শুক্রবার, ৮ জুন ২০১৮

গণজাগরণ মঞ্চের ইমরানকে আটক করে র‌্যাব-৩,পরে ছেড়ে দেয়,মাঝখানে যা হয়েছিল

Home Page » জাতীয় » গণজাগরণ মঞ্চের ইমরানকে আটক করে র‌্যাব-৩,পরে ছেড়ে দেয়,মাঝখানে যা হয়েছিল
শুক্রবার, ৮ জুন ২০১৮



 

ছবি সংগৃহীত  বঙ্গ-নিউজ:  চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে বন্দুকযুদ্ধে প্রাণহানিতে বিচার বহির্ভুত হত্যা দাবি করে বুধবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভের ডাক দেয় গণজাগরণ মঞ্চ। বিকাল সাড়ে চারটার দিকে কর্মসূচির আগে ইমরানকে আটক করে র‌্যাব-৩ এর একটি দল। প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা পর রাত ১১টার কিছু সময় পর ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।

সে সময় র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক এমরানুল হাসান জানিয়েছিলেন, অনুমতি ছাড়া সেখানে (শাহবাগ) সমাবেশ করার কারণে তাকে (ইমরান) আটক করা হয়েছিল। পরবর্তীতে এই বিষয়ে সতর্ক থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন। পরে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।


এদিকে আজ বৃহস্পতিবার (৭ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে ডা. ইমরান এইচ সরকার বুধবার বিকালে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে রাতে ছেড়ে দেয়া পর্যন্ত পুরো ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন সাংবাদিকদের সামনে।  ছবি সংগৃহীত

তিনি বলেন, ‘র‍্যাব কর্মকর্তারা তার সঙ্গে কোনো আপত্তিকর কথোপকথন বা আলোচনা করেননি। তার সঙ্গে তারা সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করেছেন।’

তবে র‌্যাব কার্যালয়ে নেয়ার সময় কালো কাপড়ে চোখ-মুখ বাঁধা হয়েছিল বলে অভিযোগও করেছেন গণ জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র। ইমরানের অভিযোগ, ‘তাকে আটকের পর কালো কাপড় দিয়ে চোখ-মুখ বেঁধে হাতকড়া পরানো হয়। পরে সে অবস্থাতেই তাকে র‌্যাব-৩–এর কার্যালয়ে নেয়া হয়।’

‘তবে র‌্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলে কালো কাপড় ও হাতকড়া খুলে দেয়া হয়। আর তারা তার সাথে আলোচনা করতে চান।’

‘র‍্যাব কর্মকর্তারা জানতে চান- আমি কেন, কি উদ্দেশ্যে আন্দোলন করছি? আমি তাদের বলি- আমাদের অবস্থানও মাদকের বিরুদ্ধে কিন্তু বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড আমরা সমর্থন করি না। তখন তারা আমাকে অভিযানের পক্ষে যুক্তি দেখান। বলেন, অপরাধীদের ধরলে তারা ছাড়া পেয়ে যায়, তাই এমন অভিযান।’

তিনি বলেন, ‘তখন আমি তাদের বলি সরকার যেহেতু মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে, তাই তারা আলাদা করে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে মাদক ব্যবসায়ীদের সাজা দিতে পারে। কিন্তু এভাবে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কেন?’

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, ‘র‍্যাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমার কোনো আপত্তিকর কথোপকথন বা আলোচনা হয়নি। তারা আমার সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। আলোচনা শেষে তারা আমার বোন ও ভাইয়ের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেন। ভাইবোন র‌্যাব কার্যালয়ে এলে তাদের জিম্মায় রাতেই আমাকে ছেড়ে দেয়া হয়।’

‘তবে যে প্রক্রিয়ায় আমাকে তুলে নেয়া হয়েছে, সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। কেবল প্রতিবাদে নামায় একটি প্রতিবাদ সভা থেকে কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়া সিনেম্যাটিক স্টাইলে তুলে নেয়ার বিষয়টি প্রত্যাশিত নয়। এটি আইনের মধ্যেও পড়ে না।’

আটকের দিন র‌্যাব অভিযোগ করেছিল, শাহবাগে কর্মসূচি পালনের কোনো অনুমতি ছিল না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তবে ইমরান এই দাবিতে অসত্য দাবি করে বলেন, ‘শাহবাগ থানা এবং ঢাকা মহানগর পুলিশকে (ডিএমপি) লিখিতভাবে জানিয়েই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। তাই অনুমতি না নেয়ার দাবি সঠিক নয়।’

আর এই বিষয়টি নিয়ে র‌্যাব কেন কাথা ঘামাচ্ছে, সেটাও বুঝতে পারছেন না ইমরান। বলেন, ‘অনুমতি নেওয়া হয়েছে কি না, এটা দেখার দায়িত্ব র‌্যাবের না, এটা দেখবে পুলিশ।’

ইমরানের দাবি, ভীতি তৈরির জন্যই র‌্যাব তাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল।

‘বিশেষ করে ছাত্র ইউনয়নের ঢাকা মহানগর সভাপতি দীপক শীলকে যেভাবে পেটানো হল, তা খুবই ভয়ানক। এভাবে হামলা করে, তুলে নিয়ে গিয়ে যে প্যানিক সৃষ্টির চেষ্টা, তা গণতন্ত্রের জন্য খুবই ক্ষতিকর।’

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিলানী শুভ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এসময় বক্তব্য রাখেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, ছাত্র ফ্রন্টের সহ-সভাপতি আল কাদেরী জয়, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক এ এন রাশেদা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসুসহ গণজাগরণ মঞ্চের নেতাকর্মীরা।

বাংলাদেশ সময়: ৬:৫৬:০১   ৬৯৪ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #