বুধবার, ১৩ মার্চ ২০১৩
চীনা দার্শনিক গল্প: “অন্যকে সাহায্য করা মানে নিজেকে সাহায্য করা”
Home Page » সাহিত্য » চীনা দার্শনিক গল্প: “অন্যকে সাহায্য করা মানে নিজেকে সাহায্য করা”একদিন জনৈক গুরু তার শিষ্যকে নিয়ে রাস্তায় বের হলেন। তারা যখন একটি ব্যস্ত রাস্তা পার হচ্ছিলেন, ঠিক তখন একটি দোকান থেকে একটি কাচের বোতল উড়ে এসে ঠিক তাদের দু’জনের সামনে পড়ে ভেঙ্গে গেল। গুরু তাড়াহুড়া করে মাটিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা টুকরো কাচগুলো তুলে নিলেন। এ-দৃশ্য দেখে শিষ্য গুরুকে জিজ্ঞেস করল: ‘গুরু, আপনি কেন কাচের টুকরোগুলো রাস্তা থেকে তুলে নিলেন। আমরা তো সবসময় এদিকটায় আসি না।’ শিষ্যের কথা শুনে গুরু বললেন: ‘ভালো করে ওদিকটায় তাকিয়ে দেখ; একজন বৃদ্ধ লাঠি-হাতে হেটে হেটে এদিকে আসছেন। আমার মনে হয় উনি অন্ধ। কাচের টুকরো পরিষ্কার না-করলে, তার কষ্ট হবে ভেবেই আমি টুকরোগুলো তুলে নিলাম।’ গুরুর কথা শুনে শিষ্য মুগ্ধ হল। সে তখন নিজেও হাত লাগালো এবং কাচের টুকরোগুলো পাশের একটি আবর্জনা রাখার বাক্সে ফেলে দিল। ঠিক সে-সময় দোকানের মালিক ভেতর থেকে বের হলেন। তাদের দু’জনকে দেখে দোকানের মালিক চিত্কার করে বললেন: ‘তোমরা কি আমার দোকানে চুরি করতে এসেছ? মনে হচ্ছে, তোমরা ভাল মানুষ নও। তাড়াতাড়ি এখান থেকে সরে পড়। তোমাদের উপস্থিতি আমার ব্যবসার ক্ষতি করছে।’ মালিকের এহেন আচরণে শিষ্য ক্ষুব্ধ হল এবং তার সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হতে চাইল। কিন্তু গুরু তাকে বাধা দিলেন। ঠিক সে-সময় পাশের দোকানের একজন দোকানি এসে বললেন: ‘তোমরা দু’জন ভালো মানুষ। একটু আগে একজন অন্ধকে তোমরা সাহায্য করেছো। ওই দোকানের মালিক তোমাদের ওপর মিথ্যা দোষারোপ করেছে।’তখন শিষ্য বলল: ‘দেখলেন গুরু, দুনিয়াতে আমাদেরকে বিশ্বাস করার লোকও আছে।’ গুরু বললেন: ‘সবসময় মনে রাখতে হবে যে, অন্যকে সাহায্য করা মানে নিজেকে সাহায্য করা। আমাদের প্রতিটি কথা বা আচরণ আমাদেরই ভবিষ্যতের রাস্তা তৈরী করে।’
(চিয়াং/আলিম)
বাংলাদেশ সময়: ৯:৪৭:৫১ ৯৮৩ বার পঠিত