সোমবার, ৯ এপ্রিল ২০১৮
বঙ্গ-নিউজ Live কবিতা পাঠ “শেষ সংলাপ - মুর্শিদা আক্তার রজনী”
Home Page » সাহিত্য » বঙ্গ-নিউজ Live কবিতা পাঠ “শেষ সংলাপ - মুর্শিদা আক্তার রজনী”
ছেলে:হ্যালো
মেয়ে:জ্বী বলুন
ছেলে:কেমন আছেন?
মেয়ে:হঠাৎ?
ছেলে:এটুকু অধিকারও কি দিবেন না?
মেয়ে:অধিকারের প্রশ্ন কেন আসছে?সেজন্য যোগ্যতা থাকতে হয়।
ছেলে:অধিকার না থাকলেও কবিতা শুনতে ইচ্ছা করছে।ফুলগুলো সব কেমন আছে?
না থাক।
মেয়ে:নাটকের কত নম্বর অঙ্কের সংলাপ এটি?
ছেলে:আপনার কাছে তাই মনে হল?
মেয়ে:আপনার মতন সুদক্ষ অভিনেতার কাছে এ ছাড়া কি-ই বা প্রত্যাশা করা যায়?
ছেলে: আমি অভিনেতা নই, সাংবাদিক।
মেয়ে: ছেড়ে দিন সাংবাদিকতা অভিনয়ে অনেক সুনাম কুড়োতে পারবেন।
ছেলে: এভাবে কোপান কেন?
মেয়ে: মানে?
ছেলে: আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে চাপাতি দিয়ে কেউ কোপাচ্ছে আমাকে।
মেয়ে: এসব পুরনো সংলাপ
ছেলে: আপনার মতন কথার জাদুকর নই আমি।
মেয়ে: তাই বুঝি!
ছেলে:আপনার মতন কবিতা লেখার শক্তি আর আবৃত্তির কণ্ঠ বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি আমার চোখে পড়ে না।
মেয়ে: সত্যি!
ছেলে: সাহিত্য বুঝি না তবে আপনার আবৃত্তির একজন মুগ্ধ শ্রোতা আমি।
মেয়ে: আরো আছে?
ছেলে: আপনার বৃক্ষপ্রেম আমাকে প্রথম মুগ্ধ করেছিল।
মেয়ে:জানি,এও জানি সেই মুগ্ধতা ছিল আপনার রচিত ও অভিনীত নাটকের প্রথম অঙ্কের প্রথম দৃশ্য।
ছেলে: আবারও?
মেয়ে: জ্বী।আর তারপর আমার প্রকৃতিপ্রেম, মায়ামমতা,সততা,নিষ্ঠা - সবমিলে আমার ব্যক্তিত্ব অতিমুগ্ধ করেছিল আপনাকে।আয়নার সামনে দাঁড়ালে পাশে আমার প্রতিবিম্ব কল্পনা করতেন আপনি।
নিজেকে ধিক্কার দিতে ইচ্ছা করে। এতো সাহিত্য পড়ে,বিশ্লেষণ করে পরীক্ষায় পাশ করে এমন কি সাহিত্য রচনা করেও আপনার মতো মানুষের সৃষ্ট নাটকের তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারিনি। জীবনের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা!
ছেলে: অভিশাপ দিচ্ছেন কেন?
মেয়ে: অভিশাপ কিসের? আমি কাউকে অভিশাপ দিইনা।
ছেলে:এভাবে বললে বিধাতা আমাকে ক্ষমা করবেন না
মেয়ে:সেটি আমার অভিশাপে নাকি আপনার কর্মফলে?
ছেলে: আমার বলার কিছু নেই।
মেয়ে: দুটি চরিত্র সম্বলিত নাটকে একটির মৃত্যু হলে আরেকটির সংলাপ শুনবে কে?
তবে নাট্যকার যে কমেডি রচনা করতে গিয়ে ট্রাজেডি গড়ে ফেলেছেন তাতে তাকে প্রশংসার দাবিদার করতেই হয়।
ছেলে: আমি নিরুপায় ছিলাম।
মেয়ে: উপায় সন্ধানের ইচ্ছা যার থাকেনা সে নিরুপায় থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক।
ছেলে: আপনার যা ইচ্ছা বলুন
মেয়ে: আমার আর কিছু বলার নেই। আপনি রাখতে পারেন।
ছেলে: এক বছর হলো। তাই না?
মেয়ে: হুম!
ছেলে: এতো অল্প সময় অথচ পরিচয় মিলন বিচ্ছেদ কত কী স্মৃতি।
মেয়ে: আমার জীবনের জন্য দারন এক অভিশাপ!
ছেলে: ভুলে গিয়ে সুখী হোন।
মেয়ে: এতো সহজ!
ছেলে: আমি প্রতারক, কাপুরুষ, মিথ্যাবাদী সর্বোপরি খারাপ মানুষ - এই ভেবে সহজ করে নিন।……… কিছু বলবেন না?
মেয়ে: যদি কখনো মনে পড়ে, হতে পারে হাজার লক্ষ কোটি বছর পরে খুঁজে দেখো মনের সেই নিভৃতি কোণে সেই আপন কোণে,যেখানে আর কাউকে রাখতে সাহসে কুলোয়নি তোমার।একান্ত করে পাবে তখনও। তবে দোহায় লাগে হৃদয়ের সেই কোণটিকে স্পর্শ কোরো না। সহ্য করা দায় হবে।
তব তপ্ত জ্যোতির চতুর্পার্শ্বে আমাকে আর গ্রহ বানিও না।প্রদক্ষিণ করে করে আমি ক্লান্ত!এখন আমি লুপ্ত সুপ্ত প্লুটোর ন্যায় হারিয়ে যাওয়া গ্রহ হতে চাই!
বাংলাদেশ সময়: ১:৫৮:৫৪ ১৭৯১ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #breaking news #World News #কবিতা