শুক্রবার, ১৪ জুন ২০১৩
আসলে তো কোয়ার্টার ফাইনাল!
Home Page » খেলা » আসলে তো কোয়ার্টার ফাইনাল!বঙ্গ- নিউজ ডটকমঃ রাসেল ডোমিঙ্গো জানেন, কিন্তু মানতে চাইছেন না। মানলেই যে বিপদ! আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার সহকারী কোচ বলছেন, ‘এটি নকআউট ম্যাচ, আবার নকআউট ম্যাচ নয়! বুঝতেই পারছেন আমি কী বোঝাতে চাইছি, এটি তো আর সেমিফাইনাল-ফাইনাল নয়।’
সেমিফাইনাল-ফাইনাল নয়, কিন্তু সেখানে যাওয়ার সিঁড়ি। গ্রুপ ম্যাচ, তবে বলতে পারেন ‘কোয়ার্টার ফাইনাল’। জিতলে সেমিফাইনালে, হারলে দেশে ফেরত। ম্যাচ তাই অবশ্যই নকআউট। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সেটি মাথায় ঢোকাতে চাইছে না। ‘নকআউট’ ম্যাচ হলেই যে তাদের ‘চোকার’ সত্তা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে!
অথচ দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র বৈশ্বিক শিরোপা এসেছিল কিন্তু টানা তিনটি নকআউট ম্যাচ জিতেই! এই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিরই প্রথম আসর, যখন এটির নাম ছিল আইসিসি নকআউট বিশ্বকাপ। গৌরবের ওই কীর্তিটা এখন ব্যতিক্রমের উদাহরণ। কারণ ঢাকার ওই টুর্নামেন্ট ছাড়া আইসিসির ওয়ানডে টুর্নামেন্টগুলোর বাকি ৯টি নকআউট ম্যাচের সাতটিতেই হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। একটি ছিল ‘টাই’, যেটি টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজয়ের অনুভূতিই দিয়েছিল (অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৯৯৯ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল)। একমাত্র জয়টি ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ‘চোকার’ সত্তা প্রমাণ করতে পারে আরেকটি তথ্য। আজকের প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে তারা অনেক এগিয়ে। সর্বশেষ ২০ ম্যাচের ১৮টিতেই জয়। কিন্তু পরাজয় দুটি এসেছে ২০০৪ ও ২০০৬ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। দুবারই হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আরেকটি ব্যাপারও তা বুঝিয়ে দেয়, বড় উপলক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রায়ই জ্বলে ওঠে। আর দারুণ ধারাবাহিক হলেও চাপে ভেঙে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। নিজেদেরই জন্ম দেওয়া এই সত্যকে মিথ্যা প্রমাণের আরেকটি লড়াই আজ।
এমন ম্যাচে মাঠে নামার আগে অবশ্য বড় একটা টনিক পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফিরে পাচ্ছে তারা নিজেদের সবচেয়ে ভয়ংকর মারণাস্ত্র, ডেল স্টেইনকে। চোটের কারণে আগের দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি স্টেইন, তবে গত দুই দিনই নেটে বোলিং করেছেন পূর্ণ গতিতে। তেতে থাকা ‘স্টেইন-গান’ আজ ঝাঁপিয়ে পড়বে সঠিক নিশানায় গোলা ছুড়তে। স্টেইন ফেরায় আজ সম্ভবত আজ চার পেসার নিয়ে নামবে দক্ষিণ আফ্রিকা, স্টেইন-সতসোবে-মরিস-ম্যাকলরেন। একাদশের বাইরে যাবেন বাঁহাতি স্পিনার অ্যারন ফাঙ্গিসো।
সম্ভাব্য পেস চতুষ্টয়কে যাদের সামলাতে হবে, সেই ব্যাটসম্যানদের নিয়েই দুশ্চিন্তা ওয়েস্ট ইন্ডিজের। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের ১৭০ তাড়া করতেই হিমশিম খেতে হয়েছে। পরের ম্যাচে দুই শ ছাড়াতে পেরেছে আটে নামা ড্যারেন স্যামির ঝড়ে। আজ তাই ব্যাটিং-অর্ডারের বড় বড় নামগুলোর দিকে তাকিয়ে থাকবেন অধিনায়ক ডোয়াইন ব্রাভো। ২০০৬ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনালে ১৩৩ রানের এক অপরাজিত ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বলতে গেলে একাই হারিয়ে দিয়েছিলেন ক্রিস গেইল। এই টুর্নামেন্টে এখনো ঝড় তুলতে পারেননি, আজই কি তবে সেই দিন?
গেইল-পোলার্ড-ব্রাভোরা জ্বলে উঠতে পারেন যেকোনো সময়। তবে এঁদের কেউ বোধ হয় নন, কার্ডিফে আজ ডি ভিলিয়ার্সদের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ ওই ‘চোকার্স’ তকমাটাই!
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৯:১১ ৩৮০ বার পঠিত