মঙ্গলবার, ২৯ জানুয়ারী ২০১৯

“রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবন “-জালাল উদদীন মাহমুদ

Home Page » বিনোদন » “রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবন “-জালাল উদদীন মাহমুদ
মঙ্গলবার, ২৯ জানুয়ারী ২০১৯



 

জালাল উদদীন মাহমুদ

৭৫তম পর্ব–
ডেমাজানি শাখা ,বগুড়া -৩৪

আজ যখন অন্য একটা বিষয়ে লেখা শুরু করতে যাব –তখন চট্টগ্রামের আমিন পাটোয়ারীর ক দিন আগে লেখা একটা মন্তব্য চোখে পড়ে গেল। কৃষিঋণ আদায়ের জন্য প্রধান কার্য্যালয় থেকে আগত নজির স্যারের বিষয়ে তিনি লিখেছেন, “ সারের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে। অত্যন্ত ন্যায়পরায়ন, ধার্মিক, সৎ, নিষ্ঠাবান,কর্তব্য পরায়ন লোক ছিলেন তিনি। সব সময় যে কোন চিঠি পত্র সই করতে গেলেই জিজ্ঞাসা করতেন, দেখেছেন তো? সব ঠিক আছে তো? বিসমিল্লাহ বলে একটা সই দেন। নিজে ও প্রত্যেকটা কাজ করার পূর্বে একবার বিসমিল্লাহ বলতেন। আল্লাহ স্যারকে জান্নাতবাসী করুন।’’ আমিন পাটোয়ারীর লেখার উত্তরে আমি লিখেছিলাম -স্যারের মত ধার্মিক -কর্তব্য পরায়ন ব্যক্তি এ জীবনে আমি খুব কম দেখেছি। আমার বাসায় থাকাকালীন তিনি প্রত্যহ শেষ রাতে উঠে কোরান শরীফ তেলাওয়াত করতেন। আমাকে অনেক ভালবাসতেন। পরবর্তীতে ঢাকায় তার শাহজাহানপুরের বাসায় আমি থেকেছি। কোর্ট রোড শাখা ও চট্টগ্রাম সার্কেলে দেখা করতে গিয়েছি। যেহেতু নাম লিখেছি” রঙে ভরা ”তাই স্যার কে নিয়ে রসময় কথাগুলিই শুধু লিখছি , তাও বহুযুগের পুরানো স্মৃতি নির্ভর। স্যারের অন্য হাজারো কথা আমার লেখার বাহিরেই থেকে যাবে। যে হাজার কথা বাহিরে থেকে গিয়েছে তার মধ্য থেকে একটা অধ্যায় আজ খুব মনে পড়ছে-

নজির স্যারের সাথে আমাদের মাঝে-মধ্যে গাল গল্প যে হতোনা তা কিন্তু নয়। একদিনের কথা আজ মনে পড়ছে। সেদিন আমার বাসায় বসে স্যারের সাথে গল্প হচ্ছিল। স্যারের জন্মস্থান কক্সবাজার জেলার চকোরিয়ার কোন এক গ্রামে। উনি উনার অতীত স্মৃতি বলার এক ফাঁকে বললেন- চলো একদিন আমার এলাকা থেকে বেড়িয়ে আসি। পাহাড়ী এলাকা। ভাল লাগবে। শুধু একটাই অসুবিধা।
- কি আবার অসুবিধা স্যার? আমার ছোট ভাই আলমগীর বলল। সে মনে হয় মনে মনে আগে থেকেই পার্বত্য এলাকায় বেড়াতে যাবার জন্য স্যারের প্রস্তাবের অপেক্ষায় ছিল। আজ প্রস্তাব পেল বটে কিন্তু ঐ অসুবিধার কথা শুনে সাময়িকভাবে দমে গেল বলে মনে হলো।
- অসুবিধা মানে যাতায়াত ব্যবস্থা আরকি। চকোরিয়া পর্যন্ত ভাল। তারপর আমাদের গ্রাম পর্যন্ত এক কথায় জঘন্য। মনে হলো স্যার একটু লজ্জিত হয়েছেন। মাথা চুলকালেন। আমাদের দিকে তাকালেন। তারপর আবার বলা শুরু করলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বৃটিশ সৈন্যদের ব্যবহৃত জীপ এদেশের মাটিতে চলা শুরু করে। ঐ সব জীপ গাড়ির সামনে ইঞ্জিন রাখার জন্য বিশাল জায়গা থাকতো।
- স্যার জীপ কিন্তু একটা ব্র্যান্ডের নাম। ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া আমার ছোট ভাইটি হঠাৎ বিদ্যা জাহির করলো।
- তা আমি জানি। কিন্তু ঐ টাইপের সব গাড়িকেই যেহেতু আমাদের দেশে জীপ বলে তাই আমিও বলছি। যেমন -মটরসাইকেলকে তো হোন্ডা বলা হয়। সব লুব্রিকেন্টকেই মবিল বলে। অথচ মবিল একটা ব্র্যান্ডের নাম। যাহোক ঐ ধরনের জীপেই আমাদের বাড়ী যেতে হয়। স্থানীয় ভাষায় চান্দের গাড়ি বলে । ইঞ্জিন কভারের উপরও প্যাসেন্জার নেয়া হয়।
- হ্যাঁ হ্যাঁ, আমি এরুপ গাড়ি দেখেছি বগুড়ার শেরপুর- ধুনুট রোডে চলে। হেল্পার বলে সীট আছে। অথচ গাড়ি ফুল। কোথায় সীট আছে জিজ্ঞাসা করলে মাড গার্ড দেখিয়ে দেয়। লোকজনও দিব্যি ঐ মাড গার্ডের উপর চড়ে যাতায়াত করে। আমি বললাম।
- আমাদের ওদিকে পুরা ইঞ্জিন কভারের উপর লোক বসে। মাড গার্ডেতো বসেই। পাদানীর উপরও অনেকে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে থাকে।
- পুরা ইঞ্জিন কভারের উপর প্যাসেন্জার বসে ? আমার কন্ঠে সন্দেহ। স্যার , শেরপুর- ধুনুট রোডের আদ্দিকালের জীপ গাড়িগুলির উপর টেক্কা দেবার জন্য বাড়িয়ে বলছে না তো!
- বিশ্বাস হয় না, তোমাদের ? গাড়ির ভিতরে, পাদানী, মাডগার্ড এবং সামনের ইঞ্জিন কভারের উপর সামান্যও ফাঁক থাকেনা। মালামাল বা বস্তা জাতীয় কিছু থাকলে তা উপরের ক্যারিয়ারে বা ড্রাইভারের সামনের কাঁচ ঘেষে সাজিয়ে রাখা হয়।
- তাহলে ড্রাইভার গাড়ী চালায় ক্যামনে? সামনের কিছুইতো দেখতে পায়না। আমরা দু’ভাই প্রায় একই ভাবে প্রতিক্রিয়া জানালাম।
- হ্যাঁ, এটা একটা প্রশ্ন বটে। শুধু শুধু সামনে কেন ড্রাইভার দুই পাশেও কিছু দেখতে পায় না। ড্রাইভারের দুদিকের পাদানীতেও লোক দাঁড়িয়ে থাকে।
- দেখতে না পেলে ড্রাইভার গাড়ী চালাবে কিভাবে? আমি উত্তর পাবার জন্য অস্থির হয়ে উঠলাম।
- স্যার তার লেলিন টাইপের ফ্রেন্চ কাট দাঁড়িতে হাত বুলালেন। তারপর রহস্যের হাসি হেসে বললেন কেন? হেলপার আছে না?
- হেলপার? হেলপার কি করবে?
- উপরের মাল রাখার স্থানের সামনের দিকে বসে হেলপার গাইড দেয়। ডাইনে ওস্তাদ। বামে ওস্তাদ। সামনে উচু, সামনে নিচু ওস্তাদ। আস্থে ওস্তাদ , সামনে গাড়ী , সাইড দেন ওস্তাদ –পীছনে গাড়ি ,এভাবে আরকি?
- এটা কিভাবে সম্ভব?
- অন্ধ লোক পথ চলে কিভাবে? একই রাস্তায় গাড়ি চালাতে চালাতে ড্রাইভারের রাস্তা- ঘাটের প্রতিটি বাঁক, প্রতিটি চড়াই, উৎরাই সব মুখস্ত হয়ে যায়। এভাবেই চলে। এমনকি এসব গাড়ির অধিকাংশের ব্রেকও থাকে না।

পুরাই মাথা নষ্ট। ব্রেক থাকেনা? স্যার কি ইয়ার্কি করছেন নাকি? না উনি তো সে রকম না। তাহলে কি আমরা তার বাড়ীতে যেন না যাই সে ফন্দি এঁটেছেন। না,উনি তেমনও না। তাহলে এসব আজগুবি গল্পের কারণই বা কি? স্যার মনে হয় আমাদের মনের কথা বুঝতে পারলেন। শান্ত গলার বললেন-দেখ, না দেখলে তোমাদের এসব বিশ্বাস হবে না?

আমি বললাম তা না হয় ঠিক। কিন্তু ব্রেক না থাকলে গাড়ি থামায় কেমনে? তাজ্জব ব্যাপার।
- মোটেই তাজ্জব নয়। আমরা তো যাতায়াত করি, নাকি? না, তোমাদের মনে হচ্ছে আমি মিথ্যা বলছি?

তাওবা- আস্তাগফিরুল্লাহ । স্যার মিথ্যা বলার মত লোকই না। আমরা লজ্জিত হলাম। বললাম – কি যে বলেন স্যার, আপনি মিথ্যা বলবেন কেন? আর আমরা তা ভাবিও না। বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তিত দেখাচ্ছিল আমার ভাইকে। সে এবার মূল পয়েন্টে গেল স্যার ব্রেক নাই তাহলে গাড়ি থামায় কেমনে ? এ মেকানিজমটা যদি কাইন্ডলি একটু বলতেন।

- সেটাইতো বলতে চাচ্ছি। এ সব গাড়ির দুইজন হেল্পার থাকে। পিছনে একজন পাদানিতে দাঁড়িয়ে থাকে। তার কাছে থাকে শক্ত দড়ি এবং কাঠের গুঁড়ি। যখন ব্রেক ধরার বা থামার প্রয়োজন হয় তখন সামনের হেল্পার চিৎকার করে ড্রাইভারকে বলে ওস্তাদ ব্রেক। ওস্তাদ গাড়ীর স্টার্ট অফ করে দেয় বা এক্সেলেটর থেকে পা সরিয়ে ফেলে।
- তাতেও তো গাড়ি কিছুদুর যাবে?
- আগে তো শুনবে । স্যারের কন্ঠে এবার বিরক্তি। হেলপার আছে না ? দড়ির এক প্রান্ত তো গাড়ির মাঝখানে বাঁধা থাকে । পীছনের পাদানীতে থাকা আরেক জন হেলপার লাফ দিয়ে নেমে দড়ির অন্যপ্রান্ত একটা গাছের সাথে বাঁধে। তারপর প্রয়োজন মনে করলে গাছের ছোট কিন্তু ভারী গুঁড়িটাও চাকার সামনে দিয়ে দেয়। ব্যস হয়ে গেল।
- কিন্তু , স্যার এত ওজন ঐ গাড়ি টানে কেমনে ?
- জীপ গাড়ির বৈশিষ্ট্য হল এগুলো ‘ফোর হুইল ড্রাইভ’ এবং বেশ খোলামেলা। জীপ গাড়ির স্পিড অন্যান্য গাড়ির তুলনায় কম থাকে । কিন্তু এর ইঞ্জিন এতোটাই শক্তিশালী যে অনেক ওজন বহন করেও গাড়ি একই ভাবে চলতে পারে। গাড়ি সম্পর্কে স্যারের অনেক জ্ঞান আছে বুঝলাম। স্যারের কে যেন একজন চট্টগ্রামের ধনিয়ালা পাড়ায় পুরাতন গাড়ির ব্যবসা করতো। সে তথ্য উল্লেখ করে তিনি বললেন-দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বৃটিশ সৈন্যদের ব্যবহৃত বিভিন্ন যানবাহন নিলামে উঠলে চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা সেই সব পুরানো যানবাহন ক্রয় করেন। সেই থেকে চট্টগ্রামের ধনিয়াল পাড়ায় পুরান গাড়ির ব্যবসার প্রথম সূত্রপাত ঘটে। সেই থেকে এই এলাকায় পুরান গাড়ির ইঞ্জিন এবং পার্টসের ব্যবসা গড়ে ওঠে।

আমরা দু’ভাই অনেকক্ষণ ধরে কথা বললাম না। স্যারের পুরাতন গাড়ির ইতিহাসে আমরা কেউ সাড়াও দিলাম না।
স্যারই আবার মুখ খুললেন- দেখি সময় করে তোমাদের নিয়ে যাব একদিন। তবে খাঁড়া ,সরু ,ভাঙাচোরা দুর্গম জনমানব আর বসতিহীন পাহাড়ের গা ঘেঁষে রাস্তা তার একপাশে বিশাল খাদ। কোথাও পথের দু’পাশেই পাহাড়, কোথাও আবার এক পাশে পাহাড় আর অন্য পাশে বিপদসঙ্কুল গভীর খাদ। খানিক পরপরই আচমকা মোড়।কোথাও নীচুতে পাহাড়ী ঝিরি-এ সব দেখলে তোমাদের সমতলভূমির লোকজনের ভয় লাগতে পারে।
-ভয় ?
- হ্যাঁ, ভয়ই তো। কখনও পাহাড়ের চূঁড়া ডিঙিয়ে, আবার কখনও পাহাড়ের পাদদেশ হয়ে রাস্তা। চূড়া থেকে নামতে যেমন খাড়া খাড়া ঢাল, আবার পাদদেশে থেকে চূড়ায় উঠতেও একই রকম খাড়া ঢাল। কোনো কোনো পাহাড়ের মাঝখানে কেটে রাস্তার গতিপথ –এ রকম রাস্তা তো তোমাদের এলাকায় নাই। তাই ভয় লাগতে পারে। ভেবে দেখ –যাবে কিনা ? তোমাদের আমি আরো ভিতরে নিয়ে যেয়ে বড় পাহাড়ও দেখিয়ে নিয়ে আসব।
বাল্যকাল থেকেই প্রকৃতির সঙ্গে আমার মনোজগতের এক অদ্ভুদ প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রাত দিন পড়তাম ভ্রমণকাহিনি । সেই সব ভ্রমণকাহিনিই প্রথমে আমাকে কল্পনায় পাহাড়ের দেশে নিয়ে যায়।
মনে মনে শুধু কল্পনা করতাম সারি সারি পাহাড়-পর্বত , বাঁকানো উপত্যকার বিপরীতে সমতল অধিত্যকা ,রুপালী সুতার মত পাহাড়ি নদী তারি মাঝে সূর্যোদয় তারি মাঝে সূর্যাস্ত । পাহাড় না দেখেই ভালবাসতে শুরু করলাম - পাহাড়ের গল্প ,পাহাড়ের মানুষ , পাহাড়ের অরণ্য , পাহাড়ি গান , পাহাড়ি নাচ , পাহাড়ি বন্য ফুল , পাহাড়ি নদী , পাহাড়ি ঝর্ণা মায় পাহাড়ি কণ্যা।

কিন্তু রংপুর ও এখনকার পঞ্চগড় জেলা থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার তুষারাবৃতি চূড়াগুলো দেখলেও কাছে থেকে পাহাড় তখনও দেখা হয়নি আমার। বাহাদুরাবাদ ঘাট দিয়ে ফেরি পার হতে আকাশের গায়ে লেগে থাকা কাল কাল আবছা আবছা পাহাড় দেখে গুণগুণ করেছি ”আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায় ওই।”
আজ যখন স্যার স্বেচ্ছায় প্রস্তাব দিচ্ছেন – তখন যাব বৈকি। কিন্তু- হ্যাঁ দুটা কিন্তু আছে । গাড়ী –রাস্তার বর্ণনা শুনে মনটা সায় দিচ্ছেনা , ছুটি মিলবে কি-না তার ঠিক নাই । তবে ছুটির জন্য ধর্ণা ধরতেই মনটা সায় দিচ্ছেনা ।

দু ‘ তিন দিন পর স্যার যখন আবার প্রস্তাবটা তুললেন। তখন আমার ভাই কি ভাবছিল জানিনা। আমি বললাম - স্যার আমার বোধ হয় যাবার সময় হবে না। এখন ছুটি নেওয়া উচিৎ হবে না। আজও আমি বুঝিনা কেন সে কথা বলেছিলাম- ছুটি মিলবে না সে জন্য নাকি ভয়ংকর রাস্তায় ততোধিক ভয়ংকর গাড়িতে জার্নির ভয়ে।

পরবর্তিতে আমার ভাই ঠিকই উনার সাথে গিয়েছিল। সে ফিরে আসলে আমি কেন গেলাম না , ছুটির জন্য কেন চেষ্টা করলাম না -তা ভেবে আমার খুব মন খারাপ হয়েছিল।

তার পর ত্রিশ বছর গত হয়েছে। সমতলভূমির বাসিন্দারা এখন পাহাড় দেখতে উদগ্রীব। দলে দলে ছুটছে তারা । পাহাড় দেখতে আমিও কতবার যে চান্দের গাড়ীতে চড়লাম। কিন্তু হায় ! স্যারের বর্ণিত সে রাস্তা, সে গাড়ি, সে ড্রাইভার, সে হেল্পারদের দেখা আর এ জীবনে মিলবে না। আর দেখা পেলেই বা কি –উপভোগের সে বয়স তো আর ফিরে পাবনা। বৃদ্ধকালে সঞ্জীবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার পালামৌ নামের ভ্রমণকাহিনী তে লিখেছিলেন , “পূর্ব্বে সেই সকল নির্জ্জন পর্ব্বত, কুসুমিত কানন প্রভৃতি যে চক্ষে দেখিয়াছিলাম, সে চক্ষু আর নাই। এখন পর্ব্বত কেবল প্রস্তরময়, বন কেবল কন্টকাকীর্ণ,…। ”অথচ তরুণ বয়সে তিনি পহাড়-বন কতই না ভালবাসতেন। জানি ভ্রমণ ও স্থান পরিবর্তন মনের মধ্যে নতুন প্রাণশক্তি তৈরি করে। কিন্তু আমার কাছেও তো ঐ পাহাড় এখন বৃহৎ মাটির স্তপ , ঐ চড়াই –ঐ উৎরাই এখন ঝুঁকি পূর্ণ , ঐ চান্দের গাড়ী নন কমফোর্ট্যাবল , সমবেত ভ্রমণ পিপাসুদের ঐ আনন্দ-হুল্লোড় এখন কেবলই অর্থহীন হৈচৈ।
পাঠক-পাঠিকাগণ আমার মত বয়স আসার আগেই -সুসান হেলারের পরামর্শ মত আপনাদের সব জামা-কাপড় আর টাকা এক জায়গায় করুন। তারপর সেখান থেকে অর্ধেক জামা-কাপড় এবং দ্বিগুণ টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করুন। দেরী করলেই লেট।

আমাকেও সাথে নিতে পারেন। ভ্রমণ যদি হয় প্রিয়জনদের সাথে ,আপনজনদের সাথে তবে তাদের চোখ দিয়ে , তাদের প্রাণ শক্তি দিয়ে দৈহিক বাঁধা কিন্তু এখনও আমি অতিক্রম করতে পারি। আর্নেস্ট হেমিংওয়ের বিখ্যাত উক্তিটি সর্বদা ম্মরণ করি -যাকে তুমি ভালোবাসো না তার সাথে কখনো ভ্রমণ করো না। নতুন করে কি আর বলতে হবে , আপনাদের আমি খুব ভালবাসি। (ক্রমশঃ)

বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৭:১১   ৫১৩ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #