সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সমাবেশে বিএনপির ছয়দফা দাবি

Home Page » এক্সক্লুসিভ » সমাবেশে বিএনপির ছয়দফা দাবি
সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮



---স্টাফ রিপোর্টার বঙ্গ-নিউজঃ- কারাগারে  যাওয়ার আগে খালেদা জিয়া যে ঐক্য গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন, সে ঐক্য গড়ে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন বিএনপি নেতারা।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে এক মানববন্ধনে বিএনপি নেতারা এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগকে দেউলিয়া রাজনৈতিক দল উল্লেখ করে বলেন, ‘এখন দরকার ঐক্য। ইস্পাত কঠিন ঐক্য। দল ও জনগণের মধ্যে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য তৈরি করে এই দানব সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’ তিনি উল্লেখ করেন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার আগেই এ ঐক্যের কথা বলে যান।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার আগে আমাদের সকল দাবি পূরণ করতে হবে। অন্যথায় জনগণ একটি জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারের পতনের লক্ষ্যে আন্দোলন করবে।’ এ ছাড়া তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হতে পারে না। হতে দেওয়া হবে না।
নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি আবারও নিরপেক্ষ সরকার গঠন ও সংসদ ভেঙে দেওয়াসহ কয়েকটি শর্তের দাবি তোলেন। অন্য দাবিগুলো হলো খালেদা জিয়ার মুক্তি, তফসিল ঘোষণার আগে সরকারের পদত্যাগ, নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও নির্বাচন কমিশনের পুনর্গঠন।
খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচন করে এ সরকারকে উৎখাত করতে চান বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। তিনি কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে খালেদা জিয়ার মতো ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে হওয়া এই মানববন্ধনে বিএনপি নেতারা আবারও খালেদার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নির্বাচনের আগে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি চাচ্ছি। এটা কোনো করুণা চাচ্ছি না, কোনো দয়া ভিক্ষা চাচ্ছি না। তাঁর যেটা প্রাপ্য-তিনি জামিন পেয়েছেন। সেই জামিনে তাঁকে মুক্ত করা হচ্ছে না।’
বিএনপিকে ধ্বংস করার জন্য সরকার সারা দেশে ভৌতিক মামলা করছে বলে অভিযোগ করেন দলের মহাসচিব। তিনি জানান, তাঁরা খবর পেয়েছেন ১ লাখ মানুষকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার হয়েছে ১২ হাজার। তিনি বলেন, গুম, খুন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে ক্ষমতায় থাকা যায় না।
মানববন্ধনে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব
বিএনপির আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, খালেদা জিয়াকে নাগরিক হিসেবে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাঁর সুচিকিৎসার দাবি জানিয়ে বলেন, খালেদাকে মুক্ত করে নির্বাচনে গিয়ে তাঁকে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী করবেন।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মো. শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, সেলিমা রহমান, শামসুজ্জামান দুদু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, এনপিপির সভাপতি ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকনসহ বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ।
আজ মানববন্ধন স্থলের আশপাশ থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান জানান, সেগুন বাগিচা থেকে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। তবে কত জন সেটা তিনি জানাননি।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার এড়াতে মানববন্ধন শেষের ১৫ মিনিট আগে হুড়োহুড়ি করে মানববন্ধন স্থল ত্যাগ করেন। সাদা পোশাকে থাকা গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা মানববন্ধন থেকে বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে। এ বিষয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, মানববন্ধন থেকে ৪০-৫০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছ থেকে মৌখিকভাবে বিএনপি সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা মানববন্ধনের অনুমিত পায়। আজ সকাল ১০টা থেকেই দলে বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা মানববন্ধন স্থলে আসা শুরু করে। একপর্যায়ে প্রেসক্লাবের সামনের সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাঁজোয়া যান ও জলকামানসহ পুলিশের উপস্থিতিও ছিল অনেক।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:৪৬:৪৪   ৪৪২ বার পঠিত