শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারী ২০১৯

“রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবন “-জালাল উদদীন মাহমুদ

Home Page » বিনোদন » “রঙে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবন “-জালাল উদদীন মাহমুদ
শুক্রবার, ২৫ জানুয়ারী ২০১৯



 

জালাল উদদীন মাহমুদ

৭১তম পর্ব–
ডেমাজানি শাখা ,বগুড়া -৩০

ব্যাংকারদের বিষয়ে একটি প্রবাদ প্রচলিত আছে – মধ্যরাতে রাস্তায় তিন ধরনের প্রাণী দেখতে পাওয়া যায় : ব্যাংকার, ড্রাংকার আর কুকুর।” এ জীবনে একদিন তার প্রমাণও পেয়েছিলাম। ডিসেম্বর ক্লোজিং- এর আগের রাত। বাসায় ফিরছি। রাত দু’টার মত হবে হয়তো। ভীষণ শীত। একদম নির্জন গ্রামের রাস্তা। মটর সাইকেলে আসছি । স্যার যথারীতি পিছনে বসে আছেন। স্যার বোধ হয় শীতের গভীর রাতের একদম নির্জন রাস্তা দেখে কিছুটা ভয় পেয়ে থাকবেন। মটর সাইকেলের পিছনে বসে স্যার অনুচ্চ স্বরে দোয়া দরুদ পড়ছিলেন। মাঝে মাঝে আমাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছিলেন কোথায় কিন্তু থামা যাবেনা। না না এই রাতে থামবো কেন? স্যার বলছিলেন কেউ হাত দেখালেও থামা যাবে না। হাতই বা কেউ দেখাবে কেন ? বুঝলাম স্যার ভয় পেয়েছেন। অভয় দিলাম। সৃষ্টিকর্তার প্রতি অবিচল আস্থা রেখে স্যার দোয়া- দরুদ পড়া অব্যাহত রাখলেন। ভয়ের সঞ্চারণ ক্ষমতা আছে। হঠাৎ আমিও কেমন জানি ভয় পেয়ে গেলাম। মনে মনে বোধ হয় দোয়া দরুদ পড়া শুরুও করেছি। বাড়ীর কাছাকাছি এসে গেছি। হঠাৎ দেখি সামনের রাস্তার এক মোড়ে দৈর্ঘ্য প্রস্থে সমান বেঁটে প্রকৃতির একজন আপাদমস্তক চাদর মুড়ে উল্টা দিক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। স্যার বললেন তাড়াতাড়ি পার হও। দাঁড়ানো লোকটা সুবিধার মনে হচ্ছে না। কি যে আছে ভাগ্যে । মোড় নেবার সময়ে ঐ লোকটার দিকে তাকিয়ে মটর সাইকেল স্লো করতেই একদম তার সামনেই মটর সাইকেলের স্টার্ট অফ হয়ে গেল। স্যার চিৎকার করে ,আর্তনাদ করে বলে উঠলেন - ইন্নালিল্লাহ্। আমি হর্ণ দিলাম । সামনে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে থাকা কুকুরটা উঠে দাঁড়াল। সাথে সাথে উল্টা দিক হয়ে দাঁড়ানো লোকটি আমাদের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলে উঠলো আসসালামো আলাইকুম। আমরা তো হতবাক । চেয়ে দেখি আরে এ যে আমাদের রশীদ, মাঝিড়া শাখার ফিল্ড এ্যাসিসট্যন্ট।স্যারও তাকে চিনতেন। তার বাড়ীতো আরো প্রায় দুই মাইল দুরে। তাহলে এত রাতে এখানে দাঁড়িয়ে কেন? শুনলাম তার কাহিনী। সে বাসায় নাকি বলে এসেছিল বাড়ী ফিরতে আজ রাত হবে। রাত ২টার দিকে তার ভাতিজা সাইকেল নিয়ে এসে যেন নিয়ে যায়। তার অপেক্ষাতেই আছে। আমরা কথা বলতে বলতেই তার ভাতিজা সাইকেল নিয়ে হাজির। সে ঐ সাইকেলের পিছনের ক্যারিয়ারে বসে রওনা দিল। স্যার এবার তার ছালামের উত্তর দিয়ে বললেন –অ-আলাইকুম অ সালাম।
আমিও মটর সাইকেল স্টার্ট দিলাম।
এর আগেও আমরা অনেক রাতে বাসায় ফিরেছি । আজ হয়তো একটু বেশী রাত হয়েছিল । গ্রামের শীতের রাত এমনিতেই খুব নির্জন। বাসায় ফিরে স্যারকে এত ভয় পাবার করণ জিজ্ঞাসা করলাম। স্যার বললেন তুমি হয়তো খেয়াল কর নাই পাল পাড়ার সামনে দিয়ে আসতে রাস্তা থেকে একটু দুরে কয়েক জন আমাদেরকে হাত ইশারায় থামতে বলছিল। আমি হাসলাম। কারণ আমি তো জানিই ওদিকে বেশ কিছু নেশাখোর আছে। তবে তারা রাস্থায় এসে অন্যকে আক্রমণ করেছে তারা এমন নজির নাই। (ক্রমশঃ)

বাংলাদেশ সময়: ৮:৪১:৫৮   ৫২১ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #