মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই ২০১৮

রাসিক নির্বাচনে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বিজয়ী

Home Page » জাতীয় » রাসিক নির্বাচনে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বিজয়ী
মঙ্গলবার, ৩১ জুলাই ২০১৮



 

ফাইল ছবি বঙ্গ-নিউজ: রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন নৌকা প্রতীক নিয়ে ১,৬৬,৩৯৪ ভোট পেয়ে বিজয় লাভ করেছে। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৭৮,৪৯২ ভোট। রাজশাহীতে মোট ভোটকেন্দ্র ১৩৮টি। অনানুষ্ঠানিকভাবে ১৩৮টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বিএনপি প্রার্থীর চেয়ে ৮৭৯০২ বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী।

আজ সোমবার (৩০ জুলাই) সকাল আটটা থেকে বিকাল চারটা পর্যন্ত নতুন মেয়র নির্বাচনে ভোট দেন রাজশাহীবাসী। এখানকার ভোটে বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। কয়েকটি স্থানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। যার ফলে কয়েকটি কেন্দ্র বন্ধও করেছে প্রিজাইডিং অফিসার।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনে অভাবনীয় আরেকটি ঘটনা ঘটিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। সচরাচর সব প্রার্থীই সকালবেলা ভোট দিয়ে কেন্দ্র পরিদর্শনে বের হন। তবে বুলবুল বেলা দুইটা পর্যন্ত নিজের ভোটই দেননি। তার আগেই এক কেন্দ্রের মাঠে তিনি অভিযোগ এনে বসে পড়েন।

সোমবার সকাল আটটায় রাজশাহী মহানগরীতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা বিরতিহীনভাবে চলে বিকাল চারটা পর্যন্ত। ভোট শুরুর অনেক আগে থেকেই এই নগরীর অনেক কেন্দ্রের সামনে ভিড় জমতে থাকে ভোটারদের। নারী-পুরুষরা আলাদা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন ভোটকেন্দ্র খোলার। তাদের মধ্যে উৎসবের আমেজও দেখা গেছে।

জাতীয় নির্বাচনের আগে এই সিটির নির্বাচনে চোখ ১৬ কোটি মানুষের। শুধু দেশের মানুষের চোখই নয়; দেশি-বিদেশি তথা আন্তর্জাতিক মহলেরও হাজারো চোখ এই নির্বাচনের দিকে। নির্বাচনে কোন দল বিজয়ী হবে সেটা দেখার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন জাতিকে কেমন নির্বাচন উপহার দেয় সেটাই দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে মানুষ।

নির্বাচনকে ঘিরে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে রাজশাহী সিটি এলাকায়। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠেয় এই নির্বাচনকে তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

এ ব্যাপারে ইসি সচিবালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছে। কিছু কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছে আমরা সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছি।

ইসি সচিব জানান, গাজীপুরের মতো এই সিটিতেও ভোটগ্রহণ পরিস্থিতির তথ্য তাৎক্ষণিক জানার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে দুই ঘণ্টা পরপর প্রয়োজনীয় সার্বিক তথ্য কমিশন সচিবালয়কে জানিয়েছে। আমরাও তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিন সিটির নির্বাচনী এলাকায় সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসারসহ ২২ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে।

প্রতিটি সাধারণ ওয়ার্ডে পুলিশ, এপিবিএন, ও ব্যাটালিয়ান আনসারদের সমন্বয়ে মোবাইল টিম, প্রতি তিন ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স, প্রতি সাধারণ ওয়ার্ডে র্যাবের একটি টিম, প্রতি দুইটি সাধারণ ওয়ার্ডে এক প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন ছিল।

মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটগ্রহণের দিন এবং তার আগের দুইদিন ও পরের একদিনসহ মোট চারদিন মোতায়েন থাকবে। ভোটগ্রহণের পরের দুইদিন পর্যন্ত প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া নির্বাচনী অপরাধ বিচারার্থে আমলে নেয়ার জন্য প্রতি তিনটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত আছেন।

এ ছাড়া নির্বাচনের নিরাপত্তায় ভোটগ্রহণের দুদিন আগে থেকে তিন সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে র‌্যাবের একটি টিম এবং প্রতি দুটি ওয়ার্ডে এক প্লাটুন করে ১৫ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্য মোতায়েন করা হয়। এরা নির্বাচনের পরের দিন পর্যন্ত এলাকায় দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানা গেছে। এছাড়া আরও চার প্লাটুন করে বিজিবি রিজার্ভ রাখা হয়েছে।

রাজশাহী সিটিতে ৩০টি ওয়ার্ডের ১৩৮ ভোটকেন্দ্রে কক্ষের সংখ্যা ১০২৬টি। এসব ভোটকেন্দ্রে ১৩৮ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ১০২৬ কক্ষে সম-সংখ্যক সহকারি প্রিসাইডিং অফিসার এবং কক্ষে দুইজন করে ২০৫২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।

এ সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন; যার মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন ও নারী ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন। তবে, পুরুষের চেয়ে এখানে নারী ভোটার বেশি। এ সিটিতে মেয়র প্রার্থী ছিলেন ৫ জন।

বাংলাদেশ সময়: ৮:০৬:৩৩   ৫১১ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #