বুধবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮

প্রবন্ধঃ প্রেমের সরল সমীকরণ - জহিরুল ইসলাম

Home Page » বিবিধ » প্রবন্ধঃ প্রেমের সরল সমীকরণ - জহিরুল ইসলাম
বুধবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৮



প্রবন্ধ সমবয়সী ছেলেমেয়েরা প্রেমের অঙ্ক কষেন নির্ভুল। তারা এতই বুঝেন যেন কোথাও ভুল হওয়ার কোন ই সম্ভাবনা নেই। কারণ এই বয়সটাই যে এমন। বলছিলাম, কিশোর বয়সের কথা। বান্ধবীর প্রেমে পড়া খুব কমন একটা বিষয়।। তার ভ্রমর কালো কেশে চোখ পড়লে যেন আর ফিরতে চায়না। আলতো গালের যুগল ঠোঁটে এমন মিষ্টি মধুর হাসি যেন সে দেখেনি কোথাও। যখন দুষ্টুমিতে দু’চার টি কথা বলে, রাতের ঘুম যেন হারাম। যখন চোখের পাপড়ি মেলে মনে হয় ইশারায় কাছে ডাকছে বারবার। এত আপন! এত চেনা মুখ পৃথিবীতে হয়ত এমন কেউ আর আসবে না কোনদিন। যদি তাকে জীবন সঙ্গী করে পাওয়া না হয় তবে এই জীবনটাই যেন বৃথা। এমন আবেগ উতলে উঠে সাগরের ঢেউয়ের মতো। বিনা পবনেই বয়ে চলে নিরবধি। এই হিসেবের কোথাও কি গড়মিল আছে? নেই। একেবারেই নির্ভুল। বয়সটা ষোল কিংবা সতেরো। মেয়ের বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজনরা বরের অনুসন্ধানে পথ হাঁটছেন দিনরাত। মেয়ের সংসার গুছানোর পালা। আবেগ নয়, বাস্তবে প্রেমের প্রতিফলন ঘটানোর চূড়ান্ত সময় এটা। যে বয়সে সংসারের শ্রেণিভেদ, কায়দা-কানুন, জীবন ও বাস্তবতা বুঝার মতো উপযুক্ততা তৈরি হয়, সে বয়সে তার সেই বন্ধুটি আবেগের গভীরে ডুবন্ত, বাবার কাঁধে ঝুলে খায় মুক্ত হাওয়া। কখন তার বয়স হবে নিজের পায়ে দাঁড়াবার, জীবন ও বাস্তবতা অনুভব করার, সেই সময় বহুদূর। মেয়েরা যে বয়সে সংসারী হয়, ছেলেরা সে বয়সে ছেলে মানুষই রয়ে যায়। তাকে প্রতিষ্ঠিত হতে সময়ের প্রয়োজন আরও অন্তত এক যুগ। এই যুগের ব্যবধানে কতকিছুই না পাল্টে যায়। দেখা যাবে বান্ধবীর ছেলে বা মেয়ে স্কুল গামী কোন রিকশা অথবা বাসে। যখন সে চাকুরির খুঁজে পথ হাটছে দিনরাত। তখন সেই বান্ধবীটি প্রতিষ্ঠিত কারও রাজ্যের রাণী। এই দুই মেরুকে এক করে দেখা বা ভাবা যা শুধুই আবেগ, বাস্তবতার লেসমাত্রও নেই সেখানে। যদি এই আবেগ তাদের গতিপথ রুদ্ধ করে, যুগের ব্যবধানকে একাকার করে দেয়, তখনই ঘটে জীবনের বিপর্যয়। প্রতিটি পদে পদে সৃষ্টি হয় বাধার শৃঙ্খল। জীবন হয় কঠিন থেকে কঠিনতর। প্রেম পালিয়ে বেড়ায় আকাশের নীলিমায়। যা তাদের স্পর্শ করে না কোনদিন। মিলে না সেই আবেগ ময় প্রেমের সরল সমীকরণ। লেখক: জহিরুল ইসলাম প্রভাষক, শাহজালাল কলেজ, জগন্নাথপুর,সুনামগঞ্জ।

বাংলাদেশ সময়: ৭:৫৩:১৫   ৪৯২ বার পঠিত