শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৩
ইমার সাতকাহন
Home Page » বিনোদন » ইমার সাতকাহনবঙ্গ- নিউজ ডটকমঃ পেশায় কখনো মডেল, কখনো বিনোদন পত্রিকার সম্পাদক, কখনো মেয়েদের মডেল বানানোর দালালি আবার কখনো অশ্লীল ভিডিও বাজারজাত করার কাজ করতেন প্রতারক রিজওয়ানা খালেদ ইমা।গ্রামের বাড়ি কখনও জামালপুর, আবার কখনও সিলেটে।
ঢাকায় বাসা কারও কাছে বনানী, পিংক সিটি, উত্তরা আবার কারও কাছে পুরোনো ডিওএইচএস বলে জানাতেন এই ইমা।
বিভিন্ন পরিচয়ে পরিচিত ছিলেন মডেল ইমা।তবে কয়েকদিন আগে এই মডেলের আরো কয়েকটি পরিচয় পাওয়া যায়। কখনো মন্ত্রী আবার কখনও ঊর্ধ্বতন পুলিশ র্কমর্কতার আত্মীয় সেজে প্রতারণা করতেন তিনি। আবার কখনও গাড়ি ভাড়া নিয়ে তা অন্যের কাছে বিক্রি করে দিতেন।
ইমার মত ‘বহুমাত্রিক’ প্রতারক খুঁজে পাওয়া মুশকিল বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা।
গত ৭ জুন রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে প্রতারক ইমাকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি (সহকারী উপ-কমিশনার) ছানোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, “প্রতারণার মাধ্যমে গাড়ির মালিক সেজে অন্যের গাড়ি বিক্রিসহ নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে ইমার বিরুদ্ধে।”
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস ভাড়া পরিশোধের পর মাসিক ৭৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেয়া একটি গাড়ি ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে এক নাট্য নির্মাতার কাছে বিক্রি করে দেন ইমা।
শুধু তাই নয়, রূপ-লাবণ্য আর যৌবনকে পুঁজি করে প্রতারণা আর জালিয়াতির অসংখ্য কাহিনীর জন্ম দিয়েছেন তিনি।
জানা গেছে, ধনী ছেলেদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে গ্যাংস্টার কায়দায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা চষে বেড়াতেন ইমা।
পাশাপাশি স্বামীকে ছেড়ে দিয়ে তার বন্ধুর সঙ্গেও লিভ টুগেদার করতেন তিনি।
জানা গেছে, বিয়ের পর থেকেই স্বামীর বন্ধু উত্তমের সঙ্গে পরকীয়া শুরু করেন ইমা। কয়েকদিনের মধ্যেই তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। পরে ইমার ফ্ল্যাটেই তারা একসঙ্গে থাকতে শুরু করেন।
জানা গেছে ইমার ভাইয়ের নাম তানভীর ও বাবা আলমগীর। তাদের কাউকে বিজনেস ম্যাগনেট, আবার কাউকে উঁচুমানের আমলা আবার কাউকে সমাজসেবী হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার সঙ্গে জড়িত ছিল পরিবারটি। এভাবে অন্তত ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা।
ডিবি’র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন জানান, এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুযায়ী ইমা প্রায় ৫০ জনের কাছ থেকে র্সবনিম্ন দুই লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৩৮ লাখ টাকা পর্যন্ত মোট ১০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ইমা।
রত্না (ছদ্মনাম) জানান, ইমা মডেল বানানোর কথা বলে বাসায় ডেকে নিয়ে তাকে ক্যামেরার সামনে বিবস্ত্র পোজ দিতে বাধ্য করেছেন। অনেক সময় কারো শয্যাসঙ্গীও হতে হয়েছে তাকে।
শুধু তাই নয়, শুটিংয়ের আগে স্ক্রিন টেস্টের কথা বলে গুলশান-১ এ অবস্থিত কথিত ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ম্যাভেনিক-এ ফটোসেশন করা হয়। কাপড় পরির্বতন কক্ষে রাখা গোপন ক্যামেরায় রেকর্ড করা হয় আপত্তিকর দৃশ্য। পরে ওই ভিডিও চিত্র প্রকাশের ভয় দেখিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেয়ের কাছ থেকে কয়েক দফায় ইমা সাড়ে নয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইমা নিজেকে গুলশান-১ এ `প্রধান স্পা ও বিউটি পারলারের স্বত্বাধিকার দাবি করেছিলেন। প্রতারণার শিকার অনেকের কাছে তিনি প্রতিষ্ঠানের মালিক বলে পরিচয় দেন। পরে তদন্তে দেখা গেছে, তিনি এর মালিক নন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৬:৩২ ৪১৪ বার পঠিত