শনিবার, ৩০ জুন ২০১৮
আর্জেন্টিনার বিদায়
Home Page » অর্থ ও বানিজ্য » আর্জেন্টিনার বিদায়
বঙ্গ-নিউজঃ ’এমবাপ্পে’ শব্দটির মানে করলে দাঁড়ায়; জীবনের গান, গতি এবং দশের মঙ্গল। ফ্রান্স তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে দেশের জন্য গান, গতি এবং মঙ্গল তিনই উপহার দিলেন। মাঠে যেমন গতি দেখিয়েছেন তেমনি স্টেডিয়ামে ধ্বনি তুলেছেন মুহুমুহু গানের। ফ্রান্সকে নিয়ে গেছেন শেষ আটে। করেছেন জোড়া গোল। তরুণ এ তারকা ম্যাচের শুরুতেই আদায় করেছেন এক পেনাল্টি।
তার বয়স মোটে ১৯। এখনো মুখের কচি ভাব যায়নি। মুখে গজায়নি দাঁড়ি-গোঁফ। সেই এমবাপ্পে বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন আর্জেন্টিনা-ফ্রান্স ম্যাচে। দলকে এনে দিয়েছেন ৪-৩ গোলের জয়।
রাশিয়া বিশ্বকাপে শনিবার দ্বিতীয় রাউন্ডের উদ্বোধন হয় ফ্রান্স-আর্জেন্টিনা ম্যাচ দিয়ে। পুরো ম্যাচে ছিল দারুণ রোমাঞ্চ। ফ্রান্স গোল দিয়ে এগিয়ে গেছে তো আর্জেন্টিনা ফিরেছে সমতায়। আবার এগিয়ে আর্জেন্টিনা তো ফ্রান্স ফিরেছে সমতায়। ৪-২ গোলে ফ্রান্স এগিয়ে যাওয়ার পর ৯৩ মিনিটে আবার আর্জেন্টিনা গোল ব্যবধান কমালে রোমাঞ্চ ফিরে আসে ম্যাচে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৪-৩ গোলে হেরে রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিল আর্জেন্টিনা। ফ্রান্স উঠে গেছে শেষ আটে।
আর্জেন্টিনার বিপক্ষে এমবাপ্পে ছিলেন অসাধারণ ফর্মে। দারুণ গতি দিয়ে আর্জেন্টিনার রক্ষণে একাই কাঁপন ধরান তিনি। সঙ্গে দেখিয়েছেন পায়ের দারুণ নাচন। তাকে কেন ভবিষ্যতের জিদান কিংবা ব্যালড ডি’অর জয়ী বলা হয় তা তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে এই ম্যাচে। মেসির সঙ্গে তুলনায় তার জাতীয় দলের সতীর্থরা বলেছেন, এখনো সে সময় আসেনি। তবে সময় যে আসবে তার আভাস ভালো মতোই দিয়েছেন এই তরুণ।
ম্যাচের ১৩ মিনিটের মাথায় এমবাপ্পে দারুণ কাউন্টার অ্যাটাক থেকে দুর্দান্ত গতি নিয়ে আর্জেন্টিনা বক্সে ঢুকে পড়েন এমবাপ্পে। তাকে ফাউল করেন নাইজেরিয়া ম্যাচে গোল করে নায়ক বনে যাওয়া রোহো। পেনাল্টি পেয়ে যায় ফ্রান্স। তা থেকে গোল করে ১-০ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। আর রোহো পান হলুদ কার্ড। এরপর ৪১ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শট নিয়ে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান ডি মারিয়া। জমে যায় ম্যাচ।
দ্বিতীয়ার্ধের শরুতেই মারকেদোর গোলে ২-১ গোলের লিড নেয় আর্জেন্টিনা। ৪৮ মিনিটে মেসির দারুণ শটে পা ছুঁইয়ে গোল করেন মারকেদো। কিন্তু বেশিক্ষণ তাদের লিড ধরে রাখতে দিলেন না ফ্রান্স ডিফেন্ডার প্যাভার্ড। ৫৭ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক শটে গোল করে ২-২ সমতা করে ফেলেন এই লেফট ব্যাক। আর তার সাত মিনিট পরে আলোয় চলে এলেন এমবাপ্পে।
ম্যাচের ৬৪ মিনিটে ফ্রান্সের সাজানো আক্রমণে কিছুটা গোলরক্ষকের ভুলে গোল পেয়ে গেলেন এমবাপ্পে। পাল্টা আক্রমণে ৩-২ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। এরপর ৬৮ মিনিটে আবার এমবাপ্পে শো। নিজের দ্বিতীয় গোল এবং আর্জেন্টিনার জালে চতুর্থ গোল দিয়ে দেন পিএসজি তারকা এমবাপ্পে।
এরপর ৪-২ গোলে হারের মুখে থাকা আর্জেন্টিনা ম্যাচের ৯৩ মিনিটে আবার রোমাঞ্চ ফেরান। মেসির ক্রস থেকে ভালো একটি হেড করে ব্যবধান ৪-৩ করেন আগুয়েরো। এই হারে আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নিয়েছে। আর ফ্রান্স উঠে গেছে শেষ আটে। ম্যাচে অবশ্য আর্জেন্টিনা ৬০ ভাগ বল পায়ে নিয়ে খেলেছে। কিন্তু হেরে গেছেন ফ্রান্সের দারুণ গতি এবং কাউন্টার অ্যাটাকের কাছে। গোলের লক্ষ্যে তারা পাল্টা আক্রমণ থেকে আটটি শট নেয়। আর আর্জেন্টিনা শট নিতে পেরেছে পাঁচটি। তার মধ্যে চারটি শট তারা গোলে রেখেছে। আর্জেন্টিনা তা থেকে গোল পেয়েছে ৩টি।