মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৮

“খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচন-কালীন নিরপেক্ষ সরকার” ইস্যুতে সমস্যা বাঁধতে পারে

Home Page » এক্সক্লুসিভ » “খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচন-কালীন নিরপেক্ষ সরকার” ইস্যুতে সমস্যা বাঁধতে পারে
মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর ২০১৮



ছবি সংগৃহীত

ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নতুন গঠিত বিরোধীজোটের অন্যতম একজন নেতা মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে ফোন করে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপে সম্মতির কথা জানিয়েছেন।

বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদনে এ সংবাদ প্রকাশ করা হয়।

ঐ প্রতিবেদনে মি. মন্টু বলেন, বুধ অথবা বৃহস্পতিবার সরকারের পক্ষ থেকে রাতে খাবার দাওয়াত দেওয়া হতে পারে, তবে স্থান জানাো হয়নি। মি কাদের তার কাছে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি তালিকা চেয়েছেন।

প্রস্তাবের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংলাপে বসতে রাজী হওয়ার সরকারী সিদ্ধান্তে কিছুটা বিস্মিতই হয়েছেন বিরোধী নেতারা।

ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এত দ্রুত সরকার যে সংলাপের প্রস্তাবে সায় দেবে তা তারা ভাবেননি।

মন্ত্রীসভার বৈঠকের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে সংলাপে বসার ঘোষণা আসার পরপরই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা এক বৈঠক করেন।

ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈঠকের পর জোটের দুই শীর্ষ নেতা সংলাপে বসার সরকারী সিদ্ধান্তকে তারা স্বাগত জানাচ্ছেন।

জোটের প্রধান শরিক বিএনপির নেতা মওদুদ আহমেদ বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ঐক্যফ্রন্ট স্বাগত জানাচ্ছে। আমরা এখন সংলাপের দিনক্ষণ ও স্থান জানার জন্য অপেক্ষা করছি।”

মি. আহমেদ বলেন, সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের একটা সুযোগ অন্তত তৈরি হয়েছে।

একই ধরনের কথা বলেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। “সরকার এত দ্রুত আমাদের প্রস্তাবে সাড়া দেবে বুঝিনি। সরকারের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, মাত্র গতকালই (রোববার) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে একটি চিঠিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তাদের সাত-দফা দাবি নিয়ে সরকারকে আলোচনা বসার প্রস্তাব করা হয়।

বাংলাদেশে গত প্রায় তিন দশক ধরে মীমাংসা আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে যে সব চেষ্টা হয়েছে তাতে সাফল্যের নজির নেই বললেই চলে।

ওই সংবাদে জানান হয়, তত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে সৃষ্ট সঙ্কট নিরসনে ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘ মহাসচিব মধ্যস্থতার জন্য তার একজন দূত পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু তা সফল হয়নি। ২০০৪ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মহাসচিব পর্যায়ের দীর্ঘ সংলাপেও কোনো লাভ হয়নি, যার জের ধরে ২০০৭ সালে সেনা-সমর্থিত একটি সরকার ক্ষমতা নিয়ে নেয়। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি যাতে অংশ নেয়, তা নিশ্চিত করতে বিদেশীদের মধ্যস্থতায় মীমাংসার একাধিক চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছিল।

এই প্রেক্ষাপটে এবার কতটা আশাবাদী হতে পারেন তারা?

প্রতিবেদনে মাহমুদুর রহমান মান্না স্বীকার করেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচন-কালীন নিরপেক্ষ সরকার - এই দুটো ইস্যুতে সমস্যা বাঁধতে পারে। “যে কোনো মীমাংসা আলোচনায় গিভ অ্যান্ড টেকের বিষয় থাকে। আমরা ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করবো, আশা করবো সরকারও যেন ইতিবাচক মন নিয়ে আসেন।”

বিএনপি নেতা মওদুদ আহমেদ বলেন, “সমস্যা গভীর…আমাদেরকে অন্তত চেষ্টা করতে হবে।”

ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, রোববার সংলাপে বসার সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে খুবই ইতিবাচক শুনিয়েছে। সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে দেশবাসীর জন্য একটি ‘প্লেজেন্ট সারপ্রাইজ’ দেব, যেটা সারা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে স্বস্তির সুবাতাস বয়ে আনবে।”

ওই সংবাদে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক বিশ্লেষক দিলারা চৌধুরী বলছেন, “বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের মধ্যে যে মাত্রার বৈরিতা এখন তৈরি হয়েছে, তাতে একটি সংলাপে বসে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, তা বিশ্বাস করা কঠিন।”

“খেয়াল করবেন - এমন দিনে সরকার সরকার সংলাপে বসতে রাজী হলো, যেদিন খালেদা জিয়ার সাজার রায় হলো। বিএনপি কি ভাবতে পারবে যে সরকারের মধ্যে আন্তরিকতা রয়েছে? পারবে না।”

খালেদা জিয়ার মুক্তি বিরোধী জোটের সাত-দফা দাবির অন্যতম। জোটের প্রথম দুটো বৈঠকেই বিএনপি নেতারা তাদের নেত্রীর মুক্তির দাবিই সবচেয়ে সরব ছিলেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সরকার সহসা রাজী হবে দিলারা চৌধুরী তা বিশ্বাস করেন না। “সেটা হলে, বিএনপির ওপর তার প্রভাব হবে মারাত্মক, জোটে ভাঙনের হুমকিও উড়িয়ে দেওয়া যায়না।”

বাংলাদেশ সময়: ৯:০৬:১৯   ৩৯৯ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #