মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯

হাঁড়িভাঙ্গা আম-এর নাম করণের ইতিহাস -৪ : জালাল উদদীন মাহমুদ

Home Page » বিনোদন » হাঁড়িভাঙ্গা আম-এর নাম করণের ইতিহাস -৪ : জালাল উদদীন মাহমুদ
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯



 

  জালাল উদদীন মাহমুদ    এখন আমি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা সম্পর্কে কিছু বলতে চাই।        


সম্রাট আওরঙ্গজেবের আদেশে মীর জুমেলা কোচ বিহার ও আসাম অভিযান কালে মিঠাপুকুর অঞ্চলে এসে পৌছলে বিশাল বাহিনীর সুপেয় পানির (মিঠা পানি)  চাহিদা পূরণে তিনি একটি পুকুর খননের আদেশ দেন। মীর জুমেলার আদেশে খননকৃত পুকুরের নামানুসারে এলাকাটি মিঠাপুকুর নামে পরিচিত হয়। মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ জমিদার বাড়ী।


রংপুর গেলে পায়রাবন্দ জমিদার বাড়ী অবশ্যই দেখতে যাবেন। মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার জন্মভূমি পায়রাবন্দ ঐতিহাসিক স্থান হিসাবে গণ্য। জমিদার বংশের জন্য পায়রাবন্দ একটি অনন্য নাম। জমিদার বংশ হিসেবে পায়রাবন্দ যত না বেশি পরিচিতি পেয়েছে; তার চেয়ে বেশি পরিচিত হয়েছে বেগম রোকেয়া উক্ত বংশের সন্তান হওয়ার কারণে। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার নারী মুক্তি আন্দোলনের অগ্রদূত হিসাবে পায়রাবন্দ জমিদার পরিবারে বেগম রোকেয়ার জন্ম একটি যুগান্তকারী ঘটনা। রংপুর শহর থেকে আট মাইল দক্ষিণে ঘাঘট নদীর পাড়ে কিংবদন্তী অনুযায়ী রংপুর কামরুপ রাজ্যের শাসনাধীন থাকাকালীন সময়ে কামরুপ অধিপতি রাজা ভগ দত্তের কন্যা পায়রাবতীর নামানুসারে এ জনপদের নামকরণ হয় ‘‘পায়রাবন্দ’’। এর পরগনার শেষ জমিদার জহির উদ্দিন মুহম্মদ আবু আলী হায়দার সাহেবের কন্যা বেগম রোকেয়া ১৮৮০ খ্রিঃ জন্মগ্রহন করেন।

আমরা অনেকেই জানি না মিঠাপুকুর উপজেলার ৩% লোক উপজাতি।  মূলতঃ ৩ ধরনের উপজাতির বাস এখানে। যেমন (ক) সাঁওতাল , (খ)উড়াও এবং (গ) মুন্ডা । 

 হাড়িভাঙ্গা আম              

আমরা জানি মিঠাপুকুর উপজেলা বরেন্দ্র ভূমি হবার কারনে এখানে আমচাষের বিস্তৃতি ঘটেছে।

এখন আমরা জানার চেস্টা করবো বরেন্দ্র ভূমি কোন কোন এলাকা নিয়ে গঠিত। ১৭৬৫ সনের পরবর্তীতে দিওয়ানী প্রাপ্ত ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কর্তৃক বিভাজিত ‘রাজশাহী বিভাগ’ হলে সে সময় সমগ্র বাঙলার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল নিয়ে গঠিত আটটি জেলা এই রাজশাহী বিভাগের অন্তর্ভূক্ত ছিল। যথা- ১। দার্জিলিং ২।জলপাইগুড়ি ৩। মালদহ ৪। দিনাজপুর ৫। রংপুর ৬। বগুড়া ৭। পাবনা এবং ৮। বৃহত্তর রাজশাহী জেলা সমূহ (রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, চাপাইনবাবগঞ্জ) ।

অনেকের মতে বৃহত্তর দিনাজপুর ও মালদহ জেলা এবং রংপুর বগুড়া পাবনা ও বৃহত্তর রাজশাহী জেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী বিভাগকেই বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন ।

বরেন্দ্র অর্থ খিয়ার মাটি । যাকে গ্রামের মানুষ খিয়ার মাটি বলে জানে। বৃহত্তর দিনাজপুর, রংপুর, পাবনা, রাজশাহী ও বগুড়া জেলা জুড়ে বরেন্দ্রভূমি বিস্তৃত।এক কথায় বলা যায় উত্তরবংগ নামে পরিচিত সমগ্র ভূ-ভাগটিই আসলে বরেন্দ্র।

কখনো পুন্ড্র কখনো পুন্ড্রবর্ধন কখনো গৌড় হিসেবে বরেন্দ্রভূমির আয়তন যুগে যুগে কালে কালে কমবেশী হয়েছে ।

 না, এ সব ইতিহাস আর নয় । কাল সরাসরি হাঁড়িভাঙ্গা আমের নামকরণের ইতিহাস। যে ইতিহাস জানানোর জন্য এত ভণিতা করলাম - কাল তা জানাব। শুনবেন কিন্তু।

(চলবে)

************

 

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৩৬:৫৪   ৯১৪ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #