শনিবার, ১৬ মার্চ ২০১৯
হাড়িভাঙ্গা আমের নাম করনের ইতিহাস -১ -জালাল উদদীন মাহমুদ
Home Page » বিনোদন » হাড়িভাঙ্গা আমের নাম করনের ইতিহাস -১ -জালাল উদদীন মাহমুদবৈশিষ্ট্য)
রংপুরের হাড়িভাঙ্গা আম এখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। অনেকেই হড়িভাঙ্গা আমকে বিশ্বসেরা বলে থাকেন । আসলেই কি তাই ? বিতর্কে যাবার দরকার নাই । তবে সবাই এটা অন্তত: স্বীকার করবেন যে হড়িভাঙ্গা আম বাংলাদেশের একমাত্র আঁশবিহীন আম। সুগন্ধী ও সুমিষ্ট। প্রতিটি আম সাধারনত ২০০- ৫০০ গ্রামের হয়ে থাকে । এ আম গোলাকৃতির তবে কিছুটা লম্বাটে । কালচে সবুজ রংয়ের এবং পাকলে কিছুটা লালচে রং ধারন করে । কাঁচায় ছাল সহ খেলেও মিস্টি লাগে। ২০ জুনের পর বাজারে পাওয়া যায়। পুস্ট আম অনেক দিন পর্যন্ত ভাল থাকে। চামড়া কুঁচকে গেলেও পচেঁ না। আমটির উপরিভাগ বেশী মোটা ও চওড়া, নিচের অংশ অপেক্ষাকৃত চিকন । আমটি দেখতে সুঠাম ও মাংসালো, শ্বাস গোলাকার ও একটু লম্বা । আমের তুলনায় শ্বাস অনেক ছোট, ভিতরে আঁশ নেই । আকারের তুলনায় অন্য আমের চেয়ে ওজনে বেশী, গড়ে ৩টি আমে ১ কেজি হয় । কোন কোন ক্ষেত্রে একটি আম ৫০০/৭০০ গ্রাম হয়ে থাকে । ঢাকার বাজারে এ আমের প্রচুর চাহিদা আছে। তবে হাড়িভাঙ্গা আম একটু বেশি পাকলে পানসে লাগে । আমগাছের চারা রোপনের পরবর্তী বছরেই মুকুল আসে, তবে প্রথম বছরে মুকুল ভেঙ্গে দিলে গাছের ডগার সংখ্যা বৃদ্ধি পায় ও বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে । হাড়িভাঙ্গা আমগাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো গাছের ডালপালা উর্ধ্বমূখী বা আকাশচুম্বী হওয়ার চেয়ে পাশে বেশী বিস্তৃত হতে দেখা যায় । ফলে উচ্চতা কম হওয়ায় ঝড়-বাতাসে গাছ উপড়ে পড়েনা এবং আমও কম ঝড়ে পড়ে । চারা রোপনের দুই বছরের মাথায় গাছে আম ধরা শুরু করে। ৭ থেকে ৮ বছর বয়স পর্যন্ত গাছে আমের ফলন খুব ভাল হয়। তবে গাছের বয়স ১০ বছরের বেশি হয়ে গেলে আমের আকৃতি আকারে একটু ছোট হয়। এ জন্য গাছের বয়স ১২ বছর পার হলে সে গাছটি কেটে কৃষক সেখানে নতুন করে আম গাছের চারা রোপন করেন। এত সুন্দর আম এবার রমজানের ঈদের সপ্তাহ ২ পর পাওয়া যাবে। কেনার জন্য এখনই নিয়ত করে ফেলুন। মনে রাখবেন ,মৌসুমের শুরুতে হাড়িভাঙ্গা আমের দাম কিছুটা কম থাকলেও মৌসুমের শেষের দিকে বেড়ে যায় দাম। এর কারন সংশ্লিষ্ট এলাকায় আম সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থা না থাকা । ২০১৬ সালের একটি হিসাব আমার কাছে আছে । সে বছর ০৮ জুলাই এক কেজি হাড়িভাঙ্গা আম ১শ’ ৩০ টাকা থেকে ১শ’ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল । অথচ এর দশদিন আগেও ছিল ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি। দশদিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৮০ টাকা থেকে ১শ’ টাকা। তাই মৌসুমের শুরুতেই এ আম কেনাই খুব বুদ্ধিধমানের কাজ ।
এ আম স্বাস্থ্য সম্মতভাবে পাকানো হয়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের ফরমালিন ও কার্বাইড ছাড়াই বিশেষ পদ্ধতিতে আম প্যাকেটিং করা হয়। যার কারণে হাড়িভাঙ্গা, নিয়ে ভীতির কারণ নেই। ঘরগুলোতে আম পাকানোর জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে খড় রাখা হয়। খড়ের ভিতরে বিশেষ ভাবে আম রেখে সেগুলো পাকানো হয় । তাই আমের রঙও “রঙে ভরা ব্যাংকিং জীবন”-এর মত রঙীন ও সুন্দর হয়।
এ আমের গুনগান করা আমার উদ্দেশ্যে নয় । আমি এ আমের নাম করণের ইতিহাস জানাতে চাই। তবে এ জন্য আপনাদের একটু কষ্ট করে আমার সাথে রংপুরের পীর গন্জে যেতে হবে। সবাই রেডী তো ? আজ নয় আগামীকাল নিয়ে যাব , রংপুরে। (চলবে) ……….
বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৫:৪৩ ৭৭৩ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম