রবিবার, ২১ অক্টোবর ২০১৮

ক্লিন ইমেজের মনোনয়ন প্রত্যাশী ড.রফিকুল ইসলাম তালুকদার

Home Page » এক্সক্লুসিভ » ক্লিন ইমেজের মনোনয়ন প্রত্যাশী ড.রফিকুল ইসলাম তালুকদার
রবিবার, ২১ অক্টোবর ২০১৮



ড.রফিকুল ইসলাম তালুকদার

আল-আমিন আহমেদ সালমান,স্টাফ রিপোর্টার বঙ্গ-নিউজঃবাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ২২৪নং আসন সুনামগঞ্জ-১ (ধমর্পাশা-মধ্যনগর-তাহিরপুর-জামালগঞ্জ)। এটি দেশের বৃহত্তর নিবার্চনী এলাকার একটি। ভোটার সংখ্যা প্রায় পৌনে চার লাখ। এর মধ্যে প্রায় সত্তর হাজার সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে, যেটি নৌকার রিজার্ভ ভোটব্যাংক বলে পরিচিত। প্রাকৃতিকভাবে অত্যন্ত নান্দনিক এবং এর অফুরন্ত সম্পদ থাকার পরও এটি অত্যন্ত পশ্চাদপদ নিবার্চনী এলাকা হিসেবে পরিচিত।
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জ-১ আসনে দলের নির্বাচনী পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে এই আসন থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন ক্লিন ইমেজের জনপ্রিয় মনোনয়ন প্রত্যাশী সুনামগঞ্জ জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহবায়ক, গবেষক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, “দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের জনসম্মুখে এভাবে অবস্থান নেয়াটা জননেত্রীর নির্দেশনার বাইরে। এটি দলের জন্য আত্মঘাতী এবং ভোটে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। তবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অফুরন্ত সহায়তার পরও মাননীয় সাংসদ দলকে সংঘটিত করতে পারলেননা, জনমনে চরম বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরী করলেন। এটি উনার জন্য ও দলের জন্য অত্যন্ত দুখ:জনক এবং এর মাধ্যমে তিনি এই আসনে নৌকার নির্বাচনকে কঠিন করে তোললেন, যদিও এটি মূলত নৌকার আসন। ইতিমধ্যে আমরা তিনটি উপজেলা নির্বাচনেই হারলাম। সাধারণ মানুষ যেটা অনুভব করে এবং বলাবলি করছে, এটা ঠিক যে এখন সত্যিকারের ক্লিন ইমেজের অধিবাসী প্রার্থী ছাড়া এআসনটি ধরে রাখা কঠিন হবে।”
আপনি জনগণের কাছে কতটুকু পৌঁছতে পেরেছেন? এই প্রশ্নের জবাবে ড. রফিকুল তালুকদার বলেন, “আমি ধর্মপাশা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ ও তাহিরপুরের বিভিন্ন জায়গায়, সুনামগঞ্জ-১ আসনের আনাচে-কানাচে, হাট-বাজার, ইউনিয়ন, গ্রামে-গঞ্জে সব জায়গায় গিয়েছি। মানুষের ভালবাসা, আন্তরিকতা ও অতিথ্যেয়তা আমাকে অবিভুত করেছে। মানুষের মনের কথা, বেদনার কথা শুনেছি। সবচেয়ে সম্পদশালী ও অত্যন্ত নান্দনিক একটি হাওড় জনপদের মানুষের যাপিত জীবন ও জীবিকায় সুযোগের অপ্রতুলতা ও বঞ্ছিত হওয়ার কথা, বন্যা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বঞ্ছনার কথা, এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামোগত পশ্চাদপদতার কথা শুনেছি। মানুষ এখন উচ্চশিক্ষিত, প্রতিশ্রুতিশীল তরুন নেতৃত্ব চায়।”
জনগণের কাছে আপনার প্রতিশ্রুতি কি? এই প্রশ্নের জবাবে ড. রফিকুল তালুকদার বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ ও ২০১৪ সালে ক্ষমতায় এসে এই হাওড় অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য অফুরন্ত সহায়তা করেছেন। একই সাথে বিপুল সম্পদ-সহায়তা প্রদান করেছেন। তাই এই সময়ের মধ্যে উন্নয়ন এখানে উল্লেখযোগ্য। আমি বিশ্বাস করি যে এখনও কৌশলগতভাবে এখানে অনেক কিছু করার আছে এবং সেগুলো জরুরি। যেমন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ভঙ্গুরতা, বঞ্চনা ও সামাজিক অবিচার থেকে সাধারণ মানুষের মুক্তি, আন্তঃউপজেলা ও উপজেলা-জেলার মৌলিক রাস্তাঘাট এবং রেলওয়ে নেটওয়ার্ক স্থাপনসহ ভালো পরিবহন ব্যবস্থার সংযোজন, মানসম্মত শিক্ষা-চিকিৎসা ও সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত কৃষি-সেচ-বাঁধসহ অন্যান্য পরিষেবা নিশ্চিত করা, এবং মধ্যনগর থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা। এখানে এই কাজগুলো করার জন্য জননেত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো ক্ষমতায় আনতে হবে। এজন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
আপনার দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? জানতে চাইলে ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, “জাতির জনকের কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন দূরদর্শী নেতা, বিশ্ব শীর্ষ দশ নেতৃত্বের অন্যতম। তিনি মেধাবী ও প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ নেতৃত্ব পছন্দ করেন এবং নেতৃত্বের বিকাশ করতে জানেন ও ভালবাসেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও দল যদি আমাকে মনোনয়ন দান করেন,আমি মানুষের কথা, ভালবাসা ও প্রতিশ্রুতির প্রতি আস্থা রেখে বলছি সুনামগঞ্জ-১ আসনে নৌকার বিজয় ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে সুনিশ্চিত ইনশা আল্লাহ্‌। আর বিজয়ী হলে আমি আমার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সাংগঠনিক কর্মদক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নিষ্ঠার সাথে দল, এলাকা ও দেশের জন্য কাজ করব এবং তাৎপর্যপূর্ণ আবদান রাখতে পারব বলে বিশ্বাস করি।”
উল্লেখ্য ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার একজন উন্নয়ন, স্থানীয় শাসন, সুশাসন ও রাজনৈতিক অর্থনীতি বিষয়ক গবেষক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তিনি দেশে ও বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও গবেষণা করেন। তিনি ডেইলিস্টার, ঢাকা ট্রিবিউন, ডেইলিসান, ইন্ডিপেনডেন্ট, বাংলাদেশ প্রতিদিন, সমকাল, আমাদের সময় ও কালেরকণ্ঠে নিয়মিত কলাম লেখেন। একাডেমিক ক্ষেত্রে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠযোগ্য তিনটি বই, আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশিত নয়টি পিয়ার রিভিউড জার্নাল প্রবন্ধ ও চারটি বইয়ের অধ্যায়ের লেখক। তিনি জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট এবং বাংলাদেশ সরকারের জন্য কাজ করেছেন। তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এবং সুশাসন, পাবলিক সেক্টর রিফরমস, উন্নয়ন ও রাজনৈতিক অর্থনীতি সম্পর্কে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কনসালটেন্সি করেন।
তিনি ঢাকা কলেজের সাউথ হোস্টেল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল হক হল থেকে ছাত্রলীগ করতেন। তিনি ১৯৯৫-৯৬ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনার রাজপথের আন্দোলনের সাথী ছিলেন। তার সমসাময়িক ছাত্র নেতারা হলেন বাহাদুর ব্যাপারী, দেলোয়ার হোসেন, মনিরুজ্জামান মনির, শিমুল ইসতিয়াক, রিজভী আলম ও অন্যান্য। তিনি আন্তর্জাতিক পোস্ট গ্রাজুয়েট কার্য নির্বাহী কমিটি নিডা-ব্যাংকের চেয়ারপার্সন ছিলেন। কর্মজীবনে তিনি সক্রিয়ভাবে বঙ্গবন্ধু পরিষদ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদ, সুনামগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪-৯৫ শিক্ষাবর্ষের যুগ্মআহ্বায়ক।
তার জন্ম ১লা মার্চ ১৯৭৮ সালে সুনামগঞ্জ জেলার ধর্মপাশা উপজেলার মহদীপুর গ্রামের তালুকদার বাড়িতে, যেখানে ১৯৭১ সালে ৯ মাস ব্যাপী মোহনগঞ্জ ও নেত্রকোনা অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ছিল। তার ভাই ধর্মপাশা উপজেলা যুবলীগের সদস্য, ভাতিজা ধর্মপাশা সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এবং ভাগ্নে নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। তার দাদা মক্রম আলী তালুকদার ছিলেন ব্রিটিশ আমলের গ্রাম পঞ্চায়েত, চাচা অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক তালুকদার একজন সমাজসেবী, বাবা মোঃ নুরুল ইসলাম তালুকদার একজন সাধারণ কৃষক ও সমাজসেবী। তার মাতা দিলারা ইসলাম তালুকদার একজন শিক্ষানুরাগী রত্নগর্ভা। মায়ের হাতেই তার এবং তার ভাই-বোনদের পড়াশুনা শুরু। তার ছয় ভাই-বোনের প্রত্যেকেই সুশিক্ষিত। প্রখ্যাত বাউল সাধক উকিল মুন্সি ছিলেন তার মাতামহীর পিতা। তিনি তৃণমুল ও কেন্দ্র সকলের দোয়া ও সহযোগিতা প্রত্যাশী।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩২:২০   ৬৫১ বার পঠিত