বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৮

“রঙ্গে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবন “-জালাল উদদীন মাহমুদ

Home Page » বিনোদন » “রঙ্গে ভরা আমার ব্যাংকিং জীবন “-জালাল উদদীন মাহমুদ
বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর ২০১৮



 

 জালাল উদদীন মাহমুদ

২0তম কিস্তি—
তালোড়া শাখায় ১১ মাস- ১৪ তম পর্ব।

প্রত্যহ ভি সি আর-এ ছবি দেখে ঘুমাই আর রাতে স্বপ্ন দেখি -আমি নায়ক হয়ে নায়িকার সাথে কল্পিত গানের দৃশ্যে নাচছি। লোকেশন কিন্তু সব সময় আমার বাড়ীর ধারের করতোয়া নদী।এক দিন বোধ হয় আলতাফ আলি সুপার মার্কেটও ছিল। এখন ভাবি মানুষ বোধ হয় কখনই তার গন্ডি অতিক্রম করতে পারে না। এমন কি স্বপ্ন দেখার ক্ষেত্রেও । পাশের খাটে থাকা রমিজ সাহেব সকালে বলত আপনি রাতে কি গান গান? কই নাতো। গত রাতেই তো –তুমি যে আমার কবিতা আবার আগের রাতে এই রাত তোমার আমার গাইছেন। লজ্জায় চুপসে গেলাম।স্বপ্ন যে দেখছি সেটা তো শিওর । কিন্তু ঐ গান ? মনকে সাবধান করলাম। রমিজ সাহেবও আর কমপ্লেন করল না। তাতে মনে হয় গান আর হচ্ছে না , কিন্তু স্বপ্ন দেখার বিরতি নাই।
তালোড়া শাখাতেও ঘটকের আনাগোনার বিরতি নাই। তখনও বোধ হয় বায়োডাটা দেবার প্রচলন হয় নাই। তবে ঘটকেরা নানা ভঙ্গিতে তোলা পাত্রীর ছবি দিত। এগুলো নিয়ে আমি ড্রেসিং টেবিলে রাখতাম। রমিজ সাহেব মাঝে মাঝে রসাত্মক কমেন্ট করতো। মানাবে ভাল, চোখটা তো সুন্দর , নাকটা তো আরও সুন্দর , মাথায় অনেক লম্বা চুল, ছবির ব্যাকগ্রাউন্ডটা ভাল –এসব আরকি। মনে হয় ,আমি একটু লাজুক প্রকৃতির ছিলাম –এখনও আছি। সে কারনেই এক কণ্যা সন্তানের জনক রমিজ সাহেবের সাথে এ সব আলাপ জমতো না। তাই নাকি ? ভাল বলেছেন – এ সব ছিল আমার নিত্যকার উত্তর। তবে এ সব আলোচনার ফলেই হোক বা সিনেমা দেখার ফলেই হোক রাতের স্বপ্নে সিনেমার নায়িকারা - ঘটকের দেয়া ছবির রমনীদের দ্বারা রিপ্লেস হতে লাগল।
এসব ঘটনার কোন স্বাক্ষী নাই। অন্য কাউকে এমনকি রমিজ সাহেবকেও স্বপ্নের ব্যাপারে কখনও কিছু বলি নাই। আজ প্রকাশ করতে পেরে একটু হাল্কা লাগছে। কি আশ্চার্য ! ওজন মেপে দেখলাম ওজনও একটু কমে গেছে। আমার স্ত্রী ওজন কমানোর জন্য অনেক কিছু করে। তাকে বললাম ,মনের জমানো কথা খুলে বল –ওজন কমাও । কিন্তু সে গা করলো না। পাঠক-পাঠিকাবৃন্দ, আপনারা চেষ্টা করে দেখতে পারেন –মনের কথা খুলে বলে। এতে আমার মত শরীরের ওজন না কমলেও মন যে হাল্কা হবে এতে কোন সন্দেহ নাই।

 

রফিক সাহেবের বাসায় রমিজ সাহেবের নিয়মিত যোগাযোগ আছে। সৌজন্যতার খাতিরে হলেও আমার একবার যাওয়া দরকার। রমিজ সাহেবকে বললাম আমিও একদিন যাব। বাসার বাচ্চা-কাচ্চাদের জন্য কিছু নেওয়া দরকার। জিগ্যেস করলাম বাসায় আর কে কে থাকে। বলল –ভাবীর একজন বোন থাকে – স্থানীয় কলেজে পড়ে। রমিজ সাহেব কে বললাম আজ থাক , অন্য একদিন না হয় দেখা যাবে। যাওয়া আর হয়ে ওঠেনি।
তালোড়ায় এসে লেখা-পড়া লাটে ওঠার যোগাড়। মনে হয় বি সি এস পরীক্ষা আর দেওয়া হবেনা। রমিজ সাহেব বলল ব্যাংকিং ডিপ্লোমাটা শুরু করা হোক। তখন কে জানতো রমিজ সাহেবের সাথে ব্যাংকিং ডিপ্লোমা পরীক্ষা দিতে যেয়ে এত অদ্ভুত ঘটনা ঘটবে ? (ক্রমশঃ)

বাংলাদেশ সময়: ২৩:২৭:১৯   ৫৪০ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #