শনিবার, ৯ জুন ২০১৮
ডা. জাহিদের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে অনেক তথ্য দিয়েছে
Home Page » এক্সক্লুসিভ » ডা. জাহিদের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিনে অনেক তথ্য দিয়েছে
বঙ্গ-নিউজ: অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার চিকিৎসক জাহিদুল আলম কাদিরের রিমান্ডের দ্বিতীয় দিন ছিল গতকাল শুক্রবার। এরই মধ্যে অনেক তথ্য তিনি দিয়েছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদকারী এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত তিনজন সন্ত্রাসীর কথা বলেছেন কাদির। তাদের মধ্যে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বাসিন্দা পেশাদার কিলার তাজুল মাঝেমধ্যেই তাঁর কাছ থেকে অস্ত্র ভাড়ায় নিতেন। র্যাবের সোর্সের কাছে অস্ত্র বিক্রি করতে গিয়ে এই তাজুল একবার গ্রেপ্তারও হন। জাহিদ তাঁর বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া ১৫টি বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও এক হাজার ৬২২ রাউন্ড গুলি প্রসঙ্গে বলেছেন, এগুলোর বেশির ভাগ তিনি ময়মনসিংহের খান আর্মসের কর্ণধার মো. শাহাবুদ্দিনের কাছ থেকে কিনেছেন। এ ছাড়া কিছু অস্ত্র প্রতিবেশী একটি দেশসহ বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করেন।
জাহিদ আরো বলেছেন, প্রথম স্ত্রী চলে যাওয়ার পর দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ময়মনসিংহ শহরেই থাকতেন। সেখান থেকে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, ফেনীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরের পাশাপাশি থানা শহরেও চিকিৎসক হিসেবে মানুষকে সেবা দিয়েছেন। তবে এই সেবা দেওয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসীচক্রের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। তিনি কখনো সরকারি চাকরির চেষ্টা করেননি।
জিজ্ঞাসাবাদে জাহিদ বলেছেন, তিনি উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময়ই অবৈধ অস্ত্রের কারবারে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯৩ সালে তিনি অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়ে কিছুদিন কারাগারেও ছিলেন। অতি সম্প্রতি সিলেটে একজন সংসদ সদস্যকে ‘ভাড়ায় খুন করার ছক’-এর ব্যাপারে জানতে চাইলে জিজ্ঞাসাবাদে ডা. জাহিদ বলেন, তাজুলের সঙ্গে আলাপ করেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি।
জিজ্ঞাসাবাদে ডা. জাহিদ বলেছেন, প্রায় ১৬ বছর ধরে অস্ত্র ও অস্ত্রধারীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা তাঁর। যোগাযোগ ছিল দেশ-বিদেশের অনেক অস্ত্র ব্যবসায়ী ও ভাড়াটে কিলারের সঙ্গে। নতুন অস্ত্র সংগ্রহ করে পুরনো অস্ত্র বিক্রি করে তিনি অর্থের জোগান বাড়াতেন। এই সময়ের মধ্যে সংসদ সদস্যসহ অনেক প্রভাবশালী লোকজনকে ভাড়ায় হত্যা ও হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, মা-বাবা, ভাই-বোন, এমনকি বন্ধুবান্ধবের সঙ্গেও তাঁর তেমন কোনো যোগাযোগ ছিল না। কিলার তাজুল সম্পর্কে তিনি বলেন, জামিনে বের হয়ে তাজুল একই পেশায় ফিরে গেলে ডা. জাহিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরো বাড়ে। তাজুলের সঙ্গে অনেক ‘কন্ট্রাক্ট কিলিংও’ করেছেন ডা. জাহিদ। এ ছাড়া ময়মনসিংহের আরো দুজন সন্ত্রাসীর সঙ্গে যোগাযোগ থাকার কথা বলেছেন ডা. জাহিদ। তারাও বিভিন্ন সময়ে তাঁর কাছ থেকে ভাড়ায় অস্ত্র নিয়েছে।
তদন্তসংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা কর্মকর্তারা ডা. জাহিদ সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, কুষ্টিয়ার পোড়াদহের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান জাহিদ। তাঁর বাবা একসময় রেলওয়ের বড় কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর বড় ভাই একজন প্রকৌশলী এবং তাঁর স্ত্রীও একজন চিকিৎসক। এ ছাড়া তাঁর বোনদের সবাই উচ্চশিক্ষিত। বিপথে যাওয়ায় বরাবরই পরিবার তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত বলেও জানান জাহিদ।
বাংলাদেশ সময়: ৮:৩১:২১ ৬৫৫ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম