রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯

উপাচার্য-উপাখ্যান’

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » উপাচার্য-উপাখ্যান’
রবিবার, ৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৯



অধ্যাপক আবদুল বায়েস।  সাবেক উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বঙ্গ-নিউজঃ উপাচার্য-উপাখ্যান অনেকটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্পের গিরিবালার মতো ঃ “আকাশে মেঘ করতে লাগিল; বর্ষাকালে এমন মেঘ প্রতিদিন করিয়া থাকে। গিরিবালা পথের প্রান্তে একটা গাছের আড়ালে দাঁড়াইয়া অভিমানে ফুলিয়া ফুলিয়া কাঁদিতে লাগিল; এমন অকারণ কান্না প্রতিদিন কত বালিকা কাঁদিয়া থাকে। উহার মধ্যে লক্ষ করিবার বিষয় কিছুই ছিলনা ।“ আপাতত এইটুকু বলাই যথেষ্ট যে এই দেশে অনেক উপাচার্য ছিলেন, আছেন , আসবেন, এবং সেই সাথে যুক্ত অনেক উপাখ্যানও । অনুমান করি, আমার বেলায় যা ঘটেছে অন্যদের বেলায় তা পুরোপুরি না হোক অন্তত কিছু প্রযোজ্য । তা ছাড়া, ফেসবুক ফ্রেন্ডসদের প্রতিক্রিয়ায়ও মনে হয়েছে এই উপাখ্যানে হয়তো লক্ষ করার মতো কিছু থেকে থাকতে পারে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হবার বাসনা নিয়ে অনেকে উপাসনা করে থাকেন। মাজারে গিয়ে না হোক অন্তত মনে মনে কেউ করেন ‘মানত’ । দিন-রাত একাকার করে, ঘর-সংসার লাটে তুলে , ক্লাশ ও পড়াশুনার ব্যাঘাত ঘটিয়ে দিনের পর দিন ভিসি নামের এই ‘সোনার হরিণের’ পেছনে ছুটে থাকেন কেউ-কেউ। চাই কি শিক্ষা মন্ত্রীর পিএস কিংবা কোনো উপ-সচিবের কক্ষে বসে বসে মন্ত্রীর অপেক্ষায় প্রহর গুণতে কারো বিবেকে একটুও বাধে না। মোট কথা, ‘তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই।‘

আহমদ ছফার ‘গাভী বিত্তান্ত ‘ বইতে পড়েছি্লাম, আবু জুনায়েদ উপাচার্য পদে নিয়োগ পাবার পর তার স্ত্রী বেগম নুরুন্নাহার বানু ‘আণ্ডাপাড়া মুরগির’ মতো চিৎকার করে বলেছিলেন যে, তার ভাগ্যেই আবু জুনায়েদ এমন এক লাফে অত উঁচু জায়গায় উঠতে পারলেন

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মনে করতেন, ‘মানুষের জীবনটা বিপুল একটা বনস্পতির মতো । তার আয়তন তার আকৃতি সুঠাম নয়। দিনে দিনে চলছে তার মধ্যে এলোমেলো ডালপালার পুনরাবৃত্তি ।এই স্তূপাকার একঘেয়েমির মধ্যে হঠাৎ একটা ফল ফলে ওঠে …সে সংক্ষিপ্ত , সে অনিবার্য , সে দৈলবদ্ধ, সে ছোট গল্প ।‘
উপাচার্য –উপাখ্যান কতকগুলু ছোট গল্পের সমাহার । উপাচার্যের অভিজ্ঞতা নানা উপমা আর ব্যাঞ্জনায় ব্যাক্ত। তবে উপাচার্যের আগে-পরের কিছু কথা , ওই সময়ে বিভিন্ন পত্রিকায় লিখা প্রাসঙ্গিক কিছু প্রবন্ধও থাকছে এই বইতে।
‘উপাচার্য – উপাখ্যান ‘ বইতে আমি বিভিন্ন ঘটনা – অঘটনার বয়ান ও ব্যাখ্যা দিয়েছি যা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে। এর বিপক্ষে মতামত থাক্ তে ই পারে । যতটুক সম্ভব পেরেছি , রাগবিরাগ বা ভালবাসার প্রভাবকে পরিহার করে গল্পের আদলে ইতিহাস লিখার চেষ্টা চালিয়েছি । এর পরও কেউ যদি আঘাত পেয়ে থাকেন তা হলে তার জন্য আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি এবং ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

বইটি ছেপেছে পাঞ্জেরী প্রকাশনা । প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রব এষ । আর বইমেলায় পাওয়া যাবে প্যাভিলিয়ন ১৭ -তে।
অধ্যাপক আবদুল বায়েস

সাবেক উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৪:৫৯   ৫৬১ বার পঠিত