বৃহস্পতিবার, ৯ আগস্ট ২০১৮
পুলিশের প্রায় দুই হাজার সদস্য কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়,স্থানীয়দের মধ্যে আতংক
Home Page » জাতীয় » পুলিশের প্রায় দুই হাজার সদস্য কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায়,স্থানীয়দের মধ্যে আতংক
বঙ্গ-নিউজ: সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে ডিএমপির বিভিন্ন অপরাধ বিভাগ, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও রিজার্ভ পুলিশের প্রায় দুই হাজার সদস্য কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় জড়ো হন।
এর পরে শুরু হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কতৃক রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসহ আশপাশে অভিযান ‘ব্লক রেইড’। । বুধবার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টায় এ অভিযান শুরু হয়। হঠাৎ বিপুল সংখ্যক পুলিশ দেখে স্থানীয়দের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ অভিযান শেষ হয় বলে জানায় পুলিশ।
এসময় ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামন মিয়া, অতিরিক্ত-কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন, যুগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মুস্তাক আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা পুলিশ সদস্যদের ব্রিফ করেন। পরে পুলিশ সদস্যরা ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে অভিযান শুরু করেন। অভিযানের আগেই ঘটনাস্থলে আনা হয় পুলিশের মোবাইল কমান্ড সেন্টার (বিশেষ গাড়ি)।
বসুন্ধরা সংলগ্ন এলাকায় কেন এই অভিযান
এ এলাকায় তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এ এলাকায় মেস ভাড়া করে থাকেন। তাদের মধ্যে ছদ্মবেশে কিছু দুর্বৃত্ত এ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, বিভিন্ন ইস্যুতে তারা রাজপথে নেমে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের ওপর হামলা করে। সর্বশেষ সোমবার নিরাপদ সড়কের দাবিতে নামা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে ওই সব দুবৃর্ত্ত সড়কে নেমে ব্যাপক ভাংচুর ও পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এ অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয় বলে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রোববার ও সোমবার বসুন্ধরা আবাসিকসহ আশপাশ এলাকায় সন্দেহভাজন অনেকেই আন্দোলনের নামে মাঠে নেমে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হামলা করেছে পুলিশের ওপর।
তিনি আরও বলেন, গোয়েন্দা তথ্যে এ এলাকায় জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তারা ভবিষ্যতে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে পারে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।
অভিযান শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, মহানগরীকে নিরাপত্তা দিতে চলমান কাজের অংশ হিসেবে আমাদের এ অভিযান। পুলিশের কাজ হল জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া। এ লক্ষে আমরা বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করি। তল্লাশির উদ্দেশ্য হলো- যাতে বাইরে থেকে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী এসে নাশকতার উদ্দেশ্যে লুকিয়ে থাকতে না পারে। তিনি বলেন, আজ আমরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, নর্দা-কালাচাঁদপুর এবং নতুন বাজার এলাকায় আভিযান চালিয়েছি।
হঠাৎ কেন এই অভিযান এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এখানে অভিযান চালানোর কারণ হলো, আপনারা দেখেছেন- হলি আর্টিজানের হামলাকারীরা এখানে বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করেছিল। আমাদের কাছে বিভিন্ন সময় নানা ধরণের গোয়েন্দা আসে। প্রিভেনন্টিভ ব্যবস্থা হিসেবে এ ধরণের অভিযান চালাই। এ অভিযানকে আমরা ‘ব্লক রেইড’ হিসেবে উল্লেখ্য করি। আজ যে অভিযান চালিয়েছি তা এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। যেখানেই নাশকতাকারীদের অবস্থানের তথ্য পাওয়া যাবে সেখানে আমাদের অভিযান চলবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার আরও জানান, চলমান ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এ অভিযানের কোনো সম্পৃক্তিতা নেই। ছাত্র আন্দোলনে যারা নাশকতা করেছে, নাশকতার পরিকল্পনা করেছে, যারা উসকানি দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি জানান, এ অভিযানে এক হাজার পোশাকধারী পুলিশ, বিপুল সংখ্যক সাদা পোশাকধারী এবং গোয়েন্দা পুলিশ অংশ নেয়।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৫৯:৫৮ ৬২৯ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম