বুধবার, ১৫ আগস্ট ২০১৮

বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে

Home Page » জাতীয় » বিদেশে পলাতক বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকরের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে
বুধবার, ১৫ আগস্ট ২০১৮



ছবি সংগৃহীত  বঙ্গ-নিউজ: আজ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস। স্বাধীনতার স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৩তম শাহাদতবার্ষিকী। ১৯৭৫ সালের শোকাবহ এই কালোদিবসে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে।

কিন্তু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলার রায় ঘোষণার পর, প্রায় ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও বিদেশে পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা এখনো সম্ভব হয়নি।

যদিও খুনিদের ব্যাপারে কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আপত্তি নেই। তবুও সেখানে পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আইনগত জটিলতাই এখন বড় বাধা।

তবে সরকারের নানা উদ্যোগে এক্ষেত্রে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত থাকলে বর্তমান সরকারের মেয়াদকালেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলে জানান কূটনৈতিকরা।

২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর সারাবিশ্বের আলোচিত এই হত্যা মামলার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির মধ্যে, কারাগারে থাকা ৫ খুনির ফাসিঁর আদেশ কার্যকর এবং একজন বিদেশে মারা গেলেও, বাকি ৬ জন নয় বছর ধরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এদের মধ্যে নূর চৌধুরী কানাডা এবং এএম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে। বাকি ৪ জন পাকিস্তানে থাকার কথা জানা গেলেও সরকারি ভাবে এখনো তা নিশ্চিত করেনি দেশটি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, কানাডা থেকে নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে দেশটির সরকারের আপত্তি না থাকলেও আইনগত জটিলতাই এক্ষেত্রে বড় বাধা। তবে রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে আইনগত বাধা না থাকায় যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘রাশেদ ও নূর চৌধুরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে অনেক দূর এগিয়েছি। সরকারি পর্যায়ে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, তাদের বিচারের রায় কার্যকর করতে সেই রাষ্ট্রগুলির সহায়তা করা উচিত। এই বিষয়ে কোনো দ্বিমত নেই। যেখানে সমস্যা তা হচ্ছে সেই দেশের আইন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনে জটিলতা নেই, কিন্তু কানাডাতে যেটি আছে, তা হচ্ছে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো আসামিকে তারা ফেরত পাঠান না।’

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘নূর চৌধুরিকে বাংলাদেশে ফেরত আনলে তাকে ফাঁসির কাস্টডিতে ঝুলতে হবে। এটা সে কানাডার আদালতে বলে তাদের প্রটেকশন চেয়েছে। আমরা সেই জায়গায় লিগাল রুটে গিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা প্রতিনিয়ত আলাপ করছি এবং কোনো ডিজআগ্রিমেন্ট নেই।’

এ বিষয়ে সাবেক কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমানের মতে, কানাডার বিদ্যমান আইনেই উদ্যোগ নেয়া হলে বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকেও ফেরত আনা সম্ভব।

তিনি বলেন, ‘তাকে যাবদজ্জীবন দিয়ে কানাডা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। রাশেদ আমেরিকাতে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলো কিন্তু পাইনি। আদালতে সে হেরে গেছে। আশা করছি, নির্বাচনের আগে আমরা তাকে পাবো।’

বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এসব খুনীদের ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, কানাডার আইনে নিরাপত্তা চেয়ে নূর চৌধুরী আবেদন করলেও সেখানকার সরকার তার পক্ষে রায় দেয়নি বলেও জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ১২ নভেম্বর- ২৯ দিনের শুনানির পর চূড়ান্ত আপিল শুনানি শেষ হয় এবং আদালত ১৯ নভেম্বর রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। ওইদিন (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে হাইকোর্টের দেয়া রায় বহাল রেখে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামির দায়ের করা আপিল আবেদন খারিজ করা হয়। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে আসামীদের রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে ২৮ জানুয়ারি ৫ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতিকে দায়মুক্ত করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০:১৯:১৭   ৪৫৮ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #