রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

শামসুন্নাহারের একমাত্র গোলে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » শামসুন্নাহারের একমাত্র গোলে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭




বঙ্গ-নিউজঃ শামসুন্নাহার মূলত লেফটব্যাক। কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগে মেয়েটিকে বলা হলো, তাকে উইঙ্গার হিসেবে খেলতে হবে। শুধু ঘাড় নেড়ে জবাব দিয়েছিলেন ‘হ্যাঁ’। ব্যাস, মেয়েটি হয়ে গেল লেফট উইঙ্গার। আজ তার একমাত্র গোলেই ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।

বল নিয়ে ছুটছেন ফাইনালের একমাত্র গোলদাতা শামসুন্নাহার

বল নিয়ে ছুটছেন ফাইনালের একমাত্র গোলদাতা শামসুন্নাহার।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৫ দলে লেফটব্যাক দুজন—শামসুন্নাহার ও নিলুফা ইয়াসমিন। দুজনই প্রকৃতিগতভাবে বাঁ পায়ের। দুজনেই আবার কেউ কারও চেয়ে কম কার্যকর নয়। কোচ পড়ে গেলেন মধুর সমস্যায়। তাই স্কিল ও আক্রমণাত্মক বৈশিষ্ট্যে শামসুন্নাহার একটু এগিয়ে থাকায় তাকেই খেলতে বলা হলো উইং পজিশনে। টুর্নামেন্টে কেমন খেলল শামসুন্নাহার?
আজকের আগেও একটি গোল করেছে ময়মনসিংহ জেলার কলসিন্দুরের এই মেয়ে। তবে দুই গোল দিয়ে এই মেয়ের পারফরম্যান্স বোঝানো যাবে না। বাঁ প্রান্তে শামসুন্নাহারকে ঠেকাতে পারেনি বলেই নিয়মিত রাইটব্যাক প্রাতিকশা লারকাকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন ভারতীয় কোচ। ‘ফ্রেশ লেগ’ নামিয়েও বাংলাদেশের এই লেফট উইঙ্গারকে থামানো যায়নি।
প্রকৃতিগত মেধা যাকে বলে, তা-ই হলো শামসুন্নাহার। কী তার বাঁ পায়ের কাজ! সবচেয়ে ভালো করে জায়গার ওপর হঠাৎ করে ‘ক্রুইফ টার্ন’। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ডান প্রান্তে তার এমন এক টার্নিংয়েই ভারতীয় এক ডিফেন্ডার মাটিতে হামাগুড়ি দিয়েছে। শুধু আক্রমণেই নিজেকে উজাড় করে দেয় না, সময়মতো রক্ষণও সামলায়।
শিষ্যকে ন্যাচারাল ট্যালেন্ট বলে আখ্যায়িত করলেন কোচ গোলাম রব্বানি, ‘শামসুন্নাহার ন্যাচারাল গড গিফটেড। ও লেফট উইং থেকে ওপরে নিচে নেমে ওঠে খেলতে পারে।’ কোচই নাকি টুর্নামেন্টের আগে বলেছিলেন, ‘নতুন পজিশনে শামসুন্নাহার দেখিয়ে দেবে।’

দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড়ের মতোই বঙ্গমাতা টুর্নামেন্ট দিয়ে ২০১২ সালে ফুটবলে হাতে খড়ি। ২০১৩ সালে ধোবাউড়ার বিখ্যাত কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের সদস্য। এর পরে তাজিকিস্তানে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের সদস্যও ছিল শামসুন্নাহার। এরপর থেকেই জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলের নিয়মিত মুখ।
ডিফেন্ডার হলেও গোল করাটা সহজাত গুণ। এর আগে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ বাছাইপর্বে লেফটব্যাক পজিশনে খেলেই করেছিল চার গোল। এর মধ্যে চায়নিজ তাইপের বিপক্ষে ছিল জোড়া গোল। থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব ১৬ চ্যাম্পিয়নশিপেও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে করেছিল এক গোল। সাত গোলের মধ্যে আজকের গোলটিকেই এগিয়ে রাখছে শামসুন্নাহার, ‘আজকের গোলটি আমার কাছে বিশেষ কিছুই। যেহেতু এই গোলেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।’

শুধু ফরোয়ার্ডরাই দল জেতান না, ডিফেন্ডার হয়েও গোল করে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৬:০৯   ৬১০ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #