মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

’আমার একটা বই কেননা বাবা’

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » ’আমার একটা বই কেননা বাবা’
মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০১৮



ছবি সংগৃহীতবঙ্গ-নিউজঃ স্টলের সামনে ঘোরাফেরা করছি। পেছন থেকে একজন আন্টি ডাক দিয়ে বললেন, তুমি তো অনেক বই কেন? আমি একটা বই বের করেছি, কেননা বাবা? বললাম, বইটা দেখি দেন। পরে দেখি উনি সাতটার মত বই লিখেছেন। কয়েকটা বই নাড়াচারা করার পর উনার লেখক পরিচিতিতে দেখি উনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় মাস্টার্স করার পর আবার রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপনার উপরও এমএ (মাস্টার্স) করেছেন। পরে ভারতের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন। উনার নাম ড. আকন্দ সামসুন নাহার।’ (বানান পরিমার্জিত)

এটা একটা ফেসবুক স্ট্যাটাস। ড. আকন্দ সামসুন নাহার এভাবেই মেলায় বই বিক্রী করেন। সোমবার অমর একুশে গ্রন্থমেলায় তার ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন সাজেদুর রহমান সুমন নামে এক যুবক। তিনি লিখেছেন, ‘একজন ডক্টরেট করা লেখক পাঠকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। এই দৃশ্যটা দেখার চেয়ে আমার মরে যাওয়া অনেক ভাল ছিল।’

সুমনের ওই স্ট্যাটাসে অনেকেই অনেক মন্তব্য করেছেন। ইতোমধ্যে তার ওই স্ট্যাটাস দেড়শতাধিক বার শেয়ারও হয়েছে। মন্তব্যের ঘরে ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী নামে একজন দুবছর আগের একটি স্ট্যাটাস শেয়ার করেছেন। সেই স্ট্যাটাসটিতে তিনি লিখেছেন, ‘আমার বই পড়তে ভালো লাগে। সে যেই বই হোক। তবে এটা স্বীকার করি, সব বই মন্ত্রমুগ্ধ করে না। অনেকদিন পর একটা বই পড়তে শুরু করলাম যেটা আমাকে আটকে ফেলেছে। মন্ত্রমুগ্ধ করেছে। অসাধারণ বইটার নাম ‘নিঝুম দ্বীপের মহাকাব্য’, লেখিকার নাম ড. আকন্দ সামসুন নাহার।’

নিঝুম দ্বীপের কাব্য, সোহরাব রুস্তম, যখন বৃষ্টি নামল না, যূথবদ্ধ, গল্প লোকের বাড়ি, বাতিঘর প্রভৃতি তার লেখা গ্রন্থ। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শিরোনামহীন ব্যান্ডের সাবেক জনপ্রিয় ভোকাল তানযির তুহিনের মা ড. আকন্দ সামসুন নাহার (তানযির তুহিন এখন আভাস নামে একটি নতুন ব্যান্ড দল গঠন করেছেন)। মাসুম আহমেদ আদি নামে এক পাঠক ‘বইপোকাদের আড্ডাখানা’ নামে এক গ্রুপে লিখেছেন, ‘বইমেলায় প্রতিবছর তিনি নিজের বই ফেরি করে বিক্রি করেন। টাকা কামানো উনার উদ্দেশ্য না। উনি শুধু চান নতুন প্রজন্ম উনার বইগুলো পড়ুক।’

ড. আকন্দ সামসুন নাহার ১৯৪৩ সালে ভোলার তজমুদ্দীন থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইডেন কলেজ থেকে বাংলায় অনার্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। পরে আবার রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং শিক্ষা ব্যবস্থাপনার উপরও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। ভারতের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন।

কর্মজীবনে তিনি দীর্ঘ সময় সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন ন্যাশনাল কারিকুলাম অ্যান্ড টেক্সটবুক বোর্ড -এ। ২০০১ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যান। এরপর তিনি এশিয়া ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের শিক্ষা ও ট্রেনিং বিভাগের প্রধান ও ডিনেরও দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮:৪৩:০৫   ৮৬২ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #