মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮

তালুকদার খালেক খুলনার মেয়র

Home Page » জাতীয় » তালুকদার খালেক খুলনার মেয়র
মঙ্গলবার, ১৫ মে ২০১৮



ফাইলে ছবি

বঙ্গ-নিউজঃ খুলনা সিটি করপোরেশনের পঞ্চম নির্বাচনে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকের তালুকদার আবদুল খালেক। ২৮৯টির মধ্যে ২৮৬টি কেন্দ্রের ফল পাওয়া গেছে। এতে তালুকদার আবদুল খালেক পেয়েছেন এক লাখ ৭৬ হাজার ৯০২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ আট হাজার ৯৫৬ ভোট।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে তিনটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত রাখা হয়েছে। প্রচার পর্বে নানা শঙ্কার কথা উচ্চারিত হলেও শেষ পর্যন্ত বড় কোনো গোলযোগ ছাড়াই শেষ হয় খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন। ৬৭ হাজার ৯৪৬ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়ে তালুকদার খালেক দ্বিতীয়বারের মতো খুলনা সিটির মেয়র নির্বাচিত হলেন। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি এই পদে ছিলেন।

মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে টানা ভোট গ্রহণ। দুটি ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট নেওয়া হয়। এ দুই কেন্দ্রের বেসরকারি সামগ্রিক ফলে নৌকা এগিয়ে থাকে। এগুলোর মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (পিটিআই) জসিমউদ্‌দীন হোস্টেল কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে নৌকা প্রতীক। অন্যদিকে, সোনাপোতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে ধানের শীষ প্রতীক। নির্বাচনে ছোটখাটো বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও সার্বিকভাবে নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও ভালো হয়েছে বলে মনে করছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

কয়েকটি কেন্দ্রে অবশ্য অনিয়ম, অভিযোগ, ব্যালট পেপারে জোর করে সিল মারার ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে তিনটি ভোটকেন্দ্রের ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। কেন্দ্রগুলো হলো- ইকবালনগর সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র (পুরুষ), লবণচরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় কেন্দ্র।

তবে ঢাকায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন থেকে স্থগিত কেন্দ্রের তালিকায় ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের নাম নেই। এর পরিবর্তে তারা হাজি মালেক সালেহিয়া দারুছুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করেছেন। স্থগিত কেন্দ্রের নামের গরমিল সম্পর্কে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শামীম আহমেদ জানিয়েছেন, খুলনা থেকে যে তিনটি কেন্দ্রের নাম বলা হয়েছে, তাই ঠিক।

এ ছাড়া আরও অন্তত তিনটি কেন্দ্রে ভোট নেওয়া কিছু সময়ের জন্য বন্ধ রাখতে বাধ্য হন প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা। এ ছাড়া সাতটি কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে গোলযোগ, অনিয়ম, এজেন্টদের বাধা ও নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বিএনপি অভিযোগ করেছে, অর্ধেক ভোটকেন্দ্রেই নানা ধরনের অনিয়ম ঘটেছে। সরকারি দলের প্রার্থীর মার্কা নৌকায় সিল মেরে ব্যালট দিয়ে বাক্স ভরা হয়েছে, ধানের শীষের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে, সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি মারধরও করা হয়েছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ বলেছে, পরাজয় অবশ্যম্ভাবী জেনে ‘শান্তিপূর্ণ ও অবাধ’ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি মিথ্যা অভিযোগ করছে।

নির্বাচন কমিশনার শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী বিএনপির অভিযোগ সুস্পষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা ইউনুচ আলী বলেছেন, দু-একটি ঘটনা ছাড়া ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।

৪৫ দশমিক ৬৫ বর্গকিলোমিটারের খুলনা সিটিতে ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। ৩১টি ওয়ার্ডে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন পাঁচজন, কাউন্সিলর পদে লড়েছেন ১৩৯ জন। আর সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলরের ১০টি পদে লড়েন আরও ৩৯ জন।

কেসিসির সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৫ জুন।

মেয়র পদে যে পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তারা হলেন- আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক (নৌকা), বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টির এসএম শফিকুর রহমান (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক (হাত পাখা) এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবির মিজানুর রহমান বাবু (কাস্তে)।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:০৪:৩১   ৯৮২ বার পঠিত