শুক্রবার, ২৩ মার্চ ২০১৮

স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ সাফল্য ও গর্বের বিষয়-ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার

Home Page » এক্সক্লুসিভ » স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ সাফল্য ও গর্বের বিষয়-ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার
শুক্রবার, ২৩ মার্চ ২০১৮



বঙ্গ-নিউজ

আল-আমিন আহমেদ,বঙ্গ-নিউজ:-এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের যোগ্যতা অর্জনের প্রেক্ষিতে গতকাল ২২ মার্চ ২০১৮ আন্তর্জাতিক পরিসরে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সুনামগঞ্জ-১ আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী, জেলা বঙ্গবন্ধু পরিষদের আহবায়ক ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদারের ইংরেজি বক্তব্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন রচিত।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং রাজনৈতিক ও উন্নয়ন অর্থনীতি বিষয়ক গবেষক ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার তার বক্তব্যে বলেন বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল  দেশে উত্তরণ অত্যন্ত সাফল্য ও গর্বের বিষয়। এ সাফল্য গোটা জাতির, বাংলাদেশের সকল জনগণের। কিন্তু তা অর্জন সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার  অত্যন্ত দূরদর্শী, প্রতিভাময়ী ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে। তাঁর সাহসী, আদর্শিক এবং প্রগতিশীল উন্নয়ন কৌশল ও নীতি গ্রহণের ফলে।

বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও বিশ্বমানবতার প্রতীক জননেত্রীর নীতি “কেউ পেছনে পড়ে থাকবে না” এর উপর ভিত্তি করে  - তাঁর নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে আমরা শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছি। একটি ডিজিটাল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা ট্রান্সফরমিং ও ব্রিজিং লিডারশীপের আওতায় তরুণ ও প্রতিশ্রুতিশীল মেধাবী নেতৃত্ব বিকাশের যে উদ্যোগ নিয়েছেন  তাতে করে ২০৪১ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে উঠতে পারবে বলে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশা করি।

এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণ কোন প্রতীকী সাফল্য নয়। এটি একটি বাস্তবতা। এর সাথে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন জড়িত, ১৬-কোটি মানুষের  জীবন মানের প্রশ্ন জড়িত, কর্মের সুযোগের  প্রশ্ন জড়িত এবং বিশ্বে মর্যাদা ও অধিকারের  প্রশ্ন জড়িত। সারা দেশের মানুষ আজ আনন্দিত। আমরা এমন একসময় এই সাফল্য অর্জনের বার্তা পেলাম যখন আমরা স্বাধীনতার মাসের উৎসবে ও আনন্দে আছি। সেজন্য জাতিসংঘকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই।

তার এবক্তব্যের সময় উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ স্কট স্ট্যান্ডলে এবং এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের স্পেশাল নিড সেকশন চীফ ওলিভার প্যাডিসন। সন্মানিত রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিমের সভাপতিত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ব্যাংককস্ত দুতাবাসে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার উপর একটি ভিডিওচিত্র দেখানো হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন থেকে শুরু করে অর্থনীতির অগ্রযাত্রা দেখানো হয় এতে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ জনবান্ধব ও ফলপ্রসু নেতৃত্বে কিভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তাও দেখানো হয় ভিডিওচিত্রে।

বিশেষ প্রতিনিধির সাথে ড. রফিকুল ইসলাম তালুকদার আরও বলেন উন্নয়নশীল থেকে উন্নত বাংলাদেশে পৌঁছতে আমাদের কয়েকটি চ্যালেঞ্জকে দৃঢ়ভাবে মোকাবেলা করতে হবে – কমন রিসোর্সপুলে ও উন্নয়নে নিম্নআয়ের জনগোষ্ঠীর অধিকতর অধিকার ক্রমাগত সচ্ছতার সাথে নিশ্চিতকরণ, মিসিং মিডলকে কৌশলগত সহায়তা প্রধান এবং  রাজনীতি, সরকার ও বিচার বিভাগের সততা  ও দক্ষতা  উচ্চমাত্রায় শক্তিশালীকরণ এবং অধিকতরও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ। অধিকন্ত, একটি দ্রুত বর্ধনশীল তরুণ সমাজের  কর্মমুখী দক্ষতার বিকাশ ও উদ্যোগতার মনোভাব গড়ে তোলা এবং তাদের জন্য ভাল বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা, বৃহত্তর দেশী-বিদেশী বেসরকারি বিনিয়োগের জন্যও একটি সক্রিয় ও ক্রমাগত স্থিতিশীল পরিবেশের বিকাশ করা, ক্রমবর্ধমান শহুরে শ্রমশক্তির  কৌশলগত, রুপান্তরমূলক ও কার্যকরী ব্যবহার নিশ্চিত করা, এবং  জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ও দুর্যোগপ্রবণ দেশ হিসেবে ঝুঁকি মোকাবিলায় আরও কার্যকরী ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা পলিসি সংস্কার ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার বিবেচনার দাবী রাখে। বঙ্গ-নিউজ

উল্লেখ্য,  গত শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে (ঢাকার সময় ১৭ মার্চ ২০১৮ শনিবার)  জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) সেক্রেটারিয়েট প্রধান রোলান্ড মোলেরাস জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেনের কাছে এই ঘোষণা সংক্রান্ত চিঠি হস্তান্তর করেন।  ইতঃপূর্বে বিশ্ব ব্যাংকের বিবেচনায় বাংলাদেশ ২০১৫ সালের জুলাই মাসে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। এখন জাতিসংঘের মাপকাঠিতেও বাংলাদেশের উত্তরণ সত্যি অনেক গর্বের ও আনন্দের বিষয়।

জাতিসংঘ তার সদস্য দেশগুলোকে স্বল্পোন্নত (এলডিসি), উন্নয়নশীল ও উন্নত এতিন পর্যায়ে বিবেচনা করে। অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে কতটা অগ্রগতি করেছে সেটি মূল্যায়ন করে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিষদের উন্নয়ন নীতিবিষয়ক কমিটি ঘোষণা দিয়েছে যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ।  এলডিসি থেকে উত্তরণের জন্য মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ সূচক ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচক - এই তিন শর্ত পূরণ করতে হয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেই প্রথম তিনটি শর্ত যথাযথভাবে পূরণ হয়েছে। তবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক উত্তরণ ঘটবে ২০২৪ সালে, অর্থাৎ ২০২৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব করা হবে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্থায়ী স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:০৮:৩৯   ৭৪৯ বার পঠিত