বুধবার, ১৪ মার্চ ২০১৮

গাজীপুরে হেযবুত তওহীদের সাংবাদিক সম্মেলন

Home Page » প্রথমপাতা » গাজীপুরে হেযবুত তওহীদের সাংবাদিক সম্মেলন
বুধবার, ১৪ মার্চ ২০১৮



---

বঙ্গ নিউজ: নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে ধর্মব্যবসায়ীদের উস্কানীতে সংঘটিত হত্যাকান্ড,অগ্নি সংযোগ ও লুটপাট মামলার আসামিদের বিচারের দাবিতে আজ ১৪-০৩-২০১৮ইং গাজীপুর জেলা রিপুটার্স ক্লাবের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
২০১৬ সনের ১৪ মার্চ নোয়াখালীর সোনাইমুড়িতে হেযবুত তওহীদের দুই সদস্যকে নৃশংসভাবে হত্যা,বাড়ি ঘর লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞের সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ গাজীপুর জেলা রিপুটার্স ক্লাবে সকাল ১১ ঘটিকাতে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে মূল বক্তব্য পাঠ ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন গাজীপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক মো:শহিদুল ইসলাম শহীদ।
মূল বক্তব্যে উপস্থাপিত হয়, হেযবুত তওহীদ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠালগ্ন অর্থাৎ ১৯৯৫ থেকেই আমাদের বিরোধিতায় অবতীর্ণ হয়েছে এক শ্রেনীর ধর্মব্যবসায়ী । তারা ওয়াজে, খোতবায়, হাটে বাজারে সর্বত্র অপপ্রচার চালিয়ে মানুষকে আমাদের উপর হামলা করতে উস্কানি দিয়ে যাচ্ছে । এর ফলে আমরা বহু জায়গায় বহু বার আক্রান্ত হয়েছি। আমাদের বাড়ি ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আমাদেরকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর কারণ, একমাত্র আমরাই এদেশের ধর্মের দোহাই দিয়ে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদসহ ধর্মের নামে প্রচলিত প্রতিটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে নিজেদের জীবন-সম্পদ উৎসর্গ করে আদর্শিক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা এই সত্য মানুষের সামনে তুলে ধরাই যারা ধর্মকে তাদের রুটিরুজি ও কায়েমী স্বার্থের হাতিয়ার বানিয়ে নিয়েছে তাদের মুখোশ জনসম্মুখে খুলে যাচ্ছে, জনসাধারণের উপর থেকে তাদের প্রভাব হারিয়ে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে জেলা হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পদক জনাব শহিদুল ইসলাম শহীদ জানান,দুই বছর আগে সোনাইমুড়িতে স্থানীয় দাঙ্গা সৃষ্টিকারী আলেমরা নিকটবর্তী এলাকার বিভিন্ন মাদ্রাসা থেকে তাদের ছাত্রদেরকে নিয়ে হেযবুত তওহীদের মাননীয় এমামের বাড়ীতে আক্রমণ করে। সেখানে ১৫ বছর থেকে অপপ্রচার চালানো হয়েছে যে হেযবুত তওহীদের সদস্যরা নাকি নামাজ পড়ে না।তাদের এই কথাটি সর্বত্র মিথ্যা, কারণ আমরা যথাযথ ভাবেই নামাজ পড়ি,কেবল যে ইমামগণ নামাজ পড়ানোর বিনিময়ে অর্থ গ্রহন করেন তাদের পিছনে পড়ি না। এর কারণ আল্লাহ ধর্মীয় কাজের বিনিময়ে অর্থ গ্রহণকে হারাম করেছেন।
ধর্মব্যবসায়ীদের এই রটনা যে ভুল তা মানুষের সামনে সুস্পষ্ট করার জন্য আমরা একটি মস্জিদ নিমার্ণের উদ্যোগ নেই তখন ধর্ম ব্যবসায়ীরা নতুন করে প্রচারে নামে যে ‘হেযবুত তওহীদ খ্রিষ্টান, তারা গির্জা নির্মাণ করছে। তারা সকাল থেকে স্থানীয় কয়েকটি মস্জিদের মাইকে বলতে শুরু করল যে, গির্জা ভাঙ্গো খ্রিষ্টান মারো। তাদের উস্কানিতে স্থানীয় জামায়াত , শিবির, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, হেফাজতের ইসলামীরা সন্ত্রাসীরাসহ মাদ্রাসার উন্মোক্ত ছাত্র-শিক্ষকগণ নির্মানাধীন মস্জিদটিকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিল । চার পাঁচ ঘন্টা ধরে চলল আক্রমণ। আমাদের প্রত্যেকে মারাত্নক ভাবে আহত হলেন।অবশেষে যখন থানা পুলিশ এলো তখন সন্ত্রাসীরা তাদের সামনেই মো.সোলাইমান খোকন ও ইব্রাহীম রুবেল নামে আমাদের দুজন সদস্যকে নির্মমভাবে মেরে মাটিতে ফেলে দিল ।
তারপর তাদের বুকের উপর চেপে বসে কয়েকজন তাদের হাতে পায়ের রগ কেটে দিল , গরু জবাই করার লম্বা ছৃুড়ি দিয়ে জবাই করে ফেলল , তাদের চোখ উপরে নিল। একপর্যায়ে পেট্রল ঢেলে তাদের শরীরে আগুন জ্বালিয়ে দিল । যখন পুলিশ আমাদের আহত অবরুদ্ধ মরণাপন্ন সদস্যদেরকে করে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়িতে তুলল তখন তাদেরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে হত্যা করার জন্য গভীর রাত পর্যন্ত পুলিশ ও বিডিয়ার বাহীনির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে গেল।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে আমাদের দায়েরকৃত মামলার অধিকাংশ আসামীকে আজ পর্যন্ত আইনের আওতায় আনা হয় নি । যাদের আওতায় আনা হয়েছে তারাও খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে জামিনে বেড়িয়ে এসেছে এবং সকল আসামি এলাকায় দাপটের সাথে ঘুরে বেরাচ্ছে এবং আবারো অনুরুপ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর হুমকি দুমকি দিয়ে যাচ্ছে।তারা সকল আসামিদের এবং যারা ঘটানোর পূর্বে নাম ঠিকানা বিহীন উস্কানি মূলক হ্যান্ডবিল বিতরণ করেছিল সেই নেপথ্য নায়কদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। পাশাপাশি উক্ত ঘটানায় ভষ্মীভূত ঘরসমূহ পুন:নির্মাণ ও ক্ষতিগ্রস্ত হেযবুত তওহীদের সদস্যদের ক্ষতি পূরণ প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহন করাও দাবি জানান এবং এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্থক্ষেপ কামনা করেন। অনষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন গাজীপুর জেলা হেযবুত তওহীদের সদস্য মো. মোস্তাকিম খান। এসময় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদ কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫০:৩৩   ৫২৯ বার পঠিত