মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের কারণে গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত হতে পারেন সু চি

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের কারণে গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত হতে পারেন সু চি
মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭



ফাইল ছবি

বঙ্গ-নিউজঃ রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের কারণে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে গণহত্যার অভিযোগ আনা হতে পারে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান জেইদ রাদ আল-হুসাইন। তাঁর মতে, সংস্থাটির অবস্থান স্পষ্ট, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্মম নিপীড়ন চালানো ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের কার্যালয়ে জেইদ রাদ আল-হুসাইনের মুখোমুখি হয় বিবিসি প্যানোরোমা। গতকাল সোমবার তাঁর সাক্ষাৎকার সম্প্রচার হওয়ার কথা ছিল। এতে তিনি বলেন, সেখানে (মিয়ানমারে) যে ধরনের সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে তাতে স্পষ্ট যে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ফলে ভবিষ্যতে কোনো আদালত যদি রুল দেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল, তাহলে অবাক হবেন না জেইদ।

এর আগে চলতি মাসের শুরুতে মানবাধিকার কাউন্সিলের বৈঠকে জেইদ বলেছিলেন, মানবাধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের খবরগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে গণহত্যার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কেননা, সেখানে পদ্ধতিগতভাবে নির্যাতন চালানো হয়েছে। গণহত্যা হয়েছে, এমনটা প্রমাণ করা মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধানের দায়িত্ব নয়। আদালতই তা করতে পারেন। তবে তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনার আন্তর্জাতিক তদন্ত দাবি করছেন। জেইদ বিবিসি প্যানোরোমাকে বলেন, গণহত্যা প্রমাণ করাটা কঠিন হবে। কেননা, কেউ যদি গণহত্যার পরিকল্পনা করে তবে তা তো আর কাগজে করে না। নথিতে সেই নির্দেশনাও জারি করা হয় না।

মানবাধিকার কাউন্সিলের প্রধান বলেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ওপর সু চির ক্ষমতা সীমিত। কিন্তু তিনি সেনা নির্যাতন বন্ধে কমপক্ষে চেষ্টা করতে পারতেন। এমনকি সু চি রোহিঙ্গা শব্দটিও ব্যবহার করেননি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগের প্রতি মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়া তাঁর মাঝে আশঙ্কা জাগাচ্ছে, বর্তমান সংকট হয়তো আরও খারাপ কিছুর সূচনা।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর ২৫ আগস্ট হামলার পর তারা অভিযান শুরু করে। কিন্তু বিবিসি প্যানোরোমা জানায়, তারা প্রমাণ সংগ্রহ করেছে, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের প্রস্তুতি বেশ আগে থেকেই নেওয়া হচ্ছিল। স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র দেওয়া হচ্ছিল। হামলার দুই সপ্তাহ আগে ১০ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে সেনা মোতায়েন বাড়ানো হয়েছিল।

নতুন করে ঘরবাড়ি জ্বালানো হয়েছে

গত ২৫ আগস্টের পরবর্তী সহিংসতার জেরে রাখাইন রাজ্যের ৩৫৪টি রোহিঙ্গা গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণের পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এই তথ্য জানিয়ে বলেছে, এর মধ্যে গত অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ধ্বংস করা হয়েছে ৪০টি গ্রাম।

এইচআরডব্লিউ বলছে, কৃত্রিম উপগ্রহ প্রমাণ করছে, নভেম্বরের ২৩ তারিখ যখন রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়া নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে তখন বিভিন্ন গ্রামে ভবনগুলোতে আগুন জ্বলছিল। ২৫ নভেম্বর রাখাইনের মংডুর কাছে মিও মি চ্যাং গ্রামে আগুন আর ঘরবাড়ি ধ্বংসের ছবি দেখা যায়। পরের এক সপ্তাহের মধ্যে চারটি গ্রামে ভবনে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১০:৪৭:২৮   ৪৮৬ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #