বাড়িতে ঢুকবার অনুমতি পর্যন্ত পায় না …’তাছাড় ?

-তাছাড়া আবার কি মন্ত্রী ?

-বৈশালীরাজ তো আমাদের শত্রু , আপনাকে সেখানে ঢুকতে হলে যুদ্ধে জয়লাভ করেই ঢুকতে হবে।

রাজা চিন্তিত মুখ করে বললেন, ‘কি যেন নাম বলেছিলে এই নারীর ?’

‘এই নারীর নাম আম্রপালী ,মহারাজ।’

‘এমন অদ্ভুত নাম আগে কখনও শুনেছি বলে তো মনে পড়ে না। আমি আম্রপালীর সম্পর্কে সবকিছু জানতে আগ্রহী । তারপর সিদ্ধান্ত নিব। গোপাল তুমি এর সব বৃত্তান্ত আমাকে শোনাও !’

গোপাল বেশ কিছুক্ষণ ভেবে নিলেন। তারপর আম্রপালীর গল্প শুরু করলেন । প্রথমে তার অতীত জীবন বললেন।

আম্রপালীর সে অতীত জীবনের গল্প সবাইকে তো জানায়েছি । আর জানানোর দরকার আছে কি? আমি সরাসরি তাদের “প্রেম-কাহিনী” তে যেতে চাই । তবে পাঠকদের মতামত চাই - মন্ত্রীর বলা আম্র-পালীর সে “অতীত –কাহিনী” শুরু করবো নাকি সরাসরি আম্র-পালী ও বিসিম্বারের “প্রেম-কাহিনী” তে চলে যাব? (ক্রমশঃ)

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৪:০৮   ৭৫০ বার পঠিত